কাজে ফিরেছেন শ্রমিকরা, প্রাণচাঞ্চল্য শিল্পাঞ্চলে


ইউএনভি ডেস্ক:

সাভার-আশুলিয়ায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা ১৩০টি কারখানায় জরুরি শিপমেন্ট থাকায় কাজে যোগ দিয়েছেন শ্রমিকরা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে এসব কারখানায় শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবে এসে কাজ শেষে ফিরে গেছেন। একই অবস্থা গাজীপুরেও। নগরীর কোনাবাড়ী, কাশিমপুর, মৌচাক, সফিপুর, বাসন ও পল্লীবিদ্যুৎ এলাকার সব কারখানায় পুরোদমে কাজ চলেছে। গতকাল সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত শান্ত পরিবেশে কাজ করেছেন তারা। যদিও শ্রমিকের চোখে-মুখে ছিল আতঙ্ক।

অবশ্য দু-একটি কারখানায় সকালে শ্রমিকরা এসে হাজিরা শেষে মেশিনের সামনে বসে পড়েন এবং শেষ পর্যন্ত তারা কাজ থেকে বিরত ছিলেন বলে জানান একাধিক কর্মকর্তা। সকাল থেকে নিরাপত্তার স্বার্থে বিভিন্ন কারখানার সামনে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন ছিল।সরেজমিনে আশুলিয়ার জামগড়া, বেরন, নরসিংহপুর, নিশ্চিন্তপুর, জিরাবোর কিছু ফটকে কারখানা খোলার নোটিশ দেখা যায়। পোশাক শ্রমিক ফারজানা আক্তার বলেন, সোমবার রাতে সুপারভাইজার ফোন করে কারখানা খোলা থাকবে জানান। সকালে এসে কাজ করেছি, কোনো ঝামেলা হয়নি। সবাই আগের মতোই কাজ করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্টারলিং পোশাক কারখানার এক কর্মকর্তা বলেন, শ্রমিক অসন্তোষের মুখে কর্তৃপক্ষ কারখানা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। তবে জরুরি শিপমেন্ট থাকায় ফিনিশিং বিভাগের শ্রমিকদের ডেকে এনে কাজ করানো হচ্ছে। ধীরে ধীরে শিল্পাঞ্চলে প্রাণ ফিরে আসবে।শ্রমিক নেতা সারোয়ার হোসেন বলেছেন, কারখানা খুলে দেওয়া স্বস্তিদায়ক। আশা করছি, শিগগিরই সুন্দর পরিবেশ ফিরে আসবে।শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, পোশাক কারখানাগুলো খুলতে শুরু করেছে। অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা বেশির ভাগ কারখানায় মঙ্গলবার কাজ চলেছে। দু-এক দিনের মধ্যে বাকিগুলোতেও পুরোদমে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসবে।

আশুলিয়া থানার ওসি এস এম কামরুজ্জামান জানান, কারখানায় হামলা-ভাঙচুরের মামলায় আরও ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নতুন করে কোনো মামলা না হওয়ায় ১৭ মামলায় সাভার-আশুলিয়ায় মোট গ্রেপ্তার হলেন ১৫ জন।

এদিকে, গাজীপুরের কালিয়াকৈর, কোনাবাড়ী, কাশিমপুর ও বাসন থানা এলাকার বেশির ভাগ কারখানায় শ্রমিকরা কাজে যোগ দিলেও বিরাজ করছে গ্রেপ্তার আতঙ্ক। অবশ্য কয়েকটি কারখানার কর্মকর্তারা আশ্বাস দিয়েছেন, প্রকৃত শ্রমিক কখনও কারখানায় হামলা-ভাঙচুর করতে পারেন না। এবারও তারা কোনো নৈরাজ্য করেননি। ফলে কারখানায় যোগ দেওয়া শ্রমিকদের গ্রেপ্তারের প্রশ্নই ওঠে না।

কোনাবাড়ীর এম এম নিটওয়্যার লিমিটেডের পরিচালক মনোয়ার হোসেন বলেন, কারখানার শ্রমিকরা পুরোদমে কাজে যোগ দিয়েছেন। আশা করছি, নির্ধারিত বেতনকাঠামো মেনেই তারা কাজ করবেন।হামলায় লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়া কোনাবাড়ীর তুসুকা গার্মেন্টও গতকাল খুলে দিলে শ্রমিকরা যোগ দেন। কারখানার পরিচালক তারেক হাসান বলেন, আমাদের কারখানায় বহিরাগতরা হামলা চালিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। আমাদের শ্রমিকদের কোনো দায় নেই। সকালে কারখানা খুলে দিলে সবাই কাজে যোগ দেন। আর সহকারী মহাব্যবস্থাপক সিরাজুল ইসলাম বলেন, পুলিশকে আমাদের শ্রমিকদের হয়রানি না করতে বলা হয়েছে। প্রথম দিনে ৯০ শতাংশ শ্রমিক কাজে এসেছেন।

কোনাবাড়ী মেট্রো থানার ওসি কে এম আশরাফ উদ্দিন বলেন, বেশির ভাগ গার্মেন্টে কাজ চলেছে। নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন পয়েন্টে বাড়তি পুলিশ, শিল্প পুলিশ ও বিজিবি সদস্য রাখা হয়েছে।

 


শর্টলিংকঃ