গোদাগাড়ীতে অবৈধভাবে পুকুর খনন : ৬ জনের কারাদণ্ড


শামসুজ্জোহা বাবু,গোদাগাড়ী:
গোদাগাড়ী উপজেলাধীন গোগ্রাম ইউনিয়নের বিড়ইল গ্রামে আবাদী জমি নষ্ট করে অবৈধ ভাবে পুকুর খননের সময় হঠাৎ পুলিশ সদস্যদের সাথে নিয়ে উপস্থিত হলেন নির্বাহী মাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)। সেখানে ৩ টি ট্রাক্টর দিয়ে সরকারী আদেশ অমান্য করে অবৈধ ভাবে পুকুর খনন করার অপরাধে ভ্রাম্যমান আদালতে ছয় জনকে ১মাস মেয়াদে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন নির্বাহী মাজিস্ট্রেট ।

rajshahi news

 

মঙ্গলবার (০৭ জানুয়ারী) উপজেলার গোগ্রাম ইউনিয়নের বিড়ইল গ্রামে মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মাইনুল ইসলাম ও মৃত আবু বাক্কারের ছেলে মতিউর রহমানের জমিতে কয়েক বিঘা ধানী জমিতে অবৈধ ভাবে পুকুর খনন করার সময় হাতেনাতে ধরে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ ইমরানুল হকভ্রাম্যমান আদালতে এসব সাজা প্রদান করেন। এবং ৩ টি (ট্রাক্টর ) হ্যারো মেশিন অকেজো করার জন্য প্রয়োজনীয় মালামাল জব্দ করা হয়।

সাজা প্রাপ্ত হলেন উপজেলার বিড়ইল গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩০), জামালউদ্দীনের ছেলে আশরাফুল ইসলাম ( ৪০), গাড়ী চালক জগপুর গ্রামের আবুল কালাম আজাদের ছেলে শহিদুল ইসলাম (৩৫),ইটাহারী গ্রামের নিয়াজউদ্দীনের ছেলে কবির (৩২), গোদাগাড়ী পৌর এলাকার মহিশালবাড়ী গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে পিয়ারুল(২০), রফিকুল ইসলামের ছেলে ফাহাদ(২০)।

পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে,সোমবার সন্ধ্যা থেকে গোগ্রাম ইউনিয়নের বিড়ইল মাঠে কয়েক বিঘা ধানী জমিতে অবৈধ ভাবে পুকুর খনন করছিলেন একটি চক্র। এমন সময় খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পুলিশ ফোর্স সঙ্গে নিয়ে ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে ৬ জনকে আটক করে জনসম্মুখে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ ইমরানুল হক ভ্রাম্যমাণ আদালত বালু মহল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর ৪ ধারা লঙ্ঘনের অপরাধে তাদের ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করে

এলাকার কৃষকগণ জানান, প্রায় কয়েক বছর থেকে তিন থেকে চার ফসলি জমির শ্রেণি বদল করে এক শ্রেণির মানুষ সাধারণ কৃষকদের ভুলভাল বুঝিয়ে মাছ চাষের জন্য পুকুর খনন করে আসছিলো। গত ৩ বছর থেকে পুকুর খনন মহামারি আকার ধারন করেছে। উপজেলা প্রশাসন থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করেও পুকুর খনন রোধ করা সম্ভব হয়নি। তারা উচ্চ আদালত থেকে পুকুর খননের অনুমতি না নিয়ে নেমে পড়ছিলো পুকুর খননে। কিন্তু অর্থের প্রভাব দেখিয়ে ওই চক্রটি রাতের আধারে উচ্চ আদালতের আর্দেশ অমান্য করে অবৈধ্যভাবে পুকুর খননের কাজ করছে।

এর মধ্যে গত বছর অবৈধ পুকুর খননের ফলে মাঠে জলাবদ্ধতার কারণে শত শত বিঘা ফসলী জমির অনাবাদী হয়েছে, এবং পুরো গ্রামটি পানি বন্ধী হয়ে পড়ে। এমনকি কাঙ্খিত ফসলও পাচ্ছেনা কৃষকেরা।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ ইমরানুল হক বলেন, সরকারী নির্দেশ ছাড়া অবৈধ ভাবে পুকুর খনন করে আবাদী জমি নষ্ট করার দায়ে তাদের কারাদন্ড দেওয়া হয়। এত অভিযান চালানোর পরেও বড় গাড়ীর পরিবর্তে ছোট গাড়ী দিয়ে কৌশল পরিবর্তন করে অবৈধ পুকুর খনন চলছে। পুকুর খননকারীরা যতই চালাক হোক না কেন আমাদের চোখ ফাকি দিতে পারবে না। এরপর আর কোন দিন কেও অবৈধ ভাবে পুকুর খনন করলে আরও কঠিন শাস্তি প্রদান করা হবে। এবং এই ধরনের অভিযান অব্যহত থাকবে।


শর্টলিংকঃ