কলকাতায় পৌঁছেছে পর্যটকবাহী এমভি মধুমতি


ইউএনভি ডেস্ক:

বাংলাদেশ থেকে ছেড়ে আসার ৬৫ ঘণ্টা পর ভারতের কলকাতায় পৌঁছল ক্রুজ জাহাজ এমভি মধুমতি। স্থানীয় সময় বেলা ১টার দিকে এ জাহাজটি ভারতের বিআএসএন জেটিতে ভেড়ে।এটি ইনল্যান্ড ওয়াটারওয়েজ অথরিটি অব ইন্ডিয়ার একটি টার্মিনাল। এরপর কলকাতায় জাহাজের যাত্রী ও পর্যটকদের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করা হয়। এর মধ্য দিয়ে ৭০ বছর পর এ দুই অঞ্চলের মধ্যে প্রথম পর্যটক ও যাত্রীবাহী জাহাজের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হল।

এদিকে দুই দেশের মধ্যে নৌপথে যাত্রী চলাচল পর্যটন শিল্পের নতুন খাত হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশ ও ভারতের ট্যুর অপারেটররা। তাদের মতে, এ যাত্রায় একইসঙ্গে বাংলাদেশ ও ভারতের সুন্দরবন দেখার সুযোগ পাচ্ছে পর্যটকেরা। দুই দেশের দর্শনীয় স্থানও নৌপথে ভ্রমণের সুযোগ তৈরি হল।

শুক্রবার রাত ৭টা ৫০ মিনিটে নারায়ণগঞ্জের পাগলা (মেরি এন্ডারসন) ভিআইপি এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু হয় এমভি মধুমতির। যাত্রাপথের ৬৫ ঘণ্টার মধ্যে খুলনার আন্টিহারায় ১২ ঘণ্টা অবস্থান করেছিল। এছাড়া ভারতের হেমনগর এলাকায় কাস্টমসের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে ৬-৭ ঘণ্টা একই স্থানে স্থির ছিল। বাকি ৪৬ ঘণ্টায় নারায়ণগঞ্জ থেকে কলকাতায় এসে পৌঁছাল এ জাহাজটি। সেখানে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামসহ হাইকমিশনের কর্মকর্তারা পর্যটক ও যাত্রীদের ফুল দিয়ে বরণ করেন।

পরে বিশেষ ব্যবস্থায় যাত্রীদের ইমিগ্রেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। এ জাহাজটি আগামী ৪ এপ্রিল ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে কলকাতায় স্থানীয় একটি হোটেলে বাংলাদেশি পর্যটক ও যাত্রীদের জন্য বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে যাচ্ছে ভারত সরকার।

এর আগে বেলা ১১টার দিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলি নদীতে প্রবেশের পর বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে জাহাজের যাত্রী ও পর্যটকদের লাল-সবুজের উত্তরীয় পরিয়ে দেয়া হয়, যা পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন যাত্রীরা। তারা সমস্বরে বলেন, ৭০ বছর পর নৌপথে বাংলাদেশের প্রথম জাহাজের যাত্রী হয়ে আমরা গর্বিত।

এদিকে ঢাকা-কলকাতা রুট নতুন সম্ভাবনাময় পর্যটন খাত হিসেবে দেখছেন দেশীয় ট্যুর অপারেটররা। এ জাহাজটিতে অন্তত ৬-৭টি ট্যুর অপারেটর যাত্রায় অংশ নেন। তাদের একজন রিভার অ্যান্ড গ্রিন ট্যুরসের অন্যতম মালিক মো. বোরহান উদ্দিন। তিনি বলেন, মধুমতি জাহাজের প্রটোকল ও ট্রাভেলস সংক্রান্ত সেবা দিয়েছি। আমি মনে করছি, এটি ট্যুর অপারেটরদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা। বিআইডব্লিউটিসির সহযোগিতা ছাড়া বেসরকারি অপারেটরদের পক্ষে এত দীর্ঘ পথ রেকি করা সম্ভব হতো না। এখন আমরা মনে করছি, ৪০ ঘণ্টায় দুই দেশের যাতায়াত করা সম্ভব হবে।

কেয়ারি ট্যুরস অ্যান্ড সার্ভিসেসের ম্যানেজার সোহরাওয়ার্দী হোসেন সারওয়ার বলেন, দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের জন্য যাতায়াত ও দর্শনীয় স্থান পরিদর্শনসহ ৬ দিন ও ৬ রাতের একটি প্যাকেজ ট্যুর পরিচালনা করার চিন্তা করছি। এ ওয়ান ট্যুর সলিউশনের সিইও ইমতিয়াজ বলেন, ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের কার্যক্রম আরও সহজ করা হলেই দুই দেশের মধ্যে এ জাহাজটি বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। এতে শুধু পর্যটক নয়, যাত্রীরা বিশেষ করে অসুস্থ মানুষ নৌপথে যাতায়াত করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন।


শর্টলিংকঃ