কাবিননামায় দেনমোহর জালিয়াতির অভিযোগে চারজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট


রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ

নওগাঁর রাণীনগরে বাল্যবিয়ের কাবিননামার আড়াই লাখ টাকার দেনমোহরের স্থলে ১২ লাখ টাকার দেনমোহর করে জাল কাবিননামা তৈরী, প্রতারণা ও জালিয়াতির মামলায় ভুয়া কাজী (নিকাহ রেজিষ্ট্রার) বেলাল হোসাইনসহ ৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইভেস্টিগেশন (পিবিআই) নওগাঁ শাখা।


গত ১৯ মে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট, আমলী আদালত নং-১০, (রাণীনগর), নওগাঁয় পুলিশ ব্যুরো অব ইভেস্টিগেশন (পিবিআই) নওগাঁর পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁ জেলা শহরের পার-নওগাঁ দক্ষিণ পাড়া মহল্লার নবিবর রহমান শেখের ছেলে মাহদী হাসান শেখ (৩০) এর সঙ্গে বিগত ১০ আগস্ট ২০১৮ তারিখে রাণীনগর উজেলার ২নং কাশিমপুর ইউনিয়নের আমজাদ হোসেন মৃধার অপ্রাপ্ত বয়স্ক কন্যা সাদিয়া আক্তার (১৫) বিবাহ হয়। সাদিয়া আক্তার বর্তমানে আতাইকুলা জনকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী।

বিয়ের মাত্র ২ মাস পার হতেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা না হলে এফিডেফিটের মাধ্যমে গত ১৫ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে সাদিয়াকে তালাক প্রদান করে। পরবর্তীতে সাদিয়া ও তার পরিবারের লোকজন রাণীনগর ২নং কাশিমপুর ইউনিয়নের ভূয়া কাজী বেলাল হোসাইনের যোগসাজশে প্রতারনা মূলক ও অবৈধ ভাবে অধিক অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার আশায় জাল নিকাহনামা তৈরি করে।

পারিবারিকভাবে বিয়ের সময় নগদ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেনমোহর পরিশোধ করলেও কাজী বেলাল সেটাকে ১২ লাখ টাকা দেখিয়ে জাল নিকাহ্নামা (কাবিননামা)’র জাবেদা নকল তৈরি করে মেয়ে পক্ষকে প্রদান করে।

অন্যদিকে ছেলে পক্ষ বিষয়টি জানতে পেয়ে প্রতিকারের জন্য সাবেক স্বামী মাহাদী হাসান শেখ বাদী হয়ে সাবেক স্ত্রী সাদিয়া আক্তার (১৫) ও তার পিতা আমজাদ হোসেন মৃধা (৪৮), আতিকুর রহমান (২৭), পিতা- মোহাম্মদ আলী, সর্বসাং- কাশিমপুর (পোষ্টপাড়া) ও কাজী বেলাল হোসাইন (৩৫), পিতা- নাজিম উদ্দিন, সাং- গহেলাপুর (তেঘরপাড়া), বর্তমান ঠিকানা- সাং- এনায়েতপুর, সর্বথানা- রাণীনগর, জেলা- নওগাঁকে আসামী করে জাল ও মিথ্যাভাবে নিকাহ্নামার জাবেদা নকল তৈরী, প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে নওগাঁ ১০ নং আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। যার সি,আর মামলা নং ০১/১৯ (রাণীনগর), ধারা-৪৬৪/৪৬৫/৪৬৮/৪৭১ পেনাল কোড ।  বিজ্ঞ আদালত মামলাটি নওগাঁ পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেন।

আদালতে দাখিলকৃত পিবিআই তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাদিয়ার পরিবারের কতিপয় লোকজন ও কাজী বেলাল হোসইনের নিকাহ্ রেজিস্ট্রার লাইসেন্স না থাকা স্বত্বেও মিথ্যা ও অবৈধ অর্থ লাভের আশায় জাল নিকাহ নামা তৈরি করে অত্র মামলার বিবাদি পক্ষকে সরবরাহ করেছে। এই ঘটনায় গত ২ ফ্রেবুয়ারী মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজী বেলালেসহ ৪জনের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৪৬৪/৪৬৫/৪৬৮/৪৭১/৩৪ ধারায় অভিযুক্তে করে প্রতিবেদন দাখিল করেছে।

এব্যাপারে নওগাঁ পুলিশ ব্যুরো অব ইভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি মামলাটি তদন্ত সাপেক্ষে মামলার সত্যতা পেয়েছি। তারই প্রেক্ষিতে আমি মামলার তদন্ত প্রতিবেদনটি বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করেছি।


শর্টলিংকঃ