ক্রেডিট কার্ড এড়ানোর মাধ্যমে ব্যয় কমানোর চেষ্টা মার্কিনদের


ইউএনভি ডেস্ক:

লাখো মানুষ যখন গত বছর গৃহবন্দি অবস্থায় ছিল, তখন তাদের করার মতো তেমন কিছুই ছিল না, কিন্তু কেনার ছিল অনেক কিছু। এমনকি ব্যক্তিগত আয় হ্রাস পাওয়ার পরও আমেরিকার খানা ব্যয় টানা ছয় মাস বেড়েছে। কিন্তু শীতের মৌসুমে মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা দুর্বল হয়েছে। এতে অনেকেই লাগামহীন হয়ে পড়া পকেটের রাশ টেনে ধরার চেষ্টা করছে।

এখন তারা নিজেদের কৃচ্ছ্রের কঠোর পরীক্ষা নিচ্ছে। অনেক মানুষ মাসজুড়ে প্রয়োজনীয় পণ্যের বাইরে অতিরিক্ত কিছুই কিনছে না। খরচ না করার এ নতুন প্রবণতা মানুষকে বাইরে রেস্টুরেন্টে খেতে যাওয়া, নতুন জামাকাপড় কেনা, ফাস্ট ফুড খাওয়া এমনকি গণপরিবহন ব্যবহার (হেঁটে বা সাইকেল নিয়ে যাওয়ার প্রাধান্য দেয়া) করা থেকেও দূরে সরিয়ে রাখছে, যা কিনা তাদের ক্রেডিট কার্ডের ওপর চাপকেও অনেকাংশে কমিয়ে দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অনিশ্চিত সময়ে খরচ কমানোর গ্রাহকদের জন্য ব্যক্তিগত চ্যালেঞ্জ হয়ে সামনে এসেছে। ডিসেম্বরে দেশটির বেকারত্বের হার ছিল ৬ দশমিক ৭ শতাংশ এবং আট মাসের মধ্যে প্রথমবার শ্রম বাজার থেকে প্রচুর মার্কিন চাকরিচ্যুত হয়। যেখানে এককালীন ৬০০ ডলারের চেক হয়তো যথেষ্ট নয়। অন্যদিকে জো বাইডেনের প্রতিশ্রুত ১ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ডলারের সহায়তা তহবিলও রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের দ্বারা বাধার মুখে পড়েছে।

৪৭ বছর বয়সী রায়ান ম্যাকরায়ের মতে, মহামারী কেনাকাটার জন্য প্ররোচিত করে বলে মনে হয়। তিনি লক্ষ্য করেছেন, লকডাউনে অনেক বেশি খরচ করেছেন।

তিনি বলেন, যদি আপনি ‘কারণ এখানে মহামারী চলছে’ এই বাক্যটি ব্যবহার করেন, তবে আপনি যেকোনো কেনাকাটাকে বৈধতা দিতে পারবেন। ছুটির পর তাই নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের দিকে তাকালাম এবং খরচ কমানোর সিদ্ধান্ত নিলাম।

এর অর্থ হচ্ছে নতুন বই কিংবা জামা এবং ফাস্ট ফুড খাওয়া বাদ পড়ল। তার হিসাব মতে, এ পরিবর্তনের ফলে জানুয়ারিতে প্রায় ১ হাজার ডলারের মতো বাড়তি সঞ্চয় করা গেছে। রায়ান বলেন, কেবল প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রগুলোই কিনেছি। এ সময় অ্যামাজন থেকে নতুন লোভনীয় জিনিসগুলো কেনা থেকেও দূরে সরে এসেছেন।

ফেসবুক কিংবা রেডিটের বাজেটিং গ্রুপগুলোতে শপিং করার বদলে অন্য কী করে সময় কাটানো যায় এবং কীভাবে কম খরচে মুদি কেনাকাটা করতে পারেন, সে বিষয়ে উপদেশ চাচ্ছেন অনেকে।

টেক্সাসের অধিবাসী ক্লাইরে অ্যারেডোনডো বলেন, যখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনি কাউকে নতুন জিনিস কেনাকাটা করতে দেখেন, সেটা এড়িয়ে যাওয়া কঠিন এবং অন্যদিকে আপনার মেইলে ব্ল্যাক ফ্রাইডের অফারগুলো এসেও জমা হচ্ছে। চোটের কারণে চাকরিহীন অবস্থায় থাকা ক্লাইরে মহামারীর শুরুতে অনলাইনে অর্ডার দেয়া শুরু করেন এবং বর্তমানে তার কাছে আটটি নতুন হাত ব্যাগ রয়েছে।

খরচের লাগাম টানতে নভেম্বর তিনি খরচহীনভাবে কাটানোর সিদ্ধান্ত নেন। এরপর তিনি একটি কঠোর মুদি কেনাকাটার তালিকা তৈরি করেন এবং অপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলো কেনাকাটার তালিকা থেকে বাদ দেন। পাশাপাশি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন অজরুরি পণ্যগুলো না কেনার ব্যাপারে। এছাড়া কোনো পণ্য যদি তা বাধ্য হয়ে কিনতে হয়, সেখানেও তিনি মিতব্যয়িতা প্রদর্শন করেছেন।

বারবারা আহোনসি নামে এক সফটওয়্যার ডিজাইনার শৃঙ্খলা বজায় রাখার উপায় হিসেবে বলেন, অক্টোবরে কোনো ব্যয় না করার ফলে ক্রেডিট কার্ড বিল বাদ দিতে পেরেছেন তিনি।


শর্টলিংকঃ