নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের প্রতিবাদে শাহবাগে বিক্ষোভ


ইউএনভি ডেস্ক:

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন ও সিলেটে এমসি কলেজে নববধূকে গণধর্ষণসহ সারাদেশে সংঘটিত ধর্ষণ-নিপীড়নের বিচার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়েছে সম্মিলিত ছাত্র-জনতা।


সোমবার বেলা ১১টায় ডাকসু ভিপি নুরুল হক নূরের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা শাহবাগ মোড়ে বিক্ষোভ করেন। পরে দুপুর ১২টার দিকে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এসে তারা সমাবেশ করেন।

অপরদিকে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের ব্যানারে একটি মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা। এ রিপোর্ট লেখার সময় দুপুর ২টা পর্যন্ত তারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন। একই দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ছাত্রদলের বিক্ষোভ সমাবেশ চলছে।

প্রসঙ্গত, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ঘরে ঢুকে এক গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করেছে একদল যুবক ও কিশোর। ছেলের বয়সী ওইসব কিশোর-যুবকের পায়ে ধরেও রেহাই পাননি ৩৭ বছর বয়সী ওই নারী।

ভয়ে ৩২ দিন আগের ঘটনাটি কাউকে জানাতেও পারেননি নির্যাতিতা কিংবা তার স্বজনরা। ২ সেপ্টেম্বর রাতের ঘটনার একটি ভিডিওচিত্র গতকাল রোববার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হলে তা জানাজানি হয়।

নির্যাতনের শিকার নারী বাদী হয়ে বেগমগঞ্জ থানায় গতকাল রাত পৌনে ১২টার দিকে পৃথক দুটি মামলা করেন। একটি মামলা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে। অন্যটি পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে।

মামলার এজাহারের নারী উল্লেখ করেন, তার স্বামীকে বেঁধে রেখে আসামিরা তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। তারা এ ঘটনার ভিডিওচিত্র ধারণা করেন। গত এক মাস ধরে তারা এই ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার কথা বলে তাকে অনৈতিক প্রস্তাব দেন। অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তারা এই ভিডিও ছেড়ে দেন।

আসামিরা হলেন- বাদল, মো. রহিম, আবুল কালাম, ইস্রাফিল হোসেন, সাজু, সামছুদ্দিন সুমন, আবদুর রব, আরিফ ও রহমত উল্যা। তাদের সবার বাড়ি বেগমগঞ্জে।

ওই মামলার প্রধান আসামিসহ দুইজনকে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব; নোয়াখালীর পুলিশ আরও দুইজনকে গ্রেফতার করেছে বলে জেলার পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন।

বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি হারুনুর রশীদ জানান, নির্যাতনের শিকার ওই নারী বাদী হয়ে রোববার রাতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেন। সেখানে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৭-৮ জনকে আসামি করা হয়।

এর আগে২৫ সেপ্টেম্বর এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হন এক নববধূ। রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্বামীর কাছ থেকে ওই গৃহবধূকে জোর করে তুলে নিয়ে ছাত্রাবাসে ধর্ষণ করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় কলেজের সামনে তার স্বামীকে বেঁধে রাখা হয়।

এ ঘটনায় ভিকটিমের স্বামী বাদী হয়ে শাহপরাণ থানায় মামলা করেন। মামলায় ছাত্রলীগের ছয় নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাত আরও তিনজনকে আসামি করা হয়। এ পর্যন্ত মামলার ছয়জন এজাহারভুক্ত আসামিসহ ৮ জন গ্রেফতার হয়েছেন।


শর্টলিংকঃ