শান্তিপূর্ণ ভোটে স্বস্তি সিইসির


ইউএনভি ডেস্ক:

বড় ধরনের সংঘাত-সংঘর্ষ ছাড়াই শান্তিপূর্ণ ভোট হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।ধান কাটার এই মওসুমে বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও ভোটের হার ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের মধ্যে হতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি।

বুধবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ শেষে সিইসি বলেছেন, “নানা কারণে কম ভোটার হয়েছে কেন্দ্রে; তবে ভোটার উপস্থিতি আরও বাড়লে ভালো হত।”

এদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত দেশের ১৩৯ উপজেলায় ভোটগ্রহণ চলে। অনিয়ম ও গোলযোগের কারণে দুটি কেন্দ্রে ভোট বন্ধ করা হয়। অনিয়মের চেষ্টার অভিযোগে আটক করা হয় ৩৭ জনকে।

ভোট শেষে নির্বাচন ভবনে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সিইসি বলেন, “নির্বাচন ভালোভাবে হয়েছে। অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। বিক্ষিপ্ত কিছু কিছু ঘটনা ঘটেছে। যেখানে কিছু সংঘর্ষ, আহতের ঘটনা ঘটেছে; কয়েকটি কেন্দ্রে সীমিত পর্যায়ে অনিয়ম হয়েছে। যার কারণে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে পদক্ষেপ নিয়েছি। দুটি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত/বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।”

তিনি বলেন, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দায়িত্ব পালনে ‘যথেষ্ট সতর্ক’ ছিল, ‘তৎপর’ ছিল।“তাদের পেশাদারিত্বের কারণে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো ছিল। মোটামুটিভাবে নির্বাচনটা শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে, বিক্ষিপ্ত দুয়েকটি ঘটনা ছাড়া। বলা যাবে না- কোথাও কোনো ঘটনা ঘটেনি।”

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, “খুবই বিক্ষিপ্ত, সীমিত পর্যায়ের ঘটনা ঘটেছে। কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেলের তথ্য অনুযায়ী ৩৪টি ঘটনায় ৩৭ জনকে আটক করা হয়েছে, ভোটকেন্দ্রের বাইরে সংঘর্ষের এসব ঘটনা ঘটেছে, ভেতরে ঘটেনি। প্রার্থীদের সমর্থকদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় ২৫ জন আহত রয়েছে।”

এদিন ভোটের সময় খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ি, বগুড়া, চাঁপাইনবাবগঞেজর ভোলা হাট, গাইবান্ধার ফুলছড়ি, মাদারীপুর, সিরাজগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জসহ কিছু এলাকায় হুমকি, অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলার তথ্য সংবাদমাধ্যমে এসেছে।

সকাল বেলা অধিকাংশ এলাকায় ভোটার উপস্থিতি কম দেখা গেছে। কিছু এলাকায় বাগড়া দিয়েছে বৃষ্টি। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতিও বেড়েছে।

সিইসি বলেন, “গড়ে ৩০-৪০% এর মাঝামাঝি ভোটের হার থাকতে পারে। এর একটি কারণ হতে পারে বর্ষণ। সকাল থেকে বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টি ছিল। আবার ধান কাটার মৌসুম ছিল। আমরা জানার চেষ্টা করেছি। আমাদের বলা হয়েছে, অনেকেই ধান কাটতে থাকায় ওরা ভোট দিতে আসেনি।এছাড়া কিছু কিছু জায়গায় ঝড় বৃষ্টি হয়েছে।”

সবশেষ ২০১৯ সালের পঞ্চম উপজেলা ভোটে গড়ে ৪১% এর বেশি ভোট পড়ে। ২০১৪ সালে চতুর্থ উপজেলা ভোটে ৬১% এবং তৃতীয় উপজেলা ভোটে ২০০৯ সালে ৬৭.৬৯% ভোট পড়ে।ভোটের হার আগের তুলনায় কম হওয়ার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি সিইসি।

তিনি বলেন, “ভোটার বেশি এলে এটা উৎসাহব্যঞ্জক, আরও (ভোটার উপস্থিতি) বেশি হলে আরও ভালো হত। বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। কিন্তু আমরা গণনা করি কে বেশি ভোট পেয়েছেন তাকে জয়ী ঘোষণা করা হবে।”

ভোটের হার নিয়ে মাথা ঘামাতে চান না জানিয়ে হাবিবুল আউয়াল বলেন, “বিশ্লেষণ, মতামত আমার বিষয় নয়। আমার বিষয় হচ্ছে ভোট হয়েছে কিনা, ভোটাররা আসছে কিনা, ভোট দিতে পেরেছেন কিনা, কোথায় কী অনিয়ম হল, তারপর গণনা। গণনার পরে সংঘর্ষ-সংঘাত হয় কিনা বলতে পারব না। আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করেছি।”


শর্টলিংকঃ