জিয়াউল গনি সেলিম :
কথা ছিল, চলতি বছরের মধ্যেই শেষ হবে রাজশাহী নগরীর আলুপট্টি হতে তালাইমারি সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ। এরইমধ্যে প্রকল্পের মেয়াদও শেষ হতে যাচ্ছে। কিন্তু এখনো কাজই শুরু করতে পারে নি প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা সিটি কর্পোরেশন। এনিয়ে চটেছেন খোদ মেয়রও। মে মাসের মধ্যেই ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
রাজশাহী নগরীর লাইফ লাইন হিসেবে পরিচিত তালাইমারী-আলুপট্টি সড়ক। মূল শহরে চলাচলের এটিই প্রধান পথ। দেড় লেনের এই সড়কটি চার লেনে উন্নীত করতে ২০১২ সালে একটি প্রকল্পের প্রস্তাব পাঠায় সিটি কর্পোরেশন। তবে ১২৭ কোটি ৪৯লাখ টাকার এই প্রকল্পটি একনেক সভায় ছাড় পায় ২০১৫ সালের মে মাসে।
আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কে থাকার কথা প্রশ্বস্ত ফুটপাত, দু’পাশে ড্রেন, আইল্যান্ড ও সুদৃশ্য আলোকায়ন। কিন্তু থমকে আছে এসব কাজ।ফলে গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে এক রকম ঠাসাঠাসি করে চলছে যানবাহন। এতে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। দুর্ভোগ পিছু ছাড়ছে না চলাচলকারীদের।
এবিষয়ে রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, নগরীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এটি। নির্মাণকাজ শেষ হলে নগরীর দৃশ্যই পাল্টে যেতো । দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতো মানুষ। সরকারের এই মেগা প্রকল্পটি দৃশ্যমান হলে মেয়রের প্রতিশ্রুতিও পূরণ হতো। অথচ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের উদাসীনতা কেন তা জানতে চান নগরবাসী।
বেসরকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘সুশাসনের জন্য নাগরিক’-সুজন এর রাজশাহী আঞ্চলিক সমন্বয়ক সুব্রত কুমার পাল ইউনিভার্সাল২৪নিউজকে বলেন, প্রকল্প এভাবে আটকে থাকায় সরকারী টাকা অপচয়ের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। কারণ বছর গড়ালেই প্রকল্পব্যয় কয়েকগুণ হয়ে যায়। পাশাপশি সরকারের উন্নয়নের সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
এদিকে, প্রকল্পে এমন দশায় ক্ষুব্ধ খোদ সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনও। প্রকল্প সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের গত ৭এপ্রিল জরুরি চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয়া হয়েছে মেয়রের এই অসন্তোষের কথা।
এতে বলা হয়েছে, মহানগরীর কল্পনা সিনেমা হল হতে তালাইমারী মোড় পর্যন্ত সড়ক প্রশ্বস্তকরণ ও উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় আলুপট্টি মোড় হতে বোসপাড়া পুলিশ ফাঁড়ি পর্যন্ত ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম মন্থর হওয়ায় মাননীয় মেয়র গভীর অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
অধিগ্রহণ সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম মে মাসের মধ্যেই শেষ করতে মেয়র নির্দেশ দিয়েছেন বলেও ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতি পাঁচ দিন পর পর কাজের অগ্রগতি প্রকল্প পরিচালককে জানাতে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তবে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক বলেন, জমি অধিগ্রহণের কাজে কিছু জটিলতা থাকায় প্রকল্পে ধীরগতি হচ্ছে। ভূমি অধিগ্রহণখাতে প্রায় ৬০কোটি টাকা খরচ হয়েছে। গণপূর্ত ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজটি করা হয়েছে।এরই মধ্যে প্রকল্পের মেয়াদও বাড়ানো হয়েছে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত। তবে মূলকাজ শুরু করতে আরো তিন মাস সময় লাগবে।