শি জিনপিংয় ও মোদির আর্থিক প্রতিশ্রুতিগুলো কি হারিয়ে যাবে?


ইউএনভি  ডেস্ক:

২০১৬ সালের অক্টোবরে ঢাকা সফরে আসেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এর মধ্য দিয়ে দুই দেশের সহযোগিতামূলক সম্পর্ক কৌশলগত সম্পর্কে উন্নীত হয়। শির এ সফরকালে ২৭টি প্রকল্পে ২ হাজার ৪০০ কোটি ডলার ঋণ প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল চীন। এ নিয়ে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সইও হয়েছিল দুই দেশের মধ্যে। ২০২০ সালের মধ্যেই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত ছয়টি প্রকল্পে ঋণচুক্তি হয়েছে।

শি জিনপিংয়ের ঢাকা সফরের আগের বছর, অর্থাৎ ২০১৫ সালের জুনে বাংলাদেশে আসেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ সময় দুই দেশের মধ্যে দ্বিতীয় ঋণচুক্তির আওতায় ১৬টি প্রকল্পে ২০০ কোটি ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় ভারত। যদিও সেখান থেকে এ পর্যন্ত ৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রকল্প শেষ হয়েছে দুটি, চলমান আছে ১৪টি।

প্রভাবশালী দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের শীর্ষ নেতাদের দুটো সফরকেই অনেক গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছিল বাংলাদেশ। বিশেষ করে উন্নয়ন-সহযোগী হিসেবে সফরগুলো দেশ দুটির সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে যায় অন্য মাত্রায়। যদিও ঘোষিত ঋণসহায়তার খুব সামান্যই প্রাপ্তি ঘটেছে বাংলাদেশের। মোদি ও শি জিনপিংয়ের দেয়া আর্থিক প্রতিশ্রুতিগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে নানা মহলে।

চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের সহযোগিতামূলক সম্পর্ক কৌশলগত সম্পর্কে উন্নীত হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ২০১৭ সালকে বন্ধুত্বের বছর হিসেবেও ঘোষণা করেছিলেন চীনের প্রেসিডেন্ট। এ সময় ২৭টি প্রকল্পে ২ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের চীনা ঋণ নিয়ে এমওইউ স্বাক্ষরের ঘটনাও ছিল দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নতুন মাইলফলক। যদিও চলতি বছরের মে পর্যন্ত এ ২৭টি সমঝোতার মাত্র ছয়টি ঋণচুক্তি বাস্তবায়ন হয়েছে। বাকি ২১টি প্রকল্পে মতৈক্যে পৌঁছতে পারেনি চীন-বাংলাদেশ। তবে এর মধ্যেই বাংলাদেশ আরো নয়টি প্রকল্পে ৬৪১ কোটি ৪৮ লাখ ডলার চেয়েছে চীনের কাছ থেকে।

চীনের সঙ্গে ঋণচুক্তি সই হওয়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে ৫০ কোটি ডলারের ‘ইন্সটলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং উইথ ডাবল পাইপলাইন’ প্রকল্প, ২০ কোটি ডলারের ‘মডার্নাইজেশন অব টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক ফর ডিজিটাল কানেক্টিভিটি’ প্রকল্প, ১৬৫ কোটি ৮৫ লাখ ডলারের ‘পদ্মা ব্রিজ রেল লিংক (ফেজ-১)’ প্রকল্প এবং ৯১ কোটি ৭১ লাখ ডলারের ‘পদ্মা ব্রিজ রেল লিংক (ফেজ-২)’ প্রকল্প। এছাড়া ‘ডেভেলপমেন্ট অব ন্যাশনাল আইসিটি ইনফ্রা-নেটওয়ার্ক ফর বাংলাদেশ গভর্নমেন্ট ফেজ-৩’ এবং ‘কনস্ট্রাকশন অব টানেল আন্ডার দ্য রিভার কর্ণফুলী’ প্রকল্পের চুক্তি সই হয়েছে। প্রকল্প দুটির সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে যথাক্রমে ১৫ কোটি ডলার ও ৭০ কোটি ৫৮ লাখ ডলার। চীনের দেয়া ঋণ থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১০০ কোটি ডলারের মতো ছাড় করা হয়েছে বলে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে জানা গেছে।

