শাশুড়িকে হত্যার কথা আদালতে স্বীকার সেই পুত্রবধূর


নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর তানোরে শাশুড়িকে হত্যা করে বাড়ির আঙিনায় পুঁতে রাখার কথা আদালতে স্বীকার করেছেন সেই পুত্রবধূ। বৃহস্পতিবার (৩০ মে) বিকেলে রাজশাহীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন সেই পুত্রবধূ। পরে আদালতের নির্দেশে তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

রাজশাহীর তানোর থানার পুলিশ পরিদর্শক ( ওসি তদন্ত) রাকিবুল ইসলাম বৃহস্পতিবার বিকেলে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এই ঘটনায় নিহতের ভাই আব্দুল হালিম ভুট্টু বাদী হয়ে আটক পুত্রবধূ সখিনা বেগমকে (২২) একমাত্র আসামি করে তানোর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে রাজশাহীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে হাজির করা হয়। পরে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন ঘাতক সখিনা বেগম।

এ সময় রাজশাহীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট উজ্জ্বল মাহমুদ আসামির জবানবন্দি গ্রহণ করেন এবং তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এর আগে বুধবার রাজশাহীর তানোরে শাশুড়িকে হত্যা করে বাড়ির আঙিনায় পুঁতে রাখেন পুত্রবধূ সখিনা বেগম। ঘটনা জানাজানি হলে প্রতিবেশীরা অভিযুক্ত পুত্রবধূকে আটকে রেখে থানায় খবর দেন। সন্ধ্যায় পুলিশ গিয়ে মাটি খুঁড়ে মরদেহ উদ্ধার করে।জেলার তানোর উপজেলার প্রকাশনগর আদর্শ গুচ্ছগ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতের নাম মোমেনা বেগম (৪৫)। তিনি ওই গ্রামের রমজান আলীর স্ত্রী। আটক পুত্রবধূর নাম সখিনা বেগম (২২)। তিনি মোমেনা বেগমের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমানের স্ত্রী।

রাজশাহীর তানোর থানার পুলিশ পরিদর্শক রাকিবুল ইসলাম বলেন, ওই বাড়িতে মোমেনা বেগম ও তার ছোট ছেলে মোস্তাফিজুর রহমানের স্ত্রী সখিনা থাকতেন। মোমেনা বেগমের ছোট ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান ধান কাটার কাজে খুলনায় অবস্থান করছেন। তিনি এখনও রাজশাহী এসে পৌঁছাইনি।

তিনি বলেন, আটক পুত্রবধূ সখিনা বেগম নিজেই শাশুড়িকে হত্যা করে মাটিতে পুঁতে রাখার কথা স্বীকার করে জানিয়েছেন, সকালে বাড়িতে ধান শুকানোর সময় মুরগি এসে ধান খায়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শাশুড়ি মোমেনা বেগম তাকে মারধর করেন। দুপুরে শাশুড়ি ঘুমিয়ে পড়লে ওই সময় বাঁশ দিয়ে শাশুড়ির মাথায় আঘাত করেন। এতেই মোমেনা বেগম মারা যান। এরপর বাড়ির আঙিনায় বড় চুলার নিচে গর্ত করে মোমেনাকে মাটি চাপা দেন পুত্রবধূ সখিনা বেগম।

সখিনা বেগমের বরাত দিয়ে তিনি আরো জানান, মাটি চাপা দেওয়ার পর পাশের বাড়িতে গিয়ে জা মমিনুলের স্ত্রী রীনাকে বিষয়টি জানান সখিনা। এরপর বিষয়টি মুহূর্তের মধ্যে প্রতিবেশীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যায় স্থানীয় পৌরসভার কাউন্সিলর আবুল বাশারসহ প্রতিবেশীরা গিয়ে মোমেনা বেগমের দুই পুত্রবধূ সখিনা ও রীনাকে আটক করে পুলিশে খবর। পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে এবং পুত্রবধূকে আটক করে।

গতকাল বুধবার রাতেই মরদেহ ময়নাতদেন্তর জন্য নিহতের মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।


শর্টলিংকঃ