বানেশ্বর পশুহাটে জোরপূর্বক তিনগুণ খাজনা আদায়ের অভিযোগ


পুঠিয়া প্রতিনিধি:

রাজশাহীর পুঠিয়ায় ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে বানেশ্বর পশুহাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিকট থেকে তিনগুণ অতিরিক্ত খাজনা আদায় করছে ইজারদারের লোকজন। এ ঘটনায় হাটে আগতদের মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

ক্রেতা-বিক্রেতাদের অভিযোগ, ইজারদার স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করে সরকারী নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাগুলি দেখিয়ে জোরপূর্বক অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছেন। ফলে খাজনা আদায়কারীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছে ক্রেতা বিক্রেতারা।

উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মধ্যে একমাত্র বৃহৎ পুশু কেনা-বেচার মাধ্যম বানেশ্বর হাট। প্রতি সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার এই হাটে বসে। বিভিন্ন কৃষি পণ্যের পাশাপাশি এই হাটে গরু ও ছাগল কেনা বেচা হয় পুরোদমে। তবে ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে বানেশ্বর কলেজ মাঠে বৃহৎ পরিসরে বসে পশুর হাট। সরকারী নিয়ম অনুসারে কেবলমাত্র ক্রেতাদের নিকট থেকে প্রতিটি গরু কেনা বাবদ খাজনা দু’শত টাকা আর ছাগলের ক্ষেত্রে ৮০ টাকা।

মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) দুপুরে বানেশ্বর কলেজ মাঠে অস্থায়ী পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে কয়েকটি স্থানে খাজনা আদায়ের জন্য তাঁবু বসানো হয়েছে। প্রতিটি তাঁবুতে ৩ থেকে ৫ জন খাজনা আদায়কারী পশু কেনার রশিদ দিচ্ছেন। তারা প্রতিটি গরুর জন্য ক্রেতার নিকট থেকে ৬শ’ টাকা ও বিক্রেতার নিকট থেকে ১শ’ টাকা আদায় করছে। অপরদিকে ছাগল হাটে ক্রেতার নিকট থেকে ৩শ’ টাকা আর বিক্রেতার নিকট থেকে ৫০ টাকা আদায় করছে। তবে পশু ক্রয়ের রশিদ দেয়া হলেও আদায়কৃত খাজনার কোনো রশিদ তারা দিচ্ছে না।

হাটে খাজনা আদায়কারীরা বলেন, আমরা দৈনিক মুজুরী হিসাবে পশু ক্রয়ের রশিদ দেয়ার কাজ করছি। সরকারী নিয়ম অনুসারে কোন পশুর কত টাকা খাজনা সেটা আমাদের জানা নেই। তবে ইজারদারের নির্দেশে আমরা প্রতিটি গরুর ক্ষেত্রে মোট ৭শ’ আর ছাগলের ক্ষেত্রে ৩৫০ টাকা খাজনা নিচ্ছি। খাজনার রশিদ দেয়া হচ্ছে না কেনো জানতে চাইলে তারা বলেন, আপনাদের যা বলার তা ইজারদারের নিকট বলেন।

হাটে আগত ভালুকগাছি এলাকার গরু ক্রেতা আবুল কালাম বলেন, এই হাটে সরকারী কোনো নিয়ম চলে না। ঈদ আসলেই ইজারদারের লোকজনের নিকট ক্রেতা-বিক্রেতারা জিম্মি হয়ে পড়ছেন। এই বিষয়ে হাটে আগতরা উপজেলা প্রশাসনকে একাধিকবার অবহিত করলেও তিনি রহস্যজনক কারণে কোনো প্রকার আইনী ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। অথচ পুরো হাটে পুলিশ প্রশাসনের লোকজন রয়েছেন। কিন্তু তারা এই অনিয়ম দেখেও না দেখার ভান করছেন।

তবে হাট ইজারদার ওসমান আলী বলেন, আমার জানা মতে পশু হাটের আদায়কারীরা গরুর জন্য ২শ’ আর ছাগলের জন্য ৮০ টাকা নিচ্ছেন। এর বাহিরে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার কোনো নির্দেশ আমি দেইনি। যদি কেউ নিয়ে থাকেন তাহলে সে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সাথে অন্যায় করছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওলিউজ্জামান বলেন, পশুহাটে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়টি আমাকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে তদারকি করতে আজ মঙ্গলবার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে দ্বায়িত্ব দেয়া হয়েছে।


শর্টলিংকঃ