নৌকা নিয়ে নির্বাচনে নামা ১৪ দলের শরিকদের ইঙ্গিত করে লিটন বললেন, ‘কুঁজোরও চিৎ হয়ে শোবার শখ হয়’


নিজস্ব প্রতিবেদক: 

আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর নেতাদের কটাক্ষ করে বক্তব্য রেখেছেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। দীর্ঘদিনের জোট শরিকদের ইঙ্গিত করে তাদের বিরুদ্ধে ‘চতুরতা’ ও ‘বাটপারি’র অভিযোগ তুলে বুধবার রাজশাহী সিটি করপোরেশনের এই মেয়র বলেছেন, ‘ভাই, নির্বাচন এলে অনেক মানুষের অনেক রকমের শখ হয়। কুঁজোও চিৎ হয়ে শুতে চায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এরকম ঘটনা ঘটতে দেখেছি বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায়। ১৫ বছর যাদের কোনো খবর পাইনি তারা এখন এসে নৌকা নিয়ে বলতে চায়, আমি তো তোমারই গো। আমাকে তোমরা ভুল বুঝো না। আমাকে আরেকটি বার সুযোগ দাও। এবার তোমার সবকিছু ভরিয়ে দেবো ঘর-সংসার।’

বুধবার বিকেলে রাজশাহী মহানগরীতে আওয়ামী লীগের বিজয় শোভাযাত্রাা শেষে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বক্তৃতায় লিটন ঝাঁঝালো কণ্ঠে বলেন, ১৫ বছরে যার কাছে ১৫ টাকার সুবিধা আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা পায় না, তাদের আর কি দেখার দরকার আছে?

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের এই মেয়র আরও বলেন, আমরা জানি নৌকা স্বাধীনতার প্রতীক। সেই দল ক্ষমতায় যাবে, ইনশাল্লাহ। আমরা এখন কী করবো সেটা ভেবে দেখতে হবে। ভেবে দেখার বিষয়টি আমি আপানাদের অনুরোধ করবো। এর বেশি কিছু বলবো না।

রাজশাহীতে একসময় আওয়ামী লীগকে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে তিনি তিলে তিলে দাঁড় করিয়েছেন বলে দাবি করে লিটন বলেন, ৫ বছরের ৪ বছর ১১ মাস ২৯ দিন কোনো খবর থাকবে না। আর ভোটের সময় এসে বলবেন, আমাকে তোমরা ভুল বুঝো না। এই চতুরতা, এই বাটপারি চলবে না ইনশাল্লাহ।

উল্লেখ্য, এবারের নির্বাচনে ১৪ দলীয় জোটের কেন্দ্রীয় বোঝাপড়ার অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকা নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৬ নেতা, যাদের মধ্যে একজন ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা রাজশাহী-২ থেকে নৌকার প্রার্থী হয়েছেন। এই আসনটি রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকা নিয়ে গঠিত, খায়রুজ্জামান লিটন যার মেয়র।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে এসময় তিনি আরও বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচনে নাক গলানোর কোন অধিকার নেই। তাদের হস্তক্ষেপ, স্যাংশন এর ভয় দেখানোতে আমরা বিরক্ত।

তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্টদূত পিটার হাস নানা জায়গায় গেছে, নানা বক্তৃতা দিয়েছে। তফসিল ঘোষণার পর তার আর কথা নাই। এখন হাসফাস অবস্থা। তিনি বিমান বিক্রি করতে ব্যস্ত। এটিই হচ্ছে শেখ হাসিনার রাজনীতির খেলা।

এসময় খায়রুজ্জামান লিটন বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।

বিকেলে নগরীর কুমারপাড়াস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদিক্ষনের পর শেষ হয় নগরীর জিরো পয়েণ্টে। সেখানে অনুষ্ঠিত হয় সমাবেশ। এতে অংশ নেন দলটির হাজার হাজার নেতাকর্মী। বিভিন্ন সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীরাও ঢোলবাদ্য বাজিয়ে মিছিল নিয়ে যোগ দেন এ শোভাযাত্রায়।

আরও পড়তে পারেন ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পক্ষে বিএনপির অবস্থান নিয়ে হার্পারকলিন্সের নতুন বইয়ে তথ্য


শর্টলিংকঃ