ইবিতে ‘কারফিউ’ ভেঙে আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা, আটক ২২


নিজস্ব প্রতিবেদক, ইবি:

ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রির স্বীকৃতি ও বর্ধিত ফি কমানোর দাবিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) আন্দোলনরত ২২ শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার (২৪ এপ্রিল) ক্যাম্পাসে জরুরি অবস্থা ঘোষণার পরও আন্দোলন অব্যাহত রাখায় সকালে র‌্যাব ও বিজিবির সহায়তায় তাদেরকে গ্রেফতার করে ইবি থানা ও কুষ্টিয়া পুুলিশ।

জানা, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ক্যাম্পাসে বুধবার থেকে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য জরুরী অবস্থা জারি করে প্রশাসন। শিক্ষার্থীদের মিছিল, সভা, সমাবেশ, স্লোগান নিষিদ্ধ করা হয়। তবে শিক্ষার্থীরা তাদের কর্মসূচি অব্যাহত রাখে।একই সঙ্গে ক্যাম্পাসে দ্বিতীয় দিনের মতো বর্ধিতি ফি কমানোর দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছে।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়,  ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রির দাবিতে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ১১ টা থেকে  ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদভূক্ত পাঁচ বিভাগের শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন চলছিল। অনশনে কয়েকজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ার পরও প্রশাসন এবং অনুষদের ডিন শিক্ষার্থীদের সাথে দেখা না করায় শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে দুপুর ২টার দিকে অনুষদের ডিন অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেয়।

ফলে অফিসের ভেতরে আটকা পড়েন ডিন অফিসের সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল মমিন ও পিয়ন বাদল। এরপর রাত ৯টায় অবরুদ্ধ দুই কর্মচারীদেরকে উদ্ধার করতে আসেন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মমতাজুল ইসলাম ও ছাত্র-উপদেষ্টা ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ। তারা ভবনের ভিতরে ঢুকলে তাদেরকেও অবরুদ্ধ করে আন্দোলনকারীরা।

পরে ডিন ও ছাত্র উপদেষ্টা উদ্ধার করতে রাত ১ টার দিকে সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান ও প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ড. আনিছুর রহমান ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. আহসান-উল হক আম্বিয়া ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এরপর রাত ৪টা পর্যন্ত দফায় দফায় আন্দোলককারীদের সাথে সমঝোতা করতে ব্যর্থ হন তারা।

এই ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে তিন দফা দাবিতে আন্দোলন করছে পাঁচ বিভাগের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঠেকাতে ক্যাম্পাসে জরুরী অবস্থা জারি করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে সকল প্রকার সভা সমাবেশে নিধেধাজ্ঞা জারি করে মাইকিং করা হচ্ছে। যেকোন অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতে ক্যাম্পাসে পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।

এদিকে ফি কমানোর দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। অনুষদের ডিন ও বিভাগীয় সভাপতিদের সাথে উপাচার্যের মিটিংয়ের পরে সিদ্ধান্ত জানানো হবে এই আশ্বাসে বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করেছিল তারা।

দুপুরের দিকে আন্দোলনকারীরা প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তবাংলার পাশে অবস্থান নেয়। পরে বেলা বাড়লেও কোনো ফলাফল না পেয়ে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত প্রশাসন ভবনের দ্বিতীয় গেটে অবস্থান করছে।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসকারী বলেন, ‘একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পিছনে অন্য কোন কারণ রয়েছে। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ দুই জেলার প্রশাসন এবং গোয়েন্দাদের সাথে কথা বলা হচ্ছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’


শর্টলিংকঃ