কোরবানির ঈদ ঘিরে সক্রিয় অসাধু চক্র, মসলার দাম ঊর্ধ্বমুখী


ইউএনভি ডেস্ক:

বজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ, তারপরও বাড়তে শুরু করেছে মসলা জাতীয় পণ্যের দাম। সাত দিনের ব্যবধানে খুচরা বাজারে প্রতিকেজি লবঙ্গের দাম ১০০ টাকা বেড়েছে।এছাড়া পেঁয়াজ, শুকনা মরিচ ও আদার দাম কেজিতে ৫-১০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। ভোক্তারা বলছেন, প্রতিবছরের মতো এবারও ঈদ ঘিরে অসাধু বিক্রেতারা মসলা জাতীয় পণ্যের দাম বাড়াতে শুরু করেছে। করোনাকালে মসলা জাতীয় পণ্যের দাম এভাবে বাড়লে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়বে।


মঙ্গলবার সরকারি সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দৈনিক বাজার মূল্য তালিকায় এসব পণ্যের দাম বাড়ার চিত্র দেখা গেছে। টিসিবি বলছে, সাত দিনের ব্যবধানে প্রতিকেজি লবঙ্গের দাম বাড়ানো হয়েছে ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ। প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। প্রতিকেজি শুকনা মরিচের দাম বেড়েছে ১ দশমিক ৮৫ শতাংশ। আদার দাম কেজিতে বেড়েছে ৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ ও আমদানি করা আদার দাম বেড়েছে ৩ দশমিক ৭০ শতাংশ।

জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের উপপরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে রাজধানীসহ সারা দেশে পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে বিশেষভাবে তদারকি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে যে সব পণ্যের দাম বেড়েছে, সেগুলোর দাম কমাতে বাড়তি নজর রাখা হচ্ছে। কোনো ধরনের অনিয়ম পেলে শাস্তির আওতায় আনা হবে।

মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াবাজার, রায়সাহেব বাজার ও কেরানীগঞ্জের জিঞ্জিরা বাজারের খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এদিন প্রতিকেজি লবঙ্গ মানভেদে বিক্রি হয়েছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা; যা সাত দিন আগে বিক্রি হয়েছে ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪০-৪৫ টাকা; যা সাত দিন আগে বিক্রি হয়েছে ৩৫-৪০ টাকা। আমদানি করা শুকনা মরিচ আকার ও মানভেদে বিক্রি হয়েছে ২৫০ থেকে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা; যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ২৪০-২৯০ টাকা। প্রতিকেজি দেশি আদা বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে সর্বোচ্চ ১৩০ টাকা; যা সাত দিন আগে বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১২০ টাকা। এছাড়া আমদানি করা আদা প্রতিকেজি বিক্রি হয়েছে ১৩০-১৫০ টাকা; যা সাত দিন আগে বিক্রি হয়েছে ১২০-১৪০ টাকা।

রাজধানীর নয়াবাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা মো. একরামুল হক বলেন, দুই সপ্তাহ আগেও একাধিক মসলার দাম কম ছিল। কিন্তু ঈদ ঘনিয়ে আসায় দাম বাড়তে শুরু করেছে। এ দেশের মানুষ শুধু কোরবানির ঈদে মাংস রান্না করে খাওয়ার জন্য মসলা কেনে না, প্রতিদিনের খাবার রান্নার জন্য মসলা জাতীয় পণ্য কিনতে হয়। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এভাবে দাম বাড়ানোয় সাধারণ ভোক্তা নাজেহাল হচ্ছেন। তিনি বলেন, এ পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের উচিত পণ্যের দাম না বাড়ানো। কিন্তু মুনাফাখোর ব্যবসায়ীরা নীতি কথা শোনে না। এজন্য সরকারি তদারকি সংস্থাগুলোর নজরদারি বাড়ানো উচিত।

রায়সাহেব বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা মো. জসিম বলেন, কোরবানির ঈদ ঘিরে পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করেছে। আদার দামও বাড়তি। লবঙ্গের দামও বাড়িয়ে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। যদিও বাজারে এসব পণ্যের সংকট নেই। সামনে ঈদ, তাই বিক্রেতারা এসব পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

একই বাজারে মুদি পণ্যের বিক্রেতা মো. আরিফ বলেন, কিছুদিন ধরে পাইকারি বাজারে মসলা জাতীয় কয়েকটি পণ্যের দাম বাড়তি। যে কারণে বেশি দরে আনতে হয়। বিক্রিও করতে হয় বেশি দরে। পাশাপাশি বৃষ্টির কারণে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমেছে। বৃষ্টি কমে গেলে দাম কমবে বলে আশা করছি।

এ ব্যাপারে পাইকারি আড়ত শ্যামবাজারের কয়েক বিক্রেতা বলেন, গত দুই সপ্তাহে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ, আদাসহ লবঙ্গের দাম বাড়েনি। খুচরা বিক্রেতাদের অভিযোগ সত্য নয়। তাই খুচরা বাজার ভালোভাবে তদারকি করলে রহস্য বের হয়ে আসবে।


শর্টলিংকঃ