বিপিসি’র তেল নিয়ে তেলেসমাতি, বিপাকে সব এয়ারলাইন্স


ইউএনভি ডেস্ক:

আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম স্বাভাবিক। কিন্তু, বাংলাদেশ প্রেট্রলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) হঠাৎ করেই দেশে উড়োজাহাজের জ্বালানির দাম বাড়িয়েছে কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়া দাম বাড়ানোর কারণে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ভাড়া সমন্বয় করতে হিমশিম খাচ্ছে এয়ারলাইন্স সংস্থাগুলো। এতে করে রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান বাংলাদেশের পাশাপাশি অন্যান্য বেসরকারি এয়ারলাইন্সও লোকসানের শঙ্কা করছে।

 

জানা গেছে, জাতীয় পতাকাবাহী বাংলাদেশের বিমানের জ্বালানি সরবরাহ করে বিপিসি’র অঙ্গপ্রতিষ্ঠান পদ্মা ওয়েল কোম্পানি লিমিটেড। গত ৫ মার্চ প্রতিষ্ঠানটির ডেপুটি ম্যানেজার মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম স্বাক্ষরিত এক নোটিসে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কথা জানায়। এতে বলা হয়, উড়োজাহাজের (জেট এ-১) ফুয়েলের দাম আন্তর্জাতিক রুটে নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৮ ইউএস সেন্ট, যা আগে ছিল ৬২ সেন্ট। আর অভ্যন্তরীণ রুটে প্রতি লিটার জ্বালানির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৭২ টাকা, যা আগে ছিল ৬৭ টাকা।

বাংলাদেশে উড়োজাহাজের জ্বালানির দাম বাড়লেও প্রতিবেশী ভারতে জ্বালানি খরচ ৩০ শতাংশ কম বলে বিমান সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। একইভাবে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক রুটে ৬৮ ইউএস সেন্ট জ্বালানির দাম নির্ধারণ করে দেয়া হলেও কলকাতায় তার দর ৫৩ ইউএস সেন্ট। এ ছাড়া মালেয়েশিয়া বা মধ্যপ্রচ্যোর দেশগুলোর সঙ্গে জ্বালানির দামে ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে বলেও জানা গেছে।

বাংলাদেশের এভিয়েশন সংশ্লিষ্টদের মতে, বরাবরই আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় বাংলাদেশে উড়োজাহাজের জ্বালানির দাম বেশি থাকে। এজন্য এদেশ থেকে আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনার ব্যয় অনেক বেশি।সূত্র জানায়, বাংলাদেশের আকাশ পথের ৭৫ শতাংশ এখনো নিয়ন্ত্রণ করে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো। সেখানে দেশে তেলের দাম বাড়লে, এয়ারলাইন্সগুলোও টিকেটের দাম বাড়াতে বাধ্য হবে। কিন্তু, দাম বাড়লেই গ্রাহকরা বিদেশি এয়ারলাইন্সের দিকে ঝুঁকবে। এতে করে দেশীয় এয়ালাইন্সগুলো গ্রাহক হারাবে।

এ বিষয়ে বেসরকারি ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (মার্কেটিং ও জনসংযোগ) কামরুল ইসলাম পরিবর্তন ডকটমকে বলেন, ‘একটি ফ্লাইট অপারেশনে ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ জ্বালানি তেল ব্যয় হয়। এখন আমাদের খরচের পরিমাণ বেড়ে যাবে। বাধ্য হয়ে টিকিটের দাম বাড়াতে হবে। এটা হলে যাত্রী পেতে বেগ পেতে হবে। কারণ, বাইরের এয়ারলাইন্সগুলো আগের দামেই টিকিট বিক্রি করবে।’

তিনি বলেন, ‘প্রতিবেশী ভারত ছাড়াও মালেয়েশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর চেয়ে আমরা জ্বালানির বেশি দাম দিয়ে আসছি। নতুন করে ফের দাম বাড়ানোয় সত্যিই বিপাকে পড়তে হবে।’এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষের দাবি, জ্বালানি তেলের দাম ১ ইউএস সেন্ট বৃদ্ধি পেলেই বছরে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৬ কোটি টাকা। সেখানে ৫ থেকে ৬ সেন্ট বাড়ানোয় কি অবস্থা হবে, আল্লাহই ভাল জানেন।

এ বিষয়ে বিমান বাংলাদেশের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় তুলনামূলক উচ্চমূল্য দিয়েই এখানে আমরা ফুয়েল সংগ্রহ করি। ফলে এয়ারলাইন্সগুলো ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। নতুন করে দাম বাড়ানোয় এয়ারলাইন্সের সার্বিক অপরেশনাল প্রফিটের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’


শর্টলিংকঃ