বিদ্যুৎ না পেলেও বকেয়া বিলের দায়ে কারাগারে দিনমজুর!


ইউএনভি ডেস্ক:

কুমিল্লায় পল্লী বিদ্যুৎ সংযোগ না পেলেও ১৭ মাসের বকেয়া বিলের দায়ে আবদুল মতিন মিয়া (৪৫) নামে এক দিনমজুরকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।আবদুল মতিন মুরাদনগর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের মোচাগড়া গ্রামের অহিদ মিয়ার ছেলে। মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তারের পর বুধবার দুপুরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন মুরাদনগর থানার ওসি এ কে এম মনজুর আলম।

এদিকে টাকার অভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে না পারার পরও বকেয়া বিলের মামলায় মতিনকে কারাগারে পাঠানোর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম উত্তেজনা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এলাকাবাসী নিরপরাধ আবদুল মতিন মিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়েছেন।

ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসীর অভিযোগ—মোচাগড়া গ্রামের দক্ষিণপাড়ার ২৫৬টি পরিবার বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য চার বছর আগে কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ বরাবর আবেদন করে। সে প্রেক্ষিতে বিদ্যুৎ অফিসের দালাল হিসেবে পরিচিত স্থানীয় আবুল কালাম আজাদ ও আবুল বাশার প্রত্যেক গ্রাহকের কাছ থেকে মিটারপ্রতি ১০-১৫ হাজার টাকা নেন।

ওই সময় মৃত অহিদ আলীর ছেলে আবদুল মতিন মিয়ার নামেও কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎ সংযোগের ফাইল অনুমোদন করে। কিন্তু আবদুল মতিন মিয়ার চার হাজার টাকা দিলেও বাকি টাকা দিতে না পারায় বিদ্যুৎ অফিসের দালাল ও কর্মকর্তারা মিলে মতিন মিয়ার ছবি পাল্টে একই এলাকার সফিকুল ইসলামের ছবি লাগিয়ে দেন।

পরবর্তীতে ২০১৫ সালের ২২ মার্চ মতিন মিয়ার নামীয় মিটারটি তার বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে সফিকুল ইসলামের ঘরে সংযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু সংযোগ পাওয়ার পর থেকে সফিকুল ইসলাম ১৭ মাস বিদ্যুৎ বিল দেননি।

পরবর্তীতে ১৭ মাসের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল বাবদ ৪ হাজার ৭ টাকা আদায়ের জন্য কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর চান্দিনা অফিসের এজিএম লক্ষণ চন্দ্র পাল বাদী হয়ে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় মঙ্গলবার রাতে মুরাদনগর এসআই কবির হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ আবদুল মতিন মিয়াকে আটক করে মুরাদনগর থানায় নিয়ে আসেন।

মুরাদনগর থানার ওসি একেএম মনজুর আলম জানান, ঢাকার একটি মামলায় আবদুল মতিন মিয়ার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় তাকে আটক করা হয়। বুধবার দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কুমিল্লার কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর আওতাধীন কোম্পানীগঞ্জ জোনাল অফিসের ডিজিএম হাবিবুর রহমান আবেদন ফাইলে ছবি পরিবর্তনের বিষয়টি স্বীকার করে জানান, আবদুল মতিন মিয়া নামের মিটারটি সফিকুল ইসলাম ব্যবহার করত, তা আমাদের জানা নেই। মামলা হওয়ার আগে মতিন মিয়াকে নোটিশ করা হয়েছে। তখন আমাদের সাথে যোগাযোগ করলে আজ এ ঘটনা ঘটত না।সুত্রঃযুগান্তর


শর্টলিংকঃ