রাবিতে ভর্তিচ্ছুদের সহযোগিতায় ব্যতিক্রম উদ্যোগ


রাবি প্রতিনিধি:

প্রাচ্যের ক্যামব্রিজ নামে খ্যাত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষা-দীক্ষা, জ্ঞান-বিজ্ঞান, গবেষণা, সংস্কৃতি চর্চা, খেলাধুলা, ছাত্র রাজনীতি চর্চার তীর্থ স্থান। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর শিক্ষার্থীদের উচ্চতর জ্ঞান অর্জনের অন্যতম পছন্দের তালিকায় এই বিশ্ববিদ্যালয়। তেমনি ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের সদরে গ্রহণ করে, তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সদা প্রস্তুত থাকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা। আবাসন সমস্যা, নিরাপত্তা ও পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় কর্মকান্ডে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় তারা। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের উন্নতমানের সেবা দিতে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরাও সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যায়।

প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ২০১৯-২০ প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) ভর্তি পরীক্ষায় ব্যতিক্রম কার্যক্রম গ্রহণ করেছে খুলনা জেলা সমিতির শিক্ষার্থীরা। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিবাবকদের থাকা, খাওয়া ও ভর্তি সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম ছিলো চোখে পরার মতো। রাজশাহীর রাইফেল ক্লাব নানকিং কনভেনশন হলে প্রায় ২৫০ জন ভর্তিচ্ছু ছাত্রী ও তাদের অভিবাবকদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়। খুলনা জেলা সমিতি থেকে সম্পন্ন ফ্রি এই সেবা প্রদান করা হয়। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো, বিভিন্ন মেসে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়।

এ বিষয়ে রাবিস্থ খুলনা জেলা সমিতির সভাপতি শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘খুলনা একটি ঐতিহ্যবাহী জেলা। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিচ্ছুরা পরীক্ষা দিতে আসলে এখানকার বিভিন্ন হোটেল ফ্রি থাকার ব্যবস্থা করা হয়। তেমনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছুদের জন্য প্রথমবারের মতো এমন আয়োজন। আমরা ভর্তিচ্ছুদের সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করার জন্য এমন উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে।’

সমিতির সাংগাঠনিক সম্পাদক এসএম বাপ্পী বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় খুলনা জেলার ছয়শত শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। এছাড়াও প্রতিবছর অনেক ভর্তিচ্ছু আসে পরীক্ষা দিতে। তাই শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ কমাতে আমরা এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। ভর্তিচ্ছুদের শুধু থাকা নয়, এর সাথে তাদের সকাল, দুপুর, রাতের খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। বিশেষ করে নানকিং চাইনিজ রেস্টুরেন্ট এর সিও এসানুল হুদা দুলু সার্বিক সহযোগিতায় এটি করা হয়ছে। আশা করছি প্রতিবছর এমন উদ্যোগ গ্রহণ করে ভর্তিচ্ছুদের পাশে থাকবো।’

বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ভর্তিচ্ছুরা বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষার্থীদের প্রতি সন্তুষ্টুর মনোভাব প্রকাশ করেছে। কেউ কেউ লিখেছেন, ‘রাজশাহীর প্রেমে পড়ে গেলাম, আবার কেউ লিখেছেন রাবির বড় ভাইদের প্রতি ভালবাসা রইলো। আল্লাহ চাইলে আরও কয়েকটা বছর তাদের সংস্পশে কেটে যাবে।’ ভর্তিচ্ছু জাহিদ কাওসার শান্ত বলেন, ‘রাজশাহীতে পরিচিত তেমন কেউ নেই। তারপরও বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ভাইয়েরা হলে থাকার ব্যবস্থা করা দিয়েছেন। এছাড়াও পরীক্ষার হলে শিক্ষকরা খুবই আন্তরিক ছিলেন। যার জন্য কোন প্রকার ভয়ভীতি ছাড়াই পরীক্ষা দিতে পেরেছি। এখন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেলে নিজেকে ধন্য মনে করবো।’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন এবং বিভিন্ন জেলা সমিতির ভর্তিচ্ছুদের জন্য এমন সহযোগিতায় পরীক্ষার্থীরা সন্তুষ্ট। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভর্তিচ্ছুদের থাকার জন্য বিভিন্ন হল এবং ছাত্রী জিমনেশিয়ামে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। এবং তাদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য আইন শৃঙ্খল বাহিনী তৎপর ছিলো। যার ফলে ২০১৯-২০ প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) ভর্তি পরীক্ষা কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই সম্পন্ন হয়েছে।

 


শর্টলিংকঃ