৮ বছর ধরে বন্ধ রাজশাহী পশু হাসপাতাল এখন ময়লার ভাগাড়


মেহেদী হাসান:

রাজশাহী জেলা পশু হাসপাতালে দীর্ঘ ৮ বছর ধরে স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ থাকায় বর্তমানে তা ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। জ্বালানি কাঠ, গাছের ডালপালা, গাড়ির পরিত্যক্ত টায়ার, ভাঙ্গা যন্ত্রাংশের নিরাপদ স্থান হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে পশু হাসপাতাল। 

চিকিৎসা নিতে আসা ভুক্তভোগীরা থানার সাথে গা ঘেঁষেই অবস্থিত বোয়ালিয়া থানা পশু হাসপাতালে প্রতিনিয়ত ভিড় করছেন বলে অভিযোগ বোয়ালিয়া মেট্রো পশু হাসপাতলের।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভেটেরিনারি সার্জন, অফিসার ও ডায়াগনষ্টিক ল্যাবসহ সকল কক্ষেই তালা ঝুলছে। ভেঙ্গে গেছে জানালা দরজা। মরিচা ধরে দিন দিন নষ্ট হচ্ছে লোহার যন্ত্রপাতি। চুরি হয়ে গেছে অধিকাংশ লোহার কাঠামো। এছাড়া, কৃত্রিম প্রজনন শেড ব্যবহার না হওয়ায় আগাছায় পূর্ণ হয়ে উঠেছে।

অভিযোগ তুলে নগরীর বুধপাড়া এলাকার পোল্ট্রি খামারি সোহেল হোসেন বলেন, জেলা হসপাতালের কাজ বন্ধ থাকায় আমরা বিভিন্ন বিষয়ে সাহায্য সহযোগিতা পাচ্ছি না। খামার বিষয়ে পরামর্শ দেয়ার জন্য কেউ আসে না বা পরিদর্শনেও কেউ কোনদিন আসেনি। কোন রোগের কোন চিকিৎসা দিতে হয় জানি না। হাসপাতাল বন্ধ থাকায় বিভিন্ন কোম্পানির ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা করাতে হয়। এতে টাকাও খরচ হয় বেশি। সরাকারি হাসপাতাল চালু হলে আমাদের ভোগান্তি কম হবে।

একইভাবে কাপাশিয়া এলাকার মুরগি খামারি মাকসুদুল হক বলেন, আমি কমবেশি ১০ হাজার সোনালী মুরগি খামারে রাখি। জেলা ভেটেরিনারি হাসপাতাল বন্ধ থাকায় আমরা সুযোগ সুবিধা পাচ্ছি না। মুরগির রানীক্ষেত রোগের ভ্যাকসিন নিতে মোট্রো হাসপাতালেই যায়। যদি জেলা হাসপাাতাল চালু হয় তাহলে মুরগির স্বাস্থ্য, রক্ত পরিক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ পাওয়া যেত।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহা. হুমায়ুন কবীর বলেন, হাসপাতালটি চলতো একটি প্রকল্পের অধীনে। প্রায় ৭-৮ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ায় তারা এখন আর নেই। দু-জন বোয়ারিয়া পশু হাসপাতালে আছেন। আমরা পাণিস্পদ অধিদপ্তরে যোগাযোগ করেছি এবং সকলেই এ বিষয়ে জানেন।

তিনি আরো বেলেন, মন্ত্রী মহোদয়কেও এ বিষয়ে বলা হয়েছে। আমরা আশা করছি ভেটেরিনারি সার্জন, অফিসার নিয়োগের মাধ্যমে ৬ মাসের মধ্যে হাসপাতালটি চালু করা হবে।

পশু হাসপাতাল বন্ধ থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ সহকারী পরিচালক ডা. মো: রুহুল আমিন আল ফারুক বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। হাসপাতাল বন্ধ রয়েছে কি না জানি না। জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন।

বোয়ালিয়া মেট্রো পশু হাসপাতলের উপসহকারী প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হাসান কবীর জানান, জেলা হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় এখানে সব ঝামেলা পোহাতে হয়। জেলা হাসপাতাল বন্ধ হলেও জিয়াউল হক (এমএলএসএস) এবং এনিমেল এটেনডেন্ট আসাদুজ্জামান এখানে কাজ করেন। আমাদের জনবল সঙ্কট। একজন ডাক্তার, একজন পরিদর্শক দিয়ে কি আর হাসপাতাল চলে? জেলা হাসপাতালটি চালু হলে আমাদের সুবিধা হতো বেশি।


শর্টলিংকঃ