ক্যাসিনো মামলার এক-তৃতীয়াংশের তদন্তই শেষ হয়নি


ইউএনভি ডেস্ক:

ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলোর এক-তৃতীয়াংশের তদন্ত শেষ হয়নি। অভিযানে গ্রেফতার হওয়া ১২ প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে ২৫টি মামলা হয়েছে।


এর মধ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন সম্রাটের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনের মামলাসহ ১৬টি মামলায় আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেয়া হয়েছে।

৯টি মামলা এখনও তদন্তাধীন রয়েছে। এসব মামলার তদন্ত ও বিচার শিগগিরই শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর দলের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় যুবলীগ নেতাদের নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এরপরই ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হয়। ১৮ সেপ্টেম্বর অভিযান চালিয়ে রাজধানীর চারটি ক্লাব বন্ধ করে দেয়া হয়। ক্লাবগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ জুয়ার সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতার করা হয় যুবলীগ, কৃষক লীগ, আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের।গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়ে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত চলা ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে যুবলীগ নেতা সম্রাটসহ ১২ জন গ্রেফতার হন।

তাদের বিরুদ্ধে মাদক, অস্ত্র ও মানি লন্ডারিং আইনে মামলা হয়েছে।জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক যুগান্তরকে বলেন, ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

ইতোমধ্যে আদালতের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার হত্যা মামলার দ্রুত বিচারের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, আইন মন্ত্রণালয় চাঞ্চল্যকর সব মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য প্রসিকিউশনকে তাগিদ দিয়ে যাচ্ছে।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, প্রভাবশালী এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে করা মামলাগুলোর তদন্ত ও বিচার দ্রুত শেষ করা উচিত।

এসব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হলে সরকারের অবস্থান আরও পরিষ্কার হবে। একই সঙ্গে সরকারের ওপর জনগণের আস্থা আরও বাড়বে।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি তাপস কুমার পাল বলেন, অস্ত্র ও মাদক মামলার চার্জশিট এলেও সম্রাট চিকিৎসাধীন থাকায় কারা কর্তৃপক্ষ তাকে আদালতে হাজির করছে না।

ফলে এসব মামলার বিচার এখনও শুরু করা যায়নি। আর মহানগরের পৃথক দুটি আদালতে জিকে শামীমের অস্ত্র মামলায় ও খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার মাদক মামলায় বিচার শুরু হয়েছে।

এছাড়া ক্যাসিনোসংক্রান্ত অন্য মামলাগুলোর চার্জশিট দেয়া হলেও বিচারের লক্ষ্যে তা এখনও আদালতে আসেনি। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এসব মামলায় অপরাধীদের সাজা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

১২ প্রভাবশালীর মামলা, তদন্ত ও বিচার : ক্যাসিনোকাণ্ডে আলোচিত নেতা হলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন সম্রাট। তার বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা রয়েছে।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের দেয়া সাজা তিনি ইতোমধ্যেই ভোগ করেছেন। এছাড়া অস্ত্র ও মাদক আইনের মামলায় আদালতে চার্জশিট দেয়া হয়েছে। মামলা দুটি বিচারের জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে।

আর সম্প্রতি করা মানি লন্ডারিং আইনের মামলা ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা দুটি তদন্তাধীন রয়েছে।

গত বছরের ৬ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম থানার আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জুশ্রীপুর গ্রাম থেকে সম্রাট ও তার সংগঠনের সহ-সভাপতি মো. এনামুল হক আরমানকে গ্রেফতার করা হয়।

ওই সময় আরমান মাদক সেবনরত অবস্থায় থাকায় তাকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। সম্রাটের সঙ্গে মাদক আইনের মামলার আসামিও তিনি।

এছাড়া তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনে দুদকের মামলাও রয়েছে। বর্তমানে আরমান কারাগারে আর সম্রাট কারা হাসপাতালে (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) চিকিৎসাধীন। সূত্র – যুগান্তর


শর্টলিংকঃ