বাংলাদেশ-চীনের সই হওয়া সমঝোতাগুলো নিয়ে খুব একটা সন্তুষ্ট নন অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, চীনের ঋণে ২ শতাংশ সুদহার ছাড়াও দশমিক ২০ শতাংশ কমিটমেন্ট চার্জ ও দশমিক ২০ শতাংশ ম্যানেজমেন্ট চার্জ দিতে হবে। ঋণ ছাড় করতে যত দেরি হবে কমিটমেন্ট ও ম্যানেজমেন্ট চার্জ তত বাড়তে থাকবে। আর পাঁচ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ ২০ বছরে পরিশোধ করতে হবে পুরো ঋণ। আর ঋণে নতুন শর্ত হিসেবে ১৫ শতাংশ সরকারকে দিতে হবে। এছাড়া ঋণের কিছু অংশ হবে বাণিজ্যিক ভিত্তিক। এ ঋণের সুদের হার হবে ৪ শতাংশ ও পরিশোধ করতে হবে ১৫ বছরে। সেই সঙ্গে সমঝোতার সময়ে যে সুদহার ছিল তা বৃদ্ধি করা হয়েছে।

তবে চীনা ঋণের প্রশংসা করছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা। তারা বলেন, চীনের ঋণের অগ্রগতি খুবই ভালো। চীনা প্রেসিডেন্টের সফরের পরের দুই বছর ঋণের অগ্রগতি বেশ গতি পেয়েছে। তবে কত অর্থ এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে এসেছে তার কোনো তথ্য দিতে পারেননি তারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বণিক বার্তাকে বলেন, বিষয়টি অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি)। এজন্য ইআরডির সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন তিনি। যোগাযোগ করা হলে চীনের সঙ্গে স্বাক্ষরিত এমওইউর ২৭টি প্রকল্প ২০২০ সালের মধ্যে ঋণচুক্তিতে বাস্তবায়নের মেয়াদ থাকলেও তা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন ইআরডির এক কর্মকর্তা।

চীনের পাশাপাশি বাংলাদেশের আরেক গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন-সহযোগী প্রতিবেশী দেশ ভারত। ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, ভারত এখন পর্যন্ত লাইন অব ক্রেডিট ১, ২ ও ৩-এর আওতায় ৮০০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি করেছে বাংলাদেশের সঙ্গে। ২০১০ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার প্রথম ঋণচুক্তি হয়েছিল ১০০ কোটি ডলারের, যদিও পরবর্তী সময়ে ঋণের পরিমাণ ৮৬ কোটি ২০ লাখ ডলারে নেমে আসে। বাকিটা পদ্মা সেতু প্রকল্পে অনুদান দিচ্ছে ভারত। প্রথম ঋণচুক্তির আওতায় ২০২০ সালের ২৭ আগস্ট পর্যন্ত ৬০ কোটি ৭ লাখ ডলার ছাড় হয়েছে ভারত থেকে। এর আওতায় ১৫টি প্রকল্পের মধ্যে ১২টি সম্পন্ন হয়েছে। চলমান রয়েছে তিনটি প্রকল্প।

২০১৫ সালে জুনে বাংলাদেশ সফরে আসেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই সময়ে দুই দেশের নতুন প্রজন্মকে লক্ষ্য করে সম্পর্ক উন্নয়নের ‘নয়া প্রজন্ম নয়া দিশা’ শীর্ষক যৌথ ঘোষণা গৃহীত হয়। আর দুই দেশের মধ্যে দ্বিতীয় ঋণচুক্তির আওতায় ১৬টি প্রকল্পে ২০০ কোটি ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় ভারত। যদিও সেখান থেকে মাত্র ৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার ছাড় হয়েছে এখন পর্যন্ত। এ ঋণচুক্তির দুটি প্রকল্প শেষ হয়েছে। ১৪টি প্রকল্প চলমান রয়েছে।

