রূপপুর বালিশকাণ্ডের হোতা মাজিদ এবার রাবির ভবনে


ইউএনভি ডেস্ক:

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের বালিশকাণ্ডে বেশ আলোচিত ছিল তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তাদেরই একটি মাজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। বালিশকাণ্ডের পর রাজশাহীতে ঘাঁটি গেঁড়েছে এ প্রতিষ্ঠানটি। এরই মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রুয়েট, সিটি করপোরেশনসহ বেশ কয়েকটি বড় বড় প্রকল্পের নির্মাণ কাজ পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

তবে এবার এ প্রতিষ্ঠানের করা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণাধীন শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান হলের একটি অংশের ছাদ মঙ্গলবার ভেঙ্গে পড়ে। এতে অন্তত ৯ শ্রমিক আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনার পর দুই শ্রমিককে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

এ নিয়ে আবারো আলোচনায় উঠে এসেছে মাজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। রাবি প্রশাসন বলছেন, দোষ থাকলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চারটি ভবনে আসবাব ও ইলেকট্রনিক পণ্য সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো সাজিন এন্টারপ্রাইজ, মাজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন লিমিটেড ও জিকেপিবিএল-পায়েল-এইচএল কনসোর্টিয়াম। মাজিদ সন্স কনস্ট্রাকশনের সরবরাহ করা মালামাল ‘স্পেসিফিকেশন’ অনুযায়ী সরবরাহ করা হয়নি বলে তথ্য উঠে আসে।

এই মজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন রাজশাহীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ কাজ পেয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম রুয়েটের যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগের ১০ তলা ভবন নির্মাণ কাজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ তলা সায়েন্স বিল্ডিং ও ১০ তলাবিশিষ্ট শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান হল নির্মাণ কাজ।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫১০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান হল নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ৭০ কোটি ২০ লাখ টাকা। ২০১৭ সালে দশতলা এই ভবন নির্মাণ শুরু হয়ে শেষ হওয়ার মেয়াদ ছিল ২০২২ সালের জুন মাসে। তবে নির্ধারিত সময়ে শেষ না হওয়ায় পরে সময় বাড়ানো হয়।

রাজশাহী ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক ওহিদুল ইসলাম বলেন, নির্মাণ ত্রুটির কারণেই এই ছাদ ধসের ঘটনা ঘটেছে। কোনো কিছু যদি ত্রুটি নাই থাকে তবে সেটি তো আর এমনি এমনি ভেঙে পড়বে না।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, মাজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন লিমিটেড সিটি করপোরেশনেও কাজ পেয়েছে। তবে এ কাজটি নিম্নমানের বলে মনে হয়নি। যে কাজটি চলছিল সেটির সাটারিং দুর্বলতা ছিল।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, আমি এখন গোটা কাজটি নিয়ে সন্দিহান। আমি এক্সপার্টদের ডেকে আনব। যেটা করার করা হবে।

মাজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার তৌফিক আজিজের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি।

তবে আরেক ইঞ্জিনিয়ার আবু তালহা জানিয়েছেন, কী কারণে এমন দুর্ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ তদন্ত করবেন। তখন জানা যাবে সমস্যা কী হয়েছে।


শর্টলিংকঃ