বিষক্রিয়াতেই মৃত্যু হয়েছিল সাংবাদিক সেলিম ভাণ্ডারীর


আমানুল হক আমান, বাঘা (রাজশাহী) :
রাজশাহীর বাঘার সাংবাদিক এসএম সেলিম আহম্মেদ ভাণ্ডারীর ময়না তদন্তের রিপোর্টে গতকাল সোমবার বাঘা থানার পুলিশের কাছে পৌঁছেছে।  তদন্তের রিপোর্টে বিষক্রিয়ায় মৃত্যুর বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। 


পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দৈনিক যায়যায়দিন ও স্থানীয় দৈনিক আমাদের রাজশাহী পত্রিকার বাঘা উপজেলা প্রতিনিধি এসএম সেলিম আহম্মেদ ভাণ্ডারী ও উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের ইলেক্ট্রিশিয়ান রনি কুমারকে ৩০ জানুয়ারি রাতে মনিগ্রাম বাজারের নিজস্ব নিরাময় হোমিও হলের ডাক্তার মাসিদুল কারিম কৌশলে ডেকে কোমল পানীয় দ্রব্যের সাথে বিষাক্ত অ্যালকোহল জাতীয় দ্রব্য খাওয়ানো হয়।

তারা এ দ্রব্য খাওয়ার পর নিজ নিজ বাড়িতে চলে যান। তারপর থেকে তারা অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরিবারের লোকজন জানতে পেরে তাদের প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রথমে ৩১ জানুয়ারি সকালের দিকে উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের ইলেক্ট্রিশিয়ান রনি কুমারের মৃত্যু হয়।

পরে ওই দিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে সাংবাদিক সেলিমের মৃত্যু হয়। প্রথমে পরিবারের লোকজন বুঝতে না পেরে রনিকে ময়না তদন্ত ছাড়াই দাহ করা হয়। তবে এটি পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে সন্দেহে সেলিমের লাশ রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্ত করা হয়। সেই ময়না তদন্তের রিপোর্ট সোমবার (৮ জুলাই) পুলিশের হাতে এসে পৌঁছে। এ রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে,  সাংবাদিক সেলিমের বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে।

তবে ডেকে নিয়ে অ্যালকোহল খাইয়ে সেই সাংবাদিকের মৃত্যুতে সন্দেহ হোমিও ডাক্তার মাসিদুল কারিমকে ওই সময় আটক করা হয়েছিল। কিন্তু বাঘা থানার পুলিশ তাকে ৩ ফেব্রুয়ারি ৫৪ ধারায় মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে। বর্তমানে হোমিও ডাক্তার মাসিদুল কারিম জামিনে মুক্ত রয়েছেন।
অপর দিকে বাঘা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের পাহারাদার হাবিবুর রহমানকে ওই হোমিও ঔষধের দোকান থেকে বিষাক্ত অ্যালকোহল খাওয়ানোর পর গত বছরের ১৩ নভেম্বর মৃত্যু হয়েছে। এ ব্যাপারে ওই হোমিও ডাক্তার মাসিদুল কারিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।

সাংবাদিক সেলিম উপজেলার মনিগ্রামের মৃত সামসুল হক ভাণ্ডারীর ছেলে। এছাড়া রনি কুমার সরকার মনিগ্রামের আটঘরিয়া গ্রামের সূর্য কুমার সরকারের ছেলে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে সাংবাদিক সেলিমের স্ত্রী সোনিয়া আক্তার বলেন, মৃত্যুর আগে আমার স্বামী সব বলে যায়। ডাক্তার মাসিদুল কারিম আমার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে বিষাক্ত কিছু খাওয়ানোর পর মৃত্যু হয়েছে। তবে বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ মহসীন আলী বলেন, বিষক্রিয়ায় সাংবাদিক সেলিম আহম্মেদ ভাণ্ডারীর মৃত্যু হয়েছে। এ মর্মে আমাদের কাছে ময়না তদন্তের রিপোর্ট এসেছে।


শর্টলিংকঃ