২০১৭ সালের এপ্রিলে দিল্লি সফরে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার এ সফরকালে দুই দেশের প্রাথমিকভাবে প্রতিরক্ষা খাত এবং ১৭ প্রকল্পের জন্য মোট ৫০০ কোটি ডলারের তৃতীয় ঋণচুক্তি সই হয়। এর মধ্যে প্রতিরক্ষা খাতে ৫০ কোটি ডলারের ঋণ সুবিধা দেয় ভারত। বাকি ৪৫০ কোটি টাকা দেয়া হচ্ছে প্রকল্প বাস্তবায়নে। শুরুতে ১৭টি প্রকল্প থাকলেও পরবর্তী সময়ে সোলার নিয়ে আরো একটি প্রকল্প এ ঋণচুক্তিতে যোগ হয়। আর চট্টগ্রাম ড্রাই ডক এবং বুড়িগঙ্গা নদীর পুনরুদ্ধার প্রকল্প বাতিল হয়ে যায়। ঋণচুক্তির ৪৫০ কোটি ডলারের ১৬টি প্রকল্পও এখনো দরপত্র, ডিপিপি, সম্ভাব্যতা যাচাই, মূল্যায়ন অথবা অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এ চুক্তির আওতায় থাকা কোনো প্রকল্পের কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি। তবে তৃতীয় ঋণচুক্তি থেকে প্রথম ঋণচুক্তির প্রকল্পের জন্য প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ ডলারের মতো দিয়েছে ভারত। সব মিলিয়ে ভারতের তিনটি ঋণচুক্তির আওতায় ৮০০ কোটি ডলারের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৭০ কোটি ডলার ছাড় করেছে ভারত। এখন পর্যন্ত ১৪টি প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে। চলমান রয়েছে ১৭টি।

ঋণ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং প্রশাসনিক সক্ষমতার বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ূন কবির। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, দুই শীর্ষ নেতার বাংলাদেশ সফরের মধ্য দিয়ে যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল তার সঙ্গে প্রাপ্তির বেশ বড় ফারাক রয়েছে। আর এ দুটি দেশের জন্য আমাদের বাড়তি গুরুত্ব দেয়ার প্রয়োজন রয়েছে। প্রকল্পে যে গতি নেই তা পরিষ্কার। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার সেকেলে প্রশাসনিক দক্ষতা ও সক্ষমতায় দুই পক্ষের ঘাটতি রয়েছে।

সময়মতো প্রকল্প বাস্তবায়নের সক্ষমতা চীনের রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে না হলেও বিশ্বের অন্যান্য দেশে চীন সে সক্ষমতা প্রমাণ করেছে। এক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের প্রশাসনিক সক্ষমতা কতটুকু দরকার সেটি নিয়ে আমি নিশ্চিত নই। আর যেহেতু ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বের বড় একটি জায়গা রয়েছে বাংলাদেশের। ফলে বাংলাদেশে চীনের অনেক প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ভারতের প্রচ্ছন্ন প্রভাব যে থাকে তা অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের যেকোনো প্রকল্প নিয়ে রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও সক্ষমতা বাড়ানো দরকার।

ভারতের ঋণচুক্তি নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ঋণচুক্তিতে থাকা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে সময়সীমা একটি বড় উপাদান। সময়সীমা নির্ধারণ না থাকাটা একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ ঋণচুক্তি যখন হয়েছিল এবং প্রকল্প যখন নেয়া হয়েছিল তখন প্রকল্প বাস্তবায়নের যে খরচ ধরা হয় তার সঙ্গে এখন যে খরচ হচ্ছে তার অনেক ব্যবধান রয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই উপকরণের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। সময়মতো এগুলো বাস্তবায়ন না করতে পারলে ঋণের আওতায় প্রকল্পের মাত্র ৬০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হবে। আর ঋণের অর্থও শেষ হয়ে গিয়েছে। বাকি ৪০ শতাংশ অর্থ জোগাড়ে অন্য ব্যবস্থা করতে হবে সরকারকে। এরই মধ্যে ভারতীয় ঋণে যে প্রকল্পগুলো নেয়া হয়েছে তার অনেকগুলোরই প্রকল্প ব্যয় বেড়েছে। আরো দেরি হলে প্রকল্প ব্যয় আরো বাড়বে।

ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, ভারতের দ্বিতীয় ঋণচুক্তির আওতায় থাকা ১৬টি প্রকল্পের মধ্যে ১৩টি প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের চারটি প্রকল্পেরই ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। বিআরটিসির ৪৭০টি ট্রাক ক্রয় প্রকল্পে প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছিল ২ কোটি ডলার, যা বেড়ে ২ কোটি ৮০ লাখ ডলার হয়েছে। একইভাবে বিআরটিসির ৬০০ বাস ক্রয় প্রকল্পে প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫ কোটি ৫৮ লাখ ডলার, যা বেড়ে ৭ কোটি ৪৬ লাখ ডলারে উন্নীত হয়েছে। সড়ক বিভাগের সড়ক অবকাঠামো মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের যন্ত্রপাতি ক্রয়সংক্রান্ত প্রকল্পে ৫ কোটি ৯৮ লাখ ডলার প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছিল। তা পরবর্তী সময়ে বেড়ে ৭ কোটি ৪২ লাখ ডলার হয়েছে। আশুগঞ্জ-আখাউড়া সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পে ২৮ কোটি ৩৬ লাখ ডলার প্রাথমিক ব্যয় ছিল। পরে তা বেড়ে ৩৩ কোটি ৮৭ লাখ ডলার হয়েছে।

রেলপথ মন্ত্রণালয়েরও তিনটি প্রকল্পের ব্যয় বেড়েছে। খুলনা থেকে দর্শনা রেলপথ ডাবল ট্রাক প্রকল্পে প্রাথমিকভাবে ৩১ কোটি ডলার ব্যয় ধরা হয়েছিল। তা বেড়ে এখন ৩৯ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। সৈয়দপুরে রেলের কারখানা নতুন ক্যারিজ নির্মাণ প্রকল্পে ৭ কোটি ডলার প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছিল। সর্বশেষ তা বেড়ে ৮ কোটি ৭০ লাখ ডলার হয়েছে। পার্বতীপুর থেকে কাউনিয়া পর্যন্ত মিটার গেজ রেললাইন থেকে ডুয়েল গেজ রেললাইনে রূপান্তর প্রকল্পে প্রাথমিকভাবে ১২ কোটি ব্যয় ধরা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে এ ব্যয় বেড়ে ১৪ কোটি ডলার হয়েছে।

ঋণ ব্যবহার সক্ষমতায় দুর্বলতার কথা জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, প্রকল্পের বৈদেশিক ঋণগুলো চলমান বিষয়। মূলত দুই দেশের শীর্ষ নেতৃত্ব সংখ্যা ও ঋণের পরিমাণ দ্রুতগতিতে ঠিক করে দেন। তারপর সেটি নিচ পর্যায়ে এসে গতি শ্লথ হয়ে আসে। কারণ ঋণের যাবতীয় খুঁটিনাটি দুই দেশের আমলারা বসে ঠিক করেন। ফলে বাছাই প্রক্রিয়াসহ যাবতীয় বিষয়ে ওপরে যে গতি থাকে নিচে আর সেটি খুঁজে পাওয়া যায় না। আর ঋণ নিয়ে যখন দুই দেশের আমলারা আলোচনা করেন তখন কিছুটা জট থাকেই। বর্তমানে কভিড-১৯-এর কারণেও ঋণপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয়েছে।

ভারত ও চীনের ঋণ মূল্যায়নে তিনি বলেন, ভিন্ন সরকার ব্যবস্থার কারণে চীনের সঙ্গে আমাদের সার্বিক আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থার অমিল রয়েছে। সেখানে সব মহলের অনুমোদন একটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। অন্যদিকে ভারতের সঙ্গে আমাদের এদিক থেকে ভালো মিল পাওয়া যায়। ফলে তাদের অর্থ ছাড়ে খুব একটা বেগ পেতে হয় না। তবে শীর্ষ পর্যায় থেকে নেয়া প্রকল্পগুলোতে ঋণ নিয়ে দরকষাকষি করতে হয়। এক্ষেত্রে প্রকল্প অনুমোদনেও দেরি হয়। আর আমাদের কিছু সমস্যা তো রয়েছেই।

-বণিক বার্তা


শর্টলিংকঃ