নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঘা :
পদ্মার চরের বাসিন্দাদের ঘরে ঘরে আলো জ্বালাতে পাঁচ বছর আগে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প চালু করা হয়। মাঠে সেচ পাম্প চালু করে ফসল উৎপাদনেও সহায়ক ভূমিকা রাখছিল এ প্রকল্প। তবে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দেড় বছরের মাথায় রাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয় প্রকল্পের কর্মকর্তারা। এতে বিড়ম্বনা শুরু হয় চরবাসীর। তারাও বিল পরিশোধে গড়িমসি শুরু করেন। ক্রমে বকেয়া বিল বাড়তে থাকে। আদায়ে ব্যর্থ হয়ে একপর্যায়ে প্রকল্প ছেড়ে যেতে শুরু করেছে কর্মকর্তারা। ফলে ভেস্তে যেতে বসেছে এক সময়ে সফল এ প্রকল্পটি।
![](https://universal24news.com/wp-content/uploads/2019/02/সোলার-চালিত-সেচ-পাম্প।-300x179.jpg)
রাজশাহীর বাঘায় পদ্মা চরে গ্রহকরা বিল না দেয়ায় ভেস্তে যাচ্ছে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প। উপজেলার পদ্মার চরে অন্ধকার দূর করতে নির্মাণ করা হয়েছে এ সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প। প্রায় ৬ শো বাড়িতে দেয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। অন্ধকার ঘুঁচাতে ৫ বছর আগে নির্মাণ করা হয় সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প। তবে বকেয়া বিল আদায় করতে না পেরে একপর্যায়ের প্রকল্প ছেড়েছেন দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা।
জানা যায়, সরকারি সংস্থা ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের সহযোগিতায় ২০১৪ সালে বাঘার পদ্মার মধ্যে দাদপুর চরে দুই বিঘা জমির ওপর হাইড্রোন বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড প্রকল্পটি (সোলার মিনি গ্রিড) বাস্তবায়ন করে। বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে ৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১ দশমিক ৫ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন এ সোলার মিনি গ্রিড নির্মাণ করা হয়। পদ্মার মধ্যে দাদপুর, পলাশী ও কালিদাসখালী চরে প্রায় ৬০০ গ্রাহকের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়।
গ্রাহকদের অভিযোগ, দেড় বছর পর থেকে তারা আর রাতের বেলায় বিদ্যুৎ পান না। এ জন্য বিল দেয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। হাইড্রোন বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড নবায়নযোগ্য শক্তি কর্মসূচির কুষ্টিয়া আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে প্রকল্পটি তত্ত্বাবধান করে।
![](https://universal24news.com/wp-content/uploads/2019/02/বাঘায়-সৌর-বিদ্যুৎ-প্লান্ট-প্রকল্প।-300x134.jpg)
দাদপুর চরে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের নৈশপ্রহরী লিয়াকত আলী বলেন, ৫১৮টি বাড়িতে সংযোগ রয়েছে। সারা দিন বিদ্যুৎ দেয়া যায়, কিন্তু রাতে আর মেশিনে লোড টানতে পারে না। ফলে ঠিকমতো বিদ্যুৎ না পাওয়ায় গ্রাহকরা আর বিল দেয় না। আমার মাসিক বেতন সাড়ে ৬ হাজার টাকা। পাঁচ মাস ধরে বেতন পায়নি। এখানে আমি এবং দু’জন নৈশপ্রহরী ও একজন লাইনম্যান কাজ করে।
চকরাজাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুল আযম বলেন, নদীর ওই পার থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে পল্লীবিদ্যুতের লাইন। এ লাইনের সঙ্গে সংযোগ দেওয়া হলে আমাদের দুর্ভোগ আর থাকবে না। বিষয়টি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে অবগত করেছি। তিনি চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন।
দাদপুর চরে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প ব্যবস্থাপক হাবিবুর রহমান বলেন, দেড় বছর তারা ভালো সেবা পেয়েছে। কিন্তু লোড বেড়ে যাওয়ায় রাতের বেলায় আর বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাচ্ছে না।
হাইড্রোন বাংলাদেশের স্বত্বাধিকারী রেনেল সিদ্দিকী বলেন, দেড় বছর এটা ভালো চলেছে। ১০ টাকা ইউনিট হিসেবে এ গ্রিড থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ পেয়েছে। মাসিক লাইন রেন্ট ছিল ১০০ টাকা। বর্তমানে গ্রাহকরা বিল দিচ্ছেন না। গ্রাহকদের কাছে প্রায় ৩০ লাখ টাকা বকেয়া পড়েছে। এ বকেয়া টাকা না পেলে এটা সংস্কার করা সম্ভব হচ্ছে না।