ভোটের মাঠে আমি কোনো থ্রেট পাইনি: মাহি


ইউএনভি ডেস্ক :

মাহিয়া মাহি বলেছেন, ভোটের মাঠে আমি কোনো থ্রেট পাইনি। আপনাদের (সাংবাদিকদের) জন্য থ্রেট দেবে না আশা করি। কর্মীরাও থ্রেট পায়নি, সেটাও আপনাদের জন্য; কিন্তু যে মাইক ভাড়া দিবে, সেই রিজার্ভ করা মাইক নিয়ে আর বের হলো না। তার ভয়, মাইকটা ভেঙে ফেলবে বা তাকে মাইর দেবে। এ রকম বিষয় হচ্ছে- এগুলো বলেছি সিইসিকে।

রাজশাহীতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মাহিয়া মাহি।

তিনি বলেন, আমি অন্যভাবে কৌশলে ওই এলাকায় প্রচারণা করব। কিছুই যদি না থাকে, তাহলে ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়ার মতো ব্যাপার। আপনারা সাংবাদিকরা আছেন। আপনাদের কলম, আপনাদের লেখনী- সেটাই হচ্ছে আমার একটা পাওয়ার। আমাকে ভোটের মাঠে কোনোরকম ডিস্টার্ব করলে সেটা যে আপনারা প্রতিহত করার চেষ্টা করবেন এবং ঢালাওভাবে প্রচার করবেন- এটার জন্য হয়তোবা ভয়ে আমাকে কেউ ডিস্টার্ব করবে না এবং আমার পেশিশক্তির দরকার হবে না।

মাহি বলেন, সিইসির সঙ্গে মতবিনিময় সভায় আমি বলেছি, আমার এলাকাটা তো মানুষ এমনিতেই ভয় পায়। কারণ সহজ-সরল মানুষকে কিছু বললেই তারা অনেক ভয় পেয়ে যান। আমি শুধু বলেছি, কোনোরকম সহিংসতা-আতঙ্ক যেন বিরাজ না করে। কেউ যদি গুজব রটায়, সেটা যাতে না হয় তার জন্য লক্ষ্য রাখতে বলেছি। আপনারা থাকবেন সেদিন, সারা বিশ্ব তো দেখবে কত পার্সেন্ট ভোট আসলে কাস্ট হলো। সেটার জন্য বলেছি।

মাহি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন নির্বাচন সুষ্ঠু হবে এবং সুষ্ঠু কিভাবে হবে এগুলো নিয়ে তিনি একটা ব্রিফিং দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, কোনোবারই এরকম আইন ছিল না যে, ভোটারদের ভয়ভীতি দেখালে সেটা দণ্ডনীয় অপরাধ। এরকম কিছু ছিল না। এবার আইনটা সংশোধিত হয়েছে। কেউ যদি ভোটার পরিচয়ে ফোন করে ভয় দেখানোর অভিযোগ করে, তবে সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশন নেওয়া হবে। আমাদের নিশ্চিত করেছেন, ভোট এবার সুষ্ঠু হবে।

নির্বাচন কমিশনের কথায় আস্থা পাচ্ছেন জানিয়ে এই চিত্রনায়িকা বলেন, আমি এক হাজার পার্সেন্ট মিল পাচ্ছি। কথার সঙ্গে মাঠ পর্যায়ে মিল আছে; কিন্তু আমি যেটা বলতে চাই, নির্বাচনের আগের দিনটা কোনো প্রার্থী যাতে এ রকম কোনো পরিবেশ সৃষ্টি করতে না পারে। সেটার জন্য অনুরোধ করেছি।

ট্রাকের প্রচারণা প্রসঙ্গে মাহি বলেন, আমার এখন প্রত্যেকটা ঘরে ঘরে যাওয়া দরকার। তাদের বলা উচিত, আপনারা নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে আসুন। নারীদের বলছি আপনারা প্লিজ শাড়ি-টাড়ি পরে সেজেগুজে চলে আসবেন। ওই দিন একটা উৎসবের দিন। ভোট তো একটা অধিকার, সেটা কিন্তু আনন্দেরও দিন। আপনারা ওই উৎসবে অংশগ্রহণ করবেন। আমি ছোট একটা ট্রাক নিয়ে ঘুরছি। অতো সুন্দর ট্রাক পাইনি। এখানে যেটা পেয়েছি, সেটা নিয়ে সবার কাছে যাচ্ছি। অনেক পিচ্চিরা আবার বলছে, এই ট্রাকটা আমাদের দিয়ে যান। সেটা আবার দিয়ে আসতে হচ্ছে। আমার প্রতিপক্ষ যারা আছে, ফেসবুকে দেখি- তারা ট্রাক নিয়ে আমাকে অনেক পচাচ্ছে যে, ট্রাকের চাকা পাংচার হয়ে যাবে তখন বুঝবে। তো এইরকম করে আসলে ভালোই লাগছে। ট্রাকটা যে আমার প্রতীক, তারাই মানুষকে আরও পৌঁছে দিচ্ছে।

নির্বাচিত হলে সব শ্রেণির মানুষকে সম্মান দিতে চান মাহি। সে কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমার এলাকার ভোটাররা খুবই সাধারণ। তারা আসলে চায়, গায়ে হাত দিয়ে কেউ কথা বলুক। সেটুকুর জন্য আসলে তারা পরিবর্তন চায়। এই ভালবাসাটুকু তারা চায়। তারা বিগত দিনে এই ভালবাসাটুকু পায়নি। যারা শিক্ষকেরা আছেন, এই শিক্ষকগোষ্ঠী আসলে চায় পরিবর্তন। তারা সম্মান চান। শিক্ষকদের আমরা ‘স্যার’ বলে ডাকব। আমরা যদি তাদের তুই-তুকারি করি, তাদের কান ধরে ওঠবস করাই তাহলে তো সমস্যা। আরেকটা হচ্ছে যে, নারীরা সম্মান চান। আসলে তানোর গোদাগাড়ীবাসী সম্মানের সঙ্গে থাকতে চান। তারা নিজের খাবে, নিজের পরবে, আত্মসম্মান নিয়ে বাঁচবে। কাউকে ভয় পাবে না তারা এবং তারা চায়, মাসে একবার হলেও তাদের জনপ্রতিনিধি তাদের কাছে আসুক। সমস্যাগুলো শুনুক।

অভিনয় না রাজনীতি- নির্বাচিত হলে কোনটা থাকবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে মাহি বললেন, অভিনয়টা আমার গ্রোথ। এ অভিনয়ের কারণে আপনারা আমার ইন্টারভিউ নিচ্ছেন। এখানে কিন্তু অনেক প্রার্থী ছিলেন, আপনারা সবার ইন্টারভিউ তেমনভাবে নেননি, আমার সঙ্গে কথা বলছেন। সেই পরিচিতির জায়গাটা আমাকে যে ইন্ডাস্ট্রি দিয়েছে তারা ছাড়া আমার কোনো অস্তিত্ব নেই। তাদের বাদ দিয়ে অন্যকিছু আমার দ্বারা সম্ভব নয়; কিন্তু অভিনয়টা অভিনয়ের জায়গায় থাকবে, আমি মানুষের সেবা করব। রাজনীতির মূলনীতি মানুষের সেবা করা। মানুষের সেবাটা করব, আর অভিনয়টা চালিয়ে যাব। আমি তো ইনকাম করব আমার অভিনয় থেকে। রাজনীতি থেকে যে ইনকাম হবে সেগুলো জনগণের মাঝে বিলিয়ে দেব।


শর্টলিংকঃ