মেয়রের নাম ভাঙিয়ে মন্দির ভাঙার চেষ্টা


নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের নাম ভাঙিয়ে একটি শতবর্ষী মন্দির ভাঙার চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে পুলিশ গিয়ে মন্দিরটি রক্ষা করেছে।

মন্দিরটির অবস্থান রাজশাহী মহানগরীর মালোপাড়া এলাকায়। ‘শ্রী শ্রী লক্ষ্মী নারায়ণ দেববিগ্রহ ঠাকুর মন্দির’ নামের এই মন্দিরটির প্রতিষ্ঠাতা মোহন লাল রায়। মন্দিরের সেবায়েত দাবি করা একটি পরিবার মন্দিরটি ভাঙার চেষ্টা করছে। তারা মোহন লাল রায়েরই উত্তরসূরি। তাদের দাবি, মন্দিরের জমিটি তাদের পারিবারিক দেবোত্তর সম্পত্তি। তবে মন্দির কমিটি বলছে, এটি দেবোত্তর সম্পত্তি। মোহন লাল রায় দেবতার উদ্দেশ্যে এই সম্পত্তি দান করেছিলেন।

অথচ এখন অশোক রায় বাচ্চু ও তার পরিবারের সদস্যরা মন্দিরটি ভাঙার চেষ্টা করছে। শনিবার তারা দুইজন শ্রমিক নিয়ে মন্দিরের একটি দেয়াল ভাঙা শুরু করেন। খবর পেয়ে ছুটে যান মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক পাপন চন্দ্র রায়। তিনি মন্দির ভাঙার কাজে বাধা দেন। কিন্তু যারা মন্দিরের দেয়াল ভাঙছিলেন তারা দাবি করেন, সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও রাসিকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সমর কুমার তাদের ভাঙার অনুমতি দিয়েছেন।

বাধ্য হয়ে পাপন চন্দ্র রায় অন্যান্য হিন্দু ধর্মীয় নেতাদের খবর দেন। ঘটনাস্থলে যান হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের বৃহত্তর রাজশাহীর ট্রাস্টি তপন কুমার সেন, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের রাজশাহী মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার ঘোষ এবং নগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারন চন্দ্র বর্মন। তারা ভাঙার কাজ বন্ধ করেন। তখন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিটি মেয়র কিংবা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মন্দির ভাঙার অনুমতি দেননি।

মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক পাপন চন্দ্র রায় বলেন, এটি শতবর্ষী একটি মন্দির। প্রাচীন পূরাকীর্তি। এটি ভাঙার কোন সুযোগ নেই। কিন্তু যারা নিজেদের মন্দিরের সেবায়েত দাবি করেন তারা ভাঙতে চাইছেন। মন্দির ভেঙে তারা জায়গাটিতে ভবন করার পরিকল্পনা করছেন।

জানতে চাইলে অশোক রায় বাচ্চুর স্ত্রী স্বরস্বতী রায় বলেন, মন্দিরটি যে অংশটি ভাঙার কথা বলা হচ্ছে সেটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। তেমন কিছুই ছিল না। এদিক-ওদিক প্রাচীরের মতো একটু ছিল। ইট খুলে খুলে পড়ছিল। বাচ্চারা ঝুঁকিতে পড়ছিল। যেসব ইট ঝুলছিল, সেগুলো লোক দিয়ে ফেলে দেয়ার চেষ্টা করি। আর এটি নিয়েই মন্দির কমিটির লোকজন হুলস্থুল কাণ্ড করে বসে।

তবে নগরীর বোয়ালিয়া থানার ওসি নিবারন চন্দ্র বর্মন বলেন, যারা মন্দিরের দেয়াল ভাঙছিলেন তারা প্রথমে দাবি করেন মেয়র এবং রাসিকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাদের ভাঙার অনুমতি দিয়েছেন। কিন্তু তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায় এটি মিথ্যা কথা। তাই ভাঙার কাজ বন্ধ করা হয়েছে। আপাতত এই মন্দিরের কোন অংশ ভাঙা বা পরিবর্তন করা হবে না এ রকম অঙ্গীকারও নেয়া হয়েছে।


শর্টলিংকঃ