আরো এক সপ্তাহ পেছাল সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়ন


ইউএনভি ডেস্ক:

সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ কার্যকরের জন্য এখনো প্রস্তুত হতে পারেনি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। এ অবস্থায় আইনটি কার্যকরের সময় আরো এক সপ্তাহ পেছানোর কথা জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

এ এক সপ্তাহ সময়ে আইনটি কার্যকরের প্রস্তুতি নেয়ার পাশাপাশি জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। বিআরটিএর কার্যালয়ে গতকাল সংস্থাটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় ওবায়দুল কাদের এ কথা জানান।

সভার শুরুতেই নতুন সড়ক আইন কার্যকরের প্রস্তুতিসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন বিআরটিএ চেয়ারম্যান কামরুল আহসান। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষকে আইনটি সম্পর্কে সচেতন করতে দেশব্যাপী সমন্বিতভাবে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এসব কার্যক্রমে খুবই ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। আইনটির বিধি তৈরির জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আব্দুল মালেকের নেতৃত্বে একটি কমিটি কাজ করছে। একইভাবে আইনটিকে ‘মোবাইল কোর্ট অ্যাক্ট ২০০৯’-এর তফসিলভুক্ত করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যেই এসব কাজ শেষ হলে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ কার্যকর করা শুরু হবে।

মতবিনিময় সভায় ওবায়দুল কাদের বলেন, আইনটি প্রয়োগের আগে আরো সময় দেয়া প্রয়োজন। তাই জনগণের সচেতনতা বাড়াতে আরো এক সপ্তাহ সময় বাড়ানো হলো। এরপর থেকে আইনটি কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হবে। আইনের বিধি প্রণয়নের কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

আইন প্রয়োগে এত বেশি সময় লাগার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, আইনটি এখন প্রায়োগিক পর্যায়ে চলে এসেছে। সব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে সংযুক্ত (অ্যালাইনড) করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তার প্রত্যাশা জানিয়েছেন। এখন আমরা প্রয়োগে যাওয়ার পর্যায়ে রয়েছি। আইনের বিধি প্রণয়নের কাজ শেষ পর্যায়ে।

আইনটি প্রয়োগ হলে সবাই সড়কে নিয়ম মেনে চলবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে। এ কথা সবার মেনে নিয়ে নিয়ম অনুযায়ী কাজ করতে হবে। যে কঠিন আইন করা হয়েছে, তা জনগণকে জানানোর জন্য ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

এ সময় বিআরটিএর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, যারা দীর্ঘদিন ধরে দুর্নীতি করে হাত পাকা করে ফেলেছেন, তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ শাস্তি আর নিতে চাই না। তাদের বাদ দেয়ার সময় চলে এসেছে। প্রয়োজনে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বাদ দিতেও রাজি আছি।

বিআরটিএর সার্কেল অফিসগুলোয় দালালদের দৌরাত্ম্য সম্পর্কে তিনি বলেন, ভেতরের (বিআরটিএ) কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ না করে দালালরা কোনো কাজ করতে পারে না। তাদের সঙ্গে ভেতরের কর্মকর্তাদের যে যোগাযোগ, সেটা ভেঙে দিতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে নানা অনিয়মের কারণে বিআরটিএর বদনাম হয়েছে। এ বদনাম দূর করতে হবে।

প্রসঙ্গত, দুই বাসের রেষারেষিতে বিমানবন্দর সড়কে শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় গত বছরের জুলাইয়ে রাজধানীজুড়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলন শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে একই বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর তড়িঘড়ি করে জাতীয় সংসদে পাস করা হয় সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮। ৮ অক্টোবর আইনটির গেজেট প্রকাশিত হয়। এর ১১ মাস পর গত ২৩ অক্টোবর সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি গেজেট প্রকাশিত হয়। এতে ১ নভেম্বর আইনটি কার্যকর করার কথা জানানো হয়।


শর্টলিংকঃ