পদ্মায় নৌকাডুবিতে নিখোঁজ নববধূর সন্ধানে মরিয়া ডুবুরিদল


নিজস্ব প্রতিবেদক :

রাজশাহী সদর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আব্দুর রউফ জানিয়েছেন, পদ্মা নদীতে নৌকা ডুবির ঘটনায় তৃতীয় দিনের মতো উদ্ধার অভিযান চলছে। আজ সকাল থেকে আবারও উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে। গতকাল শনিবার একটি নৌকা পাওয়া গেলেও আরেকটির সন্ধান এখনও মিলেনি। তবে আশা করা যাচ্ছে, নিখোঁজ নৌকার সন্ধান পাওয়া গেলে আরো মরদেহ মিলতে পারে সেখানে।

তৃতীয় দিনের মতো উদ্ধার অভিযান চলছে

রাজশাহীর পদ্মায় বিয়ের অনুষ্ঠানের নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ কনেসহ তিনজনকে উদ্ধারে আজ রোববারও উদ্ধার অভিযান চলছে। দমকল বাহিনীর ডুবুরি দল উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে।

নৌ-পুলিশের রাজশাহী থানার ওসি মেহেদী মাসুদ জানান, শনিবার তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। দুপুর ১টার দিকে একলাস আলী (২২) ও আড়াইটার দিকে রতন আলী (৩০) নামের দুইজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থলের পাশেই তাদের লাশ ভেসে উঠে। এর আগে সকালে চারঘাট এলাকা থেকে মনি খাতুন নামের এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাড়িয়েছে ৬জনে। তবে এখনো ৩জন নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছে তাদের পরিবারের সদস্যরা। তাদের সন্ধানে উদ্ধার অভিযান চলছে। এছাড়াও ডুবে যাওয়া নৌকাও উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানান নৌ পুলিশের ওসি।

নিখোঁজরা হলেন- কনে সুইটি খাতুন পূর্ণিমা (১৬), কনের ফুফাতো বোন রুবাইয়া খাতুন (১৩) এবং খালা আখি খাতুন (২৫)।

শনিবার সকালে কনের চাচা শামিমের স্ত্রী মনি খাতুনের (৩০) লাশ উদ্ধার করা হয়। দুপুরে পাওয়া যায় তাদের আত্মীয় একলাস আলীর লাশ। এর পর পাওয়া গেছে কনের ভগ্নিপতি তার ভগ্নিপতি রতন আলীর লাশ। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতেই রতনের মেয়ে মরিয়মের (৫) লাশ উদ্ধার করা হয়। আর জীবিত উদ্ধার হয়েছেন রতনের স্ত্রী বৃষ্টি খাতুন (২০)।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক বলেন, নিখোঁজদের উদ্ধারে দমকল বাহিনী, বিজিবি ও নৌ-পুলিশ রাত থেকেই উদ্ধার অভিযান চালায়। সকালে তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিআইডাব্লুটিএ’র একটি ডুবুরি দল। এই নৌকা ডুবির ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু আসলামকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি সকাল থেকে তদন্ত শুরু করেছে। এছাড়াও পদ্মাপাড়ে নিখোঁজ ও হতাহতের অনুসন্ধান উদ্ধার কার্যক্রম সমন্বয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। নিহতের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা করে দেয়া হবে। এছাড়াও আহতের চিকিৎসা ব্যয় বহন করবে সরকার বলেও জানান এই সরকারি কর্মকর্তা।

এখনো নিখোঁজ নববধূ পূর্ণি

শুক্রবার চরখিদিপুর এলাকায় সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে ৩৬ জন যাত্রী নিয়ে দুইটি নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটে। এতে এক শিশু মারা যায়। বিয়ের অনুষ্ঠানের যাত্রী নিয়ে পবা উপজেলার খানপুর থেকে ডাইঙ্গেরহাট যাচ্ছিল নৌকা দুইটি। রাতেই দমকল বাহিনী ও বিজিবি উদ্ধার অভিযান চালায়। খবর পেয়ে সিটি মেয়র ও রাজশাহী-৩ আসনের এমপিসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান।

নিখোঁজ কনের নাম সুইটি খাতুন পুর্ণি (২০)। তিনি পবা উপজেলার ডাইঙ্গেরহাট গ্রামের শাহীন আলীর মেয়ে। আর বরের নাম আসাদুজ্জামান রুমন (২৫)। তিনি চরখানপুরের মৃত ইনছার আলীর ছেলে। নিহত শিশুর নাম মরিয়ম (০৫)। সে বসুয়া এলাকার রতন আলীর মেয়ে। দুই মাস আগে তাদের রেজিস্ট্রি বিয়ে হয়েছিল। বৃহস্পতিবার তাদের বিয়ের অনুষ্ঠান হয়। শুক্রবার বৌভাতের অনুষ্ঠান শেষে তারা ফিরছিল।


শর্টলিংকঃ