চাঁদার জন্য থানায় নির্যাতনের অভিযোগ, ওসিসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা


ইউএনভি ডেস্ক:

নাটোরে চাঁদার দাবিতে থানায় আটকে রেখে মারধরের অভিযোগে বাগাতিপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), দুই এসআই ও অপর একজনের স্ত্রীসহ পুলিশের পাঁচজনের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার মামলা করেছেন নিজাম উদ্দিন (৩৪) নামের এক কাঠ ব্যবসায়ী।

বাগাতিপাড়া আমলি আদালতে বাদী নিজাম উদ্দিন এ মামলার আবেদন করেন। আদালতের বিচারক আবু সাঈদ শুভ মামলার আবেদনটি গ্রহণ করে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নাটোরের পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টেগেশন) পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।

বাগাতিপাড়া আমলি আদালত সূত্র জানায়, উপজেলার যোগীপাড়া গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিন মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে হাজির হয়ে একটি মামলা করেন।

মামলায় বাগাতিপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম, এসআই রবিউল ইসলাম ও শাকিল আহমেদ, এএসআই আবদুল করিমের স্ত্রী অঞ্জনা বেগম ও তার বাসার তত্ত্বাবধায়ক আবুল বাসারকে অভিযুক্ত করা হয়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, বাগাতিপাড়া মডেল থানার এএসআই আবদুল করিমের স্ত্রী অভিযুক্ত অঞ্জনা বেগম বাৎসরিক ভাড়ায় বাদী নিজাম উদ্দিনের কাছে দুটি পাওয়ার ট্রিলার ইজারা দেন; কিন্তু পাওয়ার ট্রিলারের বৈধ কাগজপত্র না থাকায় কাঠ পরিবহণের সময় তিনি বারবার হয়রানির শিকার হচ্ছিলেন।

এক বছর পর তিনি পাওয়ার ট্রিলারটি তাকে (অঞ্জনা) ফেরত দেন এবং ১৫ হাজার টাকা বাদে বাকি সব ভাড়া পরিশোধ করেন। কিন্তু গত ২২ ফেব্রুয়ারি অঞ্জনা বেগমের হয়ে বাগাতিপাড়া থানার ওসিসহ অন্যান্য কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিনকে থানায় ডেকে নিয়ে আটকে রাখেন।

একপর্যায়ে মারধর করে তাকে দিয়ে ৩টি নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হবে মর্মে সই করিয়ে নেন। এরপর টাকা দিতে না পারায় তারা ২৫ ও ২৭ মার্চ নিজাম উদ্দিনকে আবার আটক করে প্রাণনাশের হুমকি দেন।

তখন ব্যবসা করতে না দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়। হুমকির কারণে বর্তমানে ব্যবসা বন্ধ করে তিনি বেকার জীবনযাপন করছেন। আদালত অভিযোগটি গ্রহণ করে পিবিআই পুলিশ সুপারকে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন।

আগামী ১৮ মে মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। আদালতের বেঞ্চ সহকারী রাজু আহমেদ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বাদীর আইনজীবী মসলেম উদ্দিন জানান, তার মক্কেল নিজাম উদ্দিন আসামিদের জুলুমের শিকার হওয়ায় বাধ্য হয়ে মামলা করেছেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাগাতিপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, পাওয়ার ট্রিলারের ভাড়া পরিশোধ না করার ব্যাপারে আমার কাছে অভিযোগ দেওয়ার পর আমি আপস-মীমাংসার চেষ্টা করেছি মাত্র।

বাদীকে জুলুম করা বা তার কাছে ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হবে মর্মে সই নেওয়ার অভিযোগ অসত্য ভিত্তিহীন।


শর্টলিংকঃ