রাজশাহীতে বীজ আলুর সঙ্কট চরমে


নিজস্ব প্রতিবেদক:

বাজারে আলুর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকে বীজ আলু খাবার আলু হিসেবে বিক্রি করে দিয়েছে। এতে রাজশাহীতে বীজ আলুর সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ফলে এবছর আলুচাষ ব্যাহত হবার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

আলুচাষি ও কৃষিবিদ্দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এবার দফায় দফায় বন্যায় ও জলাবদ্ধতায় সবজি আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে স্মরণকালের মধ্যে সর্বোচ্চ দামে আলু বিক্রি হয়। খাবার আলুর দাম ওঠে প্রতি কেজি ৫০ টাকায়। আলুর দাম বেশি পাওয়ায় অনেকে কোল্ড স্টোরেজে রাখা বীজ আলু খাবার আলু হিসেবে বিক্রি করে দেন।

এখন আলু লাগানোর মৌসুমে বীজ আলুর সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এতে অনেক চাষি বীজ আলু সংগ্রহে রাখলেও ক্ষুদ্র চাষিরা পড়েছেন বেকায়দায় । তারা হন্যে হয়ে ভাল মানের বীজ খুঁজছেন। বিশেষ করে ব্র্যাক বীজের প্রতিই চাষিদের আগ্রহ বেশি বলে জানা গেছে। কিন্তু সরবরাহ কম থাকায় ব্র্যাক বীজ আলু চাহিদামত দিতে পারছে না। তবে বিএডিসি সূত্র জানায়, তাদের কাছে পর্যাপ্ত বীজ আলু রয়েছে, সঙ্কট হবে না।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সামছুল হক বলেন, জেলায় এবার আলুচাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৫ হাজার হেক্টর। প্রতি হেক্টরে দেড় মেট্রিক টন হিসাবে বীজের চাহিদা রয়েছে প্রায় ৫৫ হাজার মেট্রিক টন। বড় চাষিরা বীজ সংগ্রহে রেখেছেন। ক্ষুদ্র চাষিদের বীজের চাহিদা রয়েছে। এবার ব্র্যাক বীজের সরবরাহ কম, তবে বিএডিসি’র পর্যাপ্ত বীজ রয়েছে। সঙ্কট হবে না। তাছাড়া পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় সারেরও কোন সঙ্কট হবে না।

এদিকে তানোর প্রতিনিধি জানান, তানোরে আলুবীজের সঙ্কট দেখা দেয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা। আলুবীজের সঙ্কটের কারণে এ বছর আলুচাষের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। আলুচাষিরা বলছেন, অন্য বছরে আলুর দাম কম হওয়ায় নামে বে-নামে বিভিন্ন কোম্পানি বীজ আলু সরবরাহ করলেও এ বছর দাম বেশি হওয়ায় কোম্পানিগুলো আলুবীজ সরবরাহ করেনি। সেই সাথে আলুর দাম বেশি পেয়ে তাদের বীজের জন্য সংরক্ষণে রাখা বীজ আলুও খাবার আলু হিসেবে বিক্রি করে দিয়েছেন। ফলে এবছর আলুবীজের সঙ্কট দেখা দিয়েছে।

তানোর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বীজ ডিলারের দোকানে দোকানে চাষিরা হন্যে হয়ে আলুবীজ খোঁজ করছেন। আর ডিলাররা ‘বীজ নাই’ বলে জানিয়ে দিচ্ছেন। তারপরও চাষিরা দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে থাকছেন দোকানের সামনে।

এ ব্যাপারে ব্র্যাকের আলুবীজের একমাত্র ডিলার শাহীন আলম বলেন, তানোরে ব্র্যাকের আলুবীজের চাহিদা দেয়া হয়েছে ৫ শ ৮০ মেট্রিক টন। কিন্তু বরাদ্দ পেয়েছি মাত্র ১ শ ২০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে মাত্র ৫০ মেট্রিক টন পেয়েছি। বাকি ৭০ মেট্রিক টন কবে পাব, তা জানি না। তিনি বলেন, আলুবীজের বরাদ্দ না বাড়ালে চাষিরা এবার আলুচাষ করতে পারবেন না।

উপজেলা কৃষি অফিসার শামিমুল ইসলাম বলেন, আলুবীজ রোপণে এখনও কয়েক সপ্তাহ বাকি রয়েছে। কিন্তু কৃষকরা সার কিনে স্টক করতে শুরু করেছেন। আলুচাষের জন্য বরাদ্দ সার আসলে কোন সঙ্কট হবে না। তিনি বলেন, আলুবীজও সময়মত কৃষকরা পেয়ে যাবেন।


শর্টলিংকঃ