এলডিসি উত্তরণে অন্যতম চ্যালেঞ্জ হবে রফতানি বহুমুখীকরণ


ইউএনভি ডেস্ক:

আন্তর্জাতিক বাজারে বর্তমানে বাংলাদেশ যেসব সুবিধা পেয়ে আসছে, স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) হিসেবে উত্তরণের পর সেসব কমে আসবে। বিশেষ করে স্বল্প সুদে ঋণ পাওয়া ও রফতানি ক্ষেত্রে সুবিধা সংকুচিত হয়ে আসবে। ফলে এলডিসি উত্তরণের পর বাংলাদেশের জন্য অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ হবে আন্তর্জাতিক বাজারে রফতানি বহুমুখী করা।

গতকাল ‘গ্লোবাল অ্যাওয়ারনেস অন ওপেন অ্যাকাউন্ট, এক্সপোর্ট ট্রান্সজেকশন্স অ্যান্ড রিসেন্ট পলিসি চেঞ্জেস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এসব কথা বলেন আলোচকরা।

ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাত, এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ট্রেড অ্যান্ড সাপ্লাই চেইন ফাইন্যান্স প্রোগ্রাম (টিএসসিএফপি) যৌথভাবে এ ওয়েবিনারের আয়োজন করে। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইসিসি বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, আইসিসি বাংলাদেশের ব্যাংকিং কমিশনের চেয়ারম্যান, বিয়াকের সিইও ও এবি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ এ. (রুমী) আলী এবং ট্রেড অ্যান্ড সাপ্লাই চেইন ফাইন্যান্সের প্রধান স্টিভেন বেক। ওয়েবিনারে তৈরি পোশাক খাত, চামড়া শিল্প, ওষুধ খাত, প্লাস্টিকপণ্য রফতানিসংশ্লিষ্ট ও বিভিন্ন ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তারা আলোচক হিসেবে অংশ নেন।

ওয়েবিনারে বক্তারা বলেন, কভিড-১৯ মহামারী বৈশ্বিক বাণিজ্যকে স্থবির করে দিয়েছে। ফলে বাণিজ্যের জন্য এক ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে সংকুচিত হয়ে পড়া অর্থনীতি ও বাণিজ্য থেকে উত্তরণ একটি বড় চ্যালেঞ্জ। মহামারীর ফলে ব্যবসায়ী ও আমদানি-রফতানিকারকরা পণ্যের জাহাজীকরণ ও পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। রয়েছে মূল্য পরিশোধ সমস্যা, ক্রয়াদেশ বাতিল হয়ে যাওয়া, নগদ অর্থের সংকট এবং ঋণ পরিশোধে বাধ্যবাধকতা পরিপালনে ব্যর্থতার মতো সমস্যাও। এ অবস্থায় ব্যবসায়িক পরিবেশ, ব্যাংক ও নীতিনির্ধারণীসহ সর্বমহলে এক ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

এলডিসি থেকে উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশের বিষয়ে বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে বাংলাদেশ নতুন পথে যাত্রা করতে যাচ্ছে। তবে ২০২৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ এলডিসির সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে। এলডিসি উত্তরণ-পরবর্তী বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জের বিষয়টি ওয়েবিনারের আলোচনায় উঠে এসেছে। তারা বলছেন, বর্তমানে এলডিসি সুবিধার আওতায় বাংলাদেশের ৭০ শতাংশের মতো রফতানি হয়ে থাকে।

কিন্তু এলডিসি উত্তরণের পর বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাজারে এ রফতানি সুবিধা হারাবে। সরকার ঘোষিত ২০২১-৪১ পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনায়ও বিষয়টি উঠে এসেছে। যেখানে বলা হয়েছে, এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ বছরে ৭ বিলিয়ন ডলারের রফতানি আয় হারাবে।

ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের পরিচালক অধ্যাপক প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জি এবং সহকারী অধ্যাপক রুহুল আমিন। ওয়েবিনারে বিজিএমইএর সভাপতি ড. রুবানা হক, বিকেএমইএর সাবেক সভাপতি ও প্লামি ফ্যাশনস লিমিটেডের এমডি মো. ফজলুল হক, এমসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও এপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের এমডি সৈয়দ নাসিম মনজুর, বিপিজিএমইএর সভাপতি এবং বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন আহমেদ, অগ্রণী ব্যাংকের এমডি ও সিইও মোহাম্মদ শামস-উল-ইসলাম, এমটিবির এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, এইচএসবিসির গ্লোবাল ট্রেড অ্যান্ড রিসিভয়েবল ফাইন্যান্সের কান্ট্রি প্রধান মুহাম্মাদ শহীদুজ্জামান, ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের সিএফও মো. নাইমুল হুদা, আইসিসি ব্যাংকিং কমিশনের নির্বাহী পর্ষদের সদস্য ভিনসেন্ট ও ব্রিন এবং আইসিসি বাংলাদেশের মহাসচিব আতাউর রহমান অংশ নেন।


শর্টলিংকঃ