পুঠিয়া-চারঘাট সীমান্তে সালিশকে কেন্দ্র করে দু’গ্রামের সংঘর্ষে নিহত ১ আহত ১৫


পুঠিয়া প্রতিনিধি:

রাজশাহীর পুঠিয়া ও চারঘাট উপজেলার সীমান্তের দু’গ্রামের লোকজনের মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলছিল। ওই বিরোধ নিরসনে সালিশ বৈঠককে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের সংঘর্ষে রেজাউল করিম (৩৫) নামের একজন ভ্যান চালকের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরো অন্তত ১৫ জন।

এ ঘটনার পর ওই এলাকা জুড়ে দু’গ্রামের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনা স্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আর সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত থাকায় তৎক্ষনিক তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
নিহত ভ্যান চালক রেজাউল করিম চারঘাট উপজেলার শলুয়া ইউনিয়নের গ্রাম শিবপুর এলাকার হালিম উদ্দীনের ছেলে। শনিবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেল তিনটার দিকে পুঠিয়া-চারঘাট সীমান্তের বটতলা বাজার নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে।

বানেশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান গাজি সুলতান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পুঠিয়ার দিঘলকান্দি ও চারঘাটের গ্রাম শিবপুরের লোকজনের মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলে আসছিল। মাঝে মধ্যে দু’গ্রামের লোকজনের মধ্যে মারামারি ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকে। এ সকল বিষয়টি নিরসন করতে আজ শনিবার জুম্মার নামাজের পর একটি সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

সালিশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুঠিয়া সার্কেল) আবুল কালাম সাহিদ, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (চারঘাট) মো. নুরে আলম, পুঠিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জিএম হীরা বাচ্চু, থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) খালিদ হোসেন, চারঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান ফকরুল ইসলাম, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলমসহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন থেকে চারঘাট উপজেলার গ্রাম শিবপুর এলাকার ছালাম-কালাম বাহিনীর সাথে পুঠিয়া-বানেশ্বর দিঘলকান্দি গ্রামের মধ্যে মতবিরোধ চলে আসছে। দু’উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা দিঘলকান্দি গ্রামের লোকজন শিবপুর গ্রামে গেলে তারা অহেতুক নানা অযুহাতে মারধর করে টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নিত। এরপর প্রতিবাদ করতে গিয়ে ছালাম-কালাম বাহিনীর হাতে দিঘলকান্দি গ্রামের লোকজন একাধিকবার নির্যাতনের শিকার হয়। বিষয়টি রাজনৈতিক নেতা ও থানা পুলিশকে অবহিত করেও এর কোনো সুরাহা হয়নি। অবশেষে দু’উপজেলার জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে আজ বিকেলে সালিশ বৈঠক বসেন। আর এই বৈঠককে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল ইসলাম বলেন, ঘটনা স্থলে আমাদের পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। আর যেহেতু সংঘর্ষের স্থান চারঘাটের মধ্যে তাই পুরো বিষয়টি তারা তদারকি করছেন। এই মুহুর্তে আমরা চারঘাট থানা পুলিশকে সহয়তায় কাজ করছি।

চারঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সালিশ চলা কালিন সময়ে ওই স্থান থেকে একটু দুরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সংঘর্ষে একজনের মৃত্যু হয়। এরপর সালিশ স্থগিত রাখা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় তৎক্ষনিক তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া উভয় পক্ষের সংঘর্ষ এড়াতে ঘটনা স্থলসহ আশেপাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। অপরদিকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। পাশাপাশি সর্বশেষ এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।


শর্টলিংকঃ