পাবনায় দেখা মিলেছে রাসেল ভাইপারের


নিজস্ব প্রতিবেদক, পাবনা :

পাবনার পদ্মার চরে দেখা মিলেছে ভয়ংকর বিষধর সাপ ‘রাসেল ভাইপার’ বা চন্দ্রবোড়ার। আর এ খবরে আতংক দেখা দিয়েছে চর কোমরপুর এলাকার পশ্চিম অঞ্চলের একটি চরে। বিষধর এই সাপটির দেখা পেয়েছে নেচার অ্যান্ড ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন কমিউনিটির সহ সভাপতি সুপ্রতাপ চাকী।

সুপ্রতাপ চাকী জানান, মঙ্গলবার তিনি কয়েকজন বন্ধুকে সাথে নিয়ে পাবনা সদর উপজেলার চর কোমরপুর পশ্চিম এলাকার একটি চরে পাখির ছবি তুলতে যান। এসময় তিনি মাঝারি আকৃতির রাসেল ভাইপার সাপটিকে দেখতে পেয়ে ক্যামেরা বন্দী করেন।

সুপ্রতাপ চাকী আরো জানান, তিনি বন্ধুদের সাথে পাখির ছবি তুলছিলেন এসময় সাপটি চোখে পড়ে তার। সাপটি এতটাই দ্রুত গতির যে ক্যামেরা তাক করতেই সাপটি দ্রুতএকটি ঝোপের মধ্যে ঢুকে পড়ে। সাপটির শুধু লেজের অংশের ছবি নিতে পারেন। পড়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও বন্যপ্রাণী গবেষক মনিরুল এইচ খানের কাছে ছবিটি পাঠালে তিনি সাপটি রাসেল ভাইপার বলে নিশ্চিত করেন।

একাধিক বন্যপ্রাণী গবেষকের সাথে কথা বলে জানাযায়, ২০১৩ সালে রাজশাহীতে দেখা মেলে ‘রাসেল ভাইপার’ সাপের। গত কয়েক বছরে এই সাপের কামড়ে বরেন্দ্র অঞ্চলে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তবে পাবনায় এই প্রথম সাপটির দেখা মিলল। সাপুড়েরা সাপটি চিনতে পারেন না। তবে সাধারণত ঝোপ-ঝাড়, শুকনা গাছের গুঁড়ি, ডাব গাছের নিচে, গোয়াল ঘরে এ সাপ থাকতে বেশি পছন্দ করে।

রাসেল ভাইপার
রাসেল ভাইপার

যেহেতু পদ্মার চরে কৃষকরা চাষাবাদ করেন, তাদের সতর্ক করা প্রয়োজন। চরিত্রগতভাবে রাসেল ভাইপার বংশ বিস্তার করে খুব দ্রুত। অন্যান্য সাপ যেখানে ২০ থেকে ৪০টা ডিম দেয়, সেখানে একটি রাসেল ভাইপার ৮০টা পর্যন্ত বাচ্চা দেয়। ফলে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে রাসেল ভাইপার।

বন্যপ্রাণী গবেষকেরা আরো জানান, বরেন্দ্র অঞ্চলে এ সাপের আক্রমণ বেশি হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে, ওই এলাকার মাটি এবং রাসেল ভাইপারের গায়ের রং প্রায় এক। তাই অনেক সময় না দেখেই মানুষ কাছে চলে যায়। তাই এ সাপ দেখলে নিরাপদে সরে যাওয়াই উত্তম। পাবনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন জানান, এখন পর্যন্ত স্থানীয় কেউ সাপটির ব্যাপারে জানায়নি। তবে যেহেতু সাপটি মারাত্মক বিষধর এবং বিলুপ্ত প্রায়, তাই স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ওই এলাকার কৃষকদের সতর্ক করা হবে।

আরও পড়তে পারেন  ঝড়ের কবল থেকে সন্তানদের বাঁচিয়ে চলে গেলেন মা


শর্টলিংকঃ