বড়ভাইয়ের বদলে ছোটভাইয়ের কারাভোগ : ওসিকে আদালতের শোকজ


বিশেষ প্রতিবেদক :

বড়ভাইয়ের বদলে প্রায় দেড় মাস পর কারাভোগের পর অবশেষে মুক্তি পাচ্ছে ডাব বিক্রেতা সজল মিয়া। বুধবার বিকেলে রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মো. মনসুর আলম সজলকে মুক্তির আদেশ দেন। তবে সজলকে ফজল দেখিয়ে কেন গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হলো- তা সাতদিনের মধ্যে জানাতে শাহ মখদুম থানার ওসিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আদালতে মুক্তির আদেশ পেয়ে খুশি সজল মিয়া

রায়ের পর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোজাফফর হোসেন সাংবাদিকদের বলেন,  শোকজের জবাব সন্তোষজনক না হলে ওসির বিরুদ্ধে মামলা হবে। আর সজল মিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহন কুমার সাহা বলছেন,  বিনা অপরাধে প্রায় দেড় মাস জেল খাটানোর জন্য ক্ষতিপূরণ আদায়ে মানবাধিকার সংগঠনের মাধ্যমে  আদালতে আবেদন করা হবে।

এর আগে শিশুপাচারের অভিযোগে রাজশাহী নগরীর শাহ মখদুম এলাকার সেলিম ওরফে ফজলের বিরুদ্ধে মামলা হয় ২০০১ সালের ২০ মে। এর ৫দিন পরই গ্রেফতার হয় ফজল। তবে বেশ কিছুদিন জেলহাজতে থাকার পর জামিনে বেরিয়েই লাপাত্তা সে। ফলে তার অনুপস্থিতিতেই চলে বিচারকাজ। ২০০৯সালের ২৮ আগস্ট ওই মামলার রায়ে ফজলের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।

মুক্তির আদেশের পর আদালত থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে সজল মিয়া

এই রায়ের প্রায় ১০বছর পর গত ৩০এপ্রিল ফজল দেখিয়ে ছোটভাই সজলকে গ্রেফতার  করে পুলিশ। তবে  জেল থেকে মুক্তি পেতে গত ২৬মে কারাগার থেকেই আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে আবেদন করে সজল।আবেদন আমলে নিয়ে উপযুক্ত প্রমাণ দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত।এরপর  আজ শুনানি শেষে আদালত রায় দেন ।

রায়ে আদালত বলেন,  সজল মিয়ার জাতীয় পরিচয়পত্রে তার জন্মতারিখ ২৭ মে ১৯৮৪ ও পিতার নাম তোফাজ উদ্দিন রয়েছে। আর ২০০১ সালে দায়ের করা মামলার এজাহারে সেলিম ওরফে ফজল মিয়ার বয়স লেখা রয়েছে ২৭ বছর। ২০০১ সালে ফজলের বয়স ২৭ হলে বর্তমানে তার বয়স ৪৫ বছর।  কিন্তু জন্মতারিখ অনুযায়ী সজলের বর্তমান বয়স ৩৫বছর।

এছাড়া আদালত আরো উল্লেখ করেছেন,  রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ফজলের শারীরিক বর্ণনার সঙ্গে সজলের শারীরিক বর্ণনার মিল নেই। সজলের ভাই ও বোনদের দেয়া এভিডেভিটের তথ্য মতেও  আটক সজল ও দণ্ডপ্রাপ্ত ফজল তাদের সহোদর। কিন্তু একইব্যক্তি নয়। তবে দণ্ডপ্রাপ্ত ফজল দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ বলেও তারা আদালতে জানিয়েছেন।

আদালত সার্বিক তথ্যউপাত্ত পর্যালোচনা শেষে সজল মিয়া এই মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দিয়ে দ্রুত মুক্তি দেয়া আদেশ দেন।


শর্টলিংকঃ