নিজস্ব প্রতিবেদক:
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর এদেশীয় দোসর তৎকালীন সন্ত্রাসী ছাত্রসংগঠন হিসেবে পরিচিত এনএসএফ নেতা জাফর ইমামের নাম রাজশাহী আন্তর্জাতিক টেনিস কমপ্লেক্স থেকে অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধারা।
বুধবার (২৭ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে রাজশাহী মহানগর ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের নেতারা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন। মানববন্ধন শেষে মুক্তিযোদ্ধারা বিভাগীয় কমিশনার নূর-উর-রহমানের কাছে তাদের দাবি কথা জানিয়ে স্মারকলিপি দেন।
মানববন্ধনে মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে বক্তৃতা করেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল, যুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সফিকুল রহমান রাজা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক রুহুল আমিন প্রামানিক প্রমূখ।
বক্তারা বলেন, জাফর ইমাম বরাবরই খোলস বদল করে চলেছেন। ১৯৬৮ সালের দিকে তিনি রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে ক্রীড়া কর্মকর্তা পদে যোগ দেন। স্বাধীনতাযুদ্ধে বিতর্কিত ভূমিকার জন্য দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তার চাকরি চলে যায়। পরে কিছুদিন আত্মগোপনে থাকেন রাজাকার জাফর ইমাম।
‘১৯৭৩ সালের দিকে আবারও তিনি চাকরি ফিরে পান। ওই সময় কতিপয় ছাত্রলীগ নেতা অজ্ঞাত কারণে তাকে সমর্থন করে শিক্ষাবোর্ডে গার্ড দিয়ে অফিস করতে নিয়ে আসতেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে তাকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। অথচ তার নামে এখনও টেনিস কমপ্লেক্স রয়েছে’ বলেন মুক্তিযোদ্ধারা।
মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক রুহুল আমিন প্রামাণিক জানান, স্বাধীনতার অনেক আগেই রাজশাহী টেনিস কমপ্লেক্সটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ২০০৪ সালে মারা যান জাফর ইমাম। এরপর ২০০৫ সালে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তার নামে টেনিস কমপ্লেক্সটির নামকরণ হয়।
তিনি বলেন, জাফর ইমামের নাম সরিয়ে আমরা বারবার একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা বা বুদ্ধিজীবীর নামে টেনিস কমপ্লেক্সটি নামকরণের দাবি জানিয়েছি। তবে অজানা কারণে গত ১০ বছরে তা সম্ভব হয়নি।
জানতে চাইলে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার মো. নূর-উর-রহমান বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারা আমার কাছে এসেছিলেন। তারা তাঁদের দাবি-দাওয়া সম্বলিত স্মারকলিপি দিয়েছেন। আমি স্মারকলিপিটি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পাঠানোর ব্যবস্থা করবো।
তিনি বলেন, ইতিহাস জেনে আমিও টেনিস কমপ্লেক্সটির নাম পরিবর্তনের পক্ষে। তবে এটা সরকারি নিয়ম মেনেই করতে হবে। আশা করি দ্রুত প্রক্রিয়াগত জটিলতার সমাধান করে মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি পূরণ করবে সরকার।