বড়দিনে সান্তা নয় অ্যালেক্সাই সব দিচ্ছে তাদের


ইউএনভি ডেস্ক:

খ্রিষ্ট ধর্মালম্বী ছোট বাচ্চাদের জন্য বড়দিন মানেই বিশেষ কিছু। কারণ সারা বছর অপেক্ষার পর বড়দিনের আগের রাতে ঝোলা ভর্তি করে উপহার নিয়ে আসে সান্তা ক্লজ। কল্পনার সান্তাকে বাস্তব রূপ দিতে বাড়ির প্রবীন সদস্যরাই সান্তা সেজে ছোটদের সামনে হাজির হন। গিফট পাওয়ার উদ্দেশে বাচ্চারা তাকে ঘিরেই শুরু করে হইচই।

সান্তার বদলে অ্যামাজনের ডেলিভারিম্যান গিফট নিয়ে হাজির। ছবি : দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল
সান্তার বদলে অ্যামাজনের ডেলিভারিম্যান গিফট নিয়ে হাজির। ছবি : দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল

কিন্তু সে দিন এখন ফুরিয়ে আসছে। সান্তার উপহারের আশায় না থেকে ভার্চুয়াল ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট আলেক্সা দিয়েই নিজের পছন্দের খেলনা অর্ডার করছে বাচ্চারা।

বাবা মায়ের জন্য এটা মোটেও ভালো কোনো খবর নয়। কারণ সান্তার উপহার ফ্রিতে মেলে। অ্যালেক্সার মাধ্যমে অর্ডার করা পণ্য ফ্রিতে মেলে না। এছাড়াও, বাচ্চাদের অর্ডার করা পণ্য নিয়ে তাদের কম ঝামেলা পোহাতে হয় না।

এই যেমন জিবি ওয়েনস। কয়েক মাসে আগে ডাক্তার দেখানোর সময় হঠাৎ করে ফোনে নোটিফিকেশন আসে। ই-কমার্স সাইট অ্যামাজন থেকে পাঠানো নোটিফিকেশেনে জানানো হয়, অর্ডার অনুযায়ী ‘পো পেট্রল’ এর খেলনা তার বাসার ঠিকানায় পাঠানো হচ্ছে। একের পর এক অ্যামাজন থেকে নোটিফিকেশন আসায় তিনি বেশ অবাক হন।

পরে তিনি বুঝতে পারেন এসব তার ৪ বছর বয়সী ছেলের কাণ্ড। সকাল বেলা তিনি বের হওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিলেন। তখন তার আইপ্যাড ছিল ছেলের হাতে। কোনোভাবে সে অ্যামাজনের অ্যাপে ঢুকে মাইক্রোফোনের আইকনে টাচ করে নিজের পছন্দের টিভি শো পো পেট্রলের নাম বলে। এরপর এক ডজনেরও বেশি পো পেট্রলের খেলনা কিনতে বাই অপশনে ট্যাপ করে।

ঠিকভাবে অর্ডার করার পর তার বাড়ি অ্যামাজনের পাঠানো বক্সে ভরে যায়। নিজের অর্ডার করা খেলনা পেয়ে তার খুশি আর ধরে না। কিন্তু মা ওয়েন তার খুশিতে বাগড়া দেন। ছেলেকে শুধু বোর্ড গেইম রাখতে দিয়ে কয়েকটি খেলনা অন্যদের জন্মদিনের উপহার হিসেবে তুলে রাখেন। বাকি খেলনা ফেরত পাঠান। এতে তার ছেলের কান্নাকাটি থামানো মুশকিল হয়ে পড়ে।

এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে পরে তিনি আইপ্যাড থেকে অ্যামাজন অ্যাপটাই ডিলিট করে দেন।

একই ঘটনা ঘটে স্লেটার টেটের সঙ্গে। দুই বছর আগে তিনি মেয়ের হাতে ট্যাব তুলে দিয়েছিলেন। তবে গেইম বা বইয়ে সে আকৃষ্ট না হয়ে অ্যামাজন অ্যাপে ঢুকে পড়ে। সেখানে একটি খেলনা সার্চ দেওয়ার পর অনেকগুলো সাজেশন দেখতে পায়। একে একে সব পছন্দের খেলনা অর্ডার দেয়। এতে বিল আসে ৩০০ ডলারের বেশি। পরে তার স্বামী সবগুলো খেলনা ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু স্লেটার টেট মেয়ের মন ভাঙতে চাননি। সবগুলো খেলনা রেখে সারা বছর জুড়েই সেগুলো খেলতে দেনে তিনি। তাদের মেয়ের বয়স এখন ৭ বছর। সে জানায়, সবগুলো খেলনাই ফ্রিতে পাওয়া যাবে, এ ধারণা থেকেই সে যা খুশি তাই অর্ডার করেছিলো।

আরেকটি ঘটনা জো রস নামের এক ব্যক্তির। ট্রেনে চড়ে বাসায় ফেরার সময় তিনি মেইলে নোটিফিকেশন পান। সেখানে জানানো হয়, আমেরিকান গার্ল ডল তার বাসার পথে পাঠানো হচ্ছে। একে একে কয়েকটি নোটিফিকেশনে তিনি জানতে পারেন, আমেরিকান গার্ল ডল একটি নয়, বেশ কয়েকটি অর্ডার করা হয়েছে। পরে তিনি বুঝতে পারেন তার ৫ বছরের মেয়ে অ্যালেক্সা অন করে বার বার ‘আমেরিকান গার্ল ডল’ বলেছে। পরে অর্ডার আসার আগেই জো রস তা ক্যান্সেল করে দেন। অ্যামাজন অ্যাকাউন্টেও জুড়ে দেন পাসকোড।


শর্টলিংকঃ