মালিককে গুম করে বাড়ি দখলের অভিযোগ


নিজস্ব প্রতিবেদক:
মালিককে গুম করে  বাড়ি দখল করে ওয়ারিশদের উচ্ছেদ করা হয়েছে এম অভিযোগ করেছেন রাজশাহী নগরীর হুমায়রা খালিদ রিজু নামে এক নারী।  তিনি সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন, তার বাবা হুমায়ন খালিদকে ‘গুম’ করে রেখেছেন ভাগ্নে সাব্বির খান। এরপর তাকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগ পড়ে শোনান হুমায়রা খালিদ

বুধবার দুপুরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন প্রেসক্লাবে সংবাদ  তিনি বলেন, হুমায়ন খালিদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলী ছিলেন। তিনি ছিলেন নিঃসন্তান। এ কারণে তিনি তাকে ১৯৭২ সালের মে মাসে মাত্র দেড়মাস বয়সে পালিত কন্যা হিসেবে গ্রহণ করেন। এখন হুমায়ন খালিদের দেয়া বাড়ি থেকে তাকে উচ্ছেদ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে হুমায়রা খালিদ বলেন, আমার বাবা ৩০ থেকে ৩২ বছর আগেই পুরাতন নাটোর রোডের তার ‘হিলালী ভিলা’ নামের চারতলা বাড়িটি মৌখিকভাবে দান করার প্রস্তাব দেন। এরপর তিনি বাড়িটি আমাকে মৌখিকভাবে দান করেন এবং দখল হস্তান্তর করেন। হস্তান্তরের পর থেকে আমি বাবার আমলের ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে নিচ ও দ্বিতীয় তলার দোকানঘরের ভাড়া আদায় করতে থাকি। পরবর্তীতে ২০১১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আমার বাবা অছিয়ত দলিলের মাধ্যমে বাড়িটি আমার এবং আমার দুই সন্তানের নামে রেজিস্ট্রি করে দেন। ২০১৭ সাল পর্যন্ত আমি বাড়িটিতে বসবাস করি। কিন্তু এখন বাড়িটি দখল করেছেন বাবার ভাগ্নে সাব্বির।

তিনি বলেন, আমার বাবার বয়স আনুমানিক ৯০ বছর। বাবার পৈত্রিক বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলায়। বার্ধ্যক্যজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হবার কারণে ২০১৭ সালের দিকে বাবার বোনের ছেলে সাব্বির খান সিরাজগঞ্জ থেকে এসে ঢাকায় চিকিৎসার কথা বলে বাবাকে রাজশাহী থেকে নিয়ে যান। বয়স হবার কারণে আমার বাবার সাধারণ জ্ঞানবৃদ্ধি লোপ পেয়েছে। এ সুযোগে সাব্বির খান বাবাকে ভুল বুঝিয়ে আমার নামের অছিয়তনামা দলিল বাতিলের জন্য রাজশাহী সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করান। ২০১৭ সালের জুলাইয়ের পর থেকে আমার বাবার সাথে আমাকে যোগাযোগ করতে দেন না।

হুমায়রা বলেন, বাবা বর্তমানে তিনি কোথায় আছেন, সেটিও আমি জানি না। এমনকি তিনি মারা গেছেন কী না- সে সম্পর্কেও আমার কাছে কোন তথ্য নেই। মূলত কয়েক কোটি টাকা মূল্যের বাড়িটি আত্মসাত এবং মোটা অঙ্কের দোকানের ভাড়া আত্মসাত করার উদ্দেশ্যেই এমনটি করা হয়েছে। আমার ধারণা, তাকে কৌশলে ‘গুম’ করা হয়েছে। এর প্রতিকার পেতে আমিও রাজশাহীর যুগ্ম জেলা জজ ১ নম্বর আদালতে মামলা দায়ের করেছি। তিনি বলেন, বাবাকে রাজশাহী থেকে নিয়ে যাবার কয়েকমাস পর আমাকে বাড়ির তৃতীয় তলা থেকে উচ্ছেদ করেন সাব্বির খান।

এ বিষয়ে কথা বলতে বুধবার দুপুরে সাব্বিরের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। হিলালী ভবনের নিচতলায় শরিফুলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গেলে সেখানকার কর্মীরা জানান, তিনি দেশের বাইরে। তবে শরিফুলের ভাই কেয়ারুল দাবি করেছেন, ভবনটি তারা কিনে নিয়েছেন। এখন তারা কাউকেই ভাড়া দেন না। শরিফুল বলেন, অছিয়তনামা দলিল করে দিলেও জমি বিক্রি করা যায়। সেভাবেই ভবনের মালিক তাদের কাছে ভবনটি বিক্রি করেছেন।


শর্টলিংকঃ