আর্ট বাবুর নেতৃত্বে আত্মসমর্পণ করবে বাগমারার সর্বহারারা


নিজস্ব প্রতিবেদক :

বাংলা ভাইয়ের এলাকা হিসেবে পরিচিত রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ৮০ জন চরমপন্থী (সর্বহারা) আত্মসমর্পন করতে যাচ্ছে। আগামী ৯ এপ্রিল উত্তরাঞ্চলের চরমপন্থী নেতা আব্দুর রাজ্জাক ওরফে আর্ট বাবুর নেতৃত্বে এই চরমপন্থীরা আত্মসর্মপন করবে বলে নিশ্চিত করেছেন একাধিক সূত্র।

আর্ট বাবু বাগমারার তাহেরপুর পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড চৌকিপাড়া মহল্লার নুরুল হুদার ছেলে।

আর্ট বাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাগমারার স্থানীয় যুবলীগ নেতা চঞ্চল কুমারকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করার।

সরকার ঘোষিত আত্মসমর্পনের সুযোগ গ্রহনের মাধ্যমে এসব সর্বহারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে আত্মসমর্পনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর্ট বাবুর নেতৃত্বে এই সর্বহারা দলের সদস্যরা ৯ এপ্রিল পাবনা জেলা স্টেডিয়ামে বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জমান খান কামালের কাছে আত্মসমর্পন করবেন।

এছাড়া ওই অনুষ্ঠানে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. জাবেদ পাঠোয়ারী (বিপিএম, পিপিএম) সহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। রাজশাহীর পুলিশ সুপার ও বাগমারা থানা পুলিশের একাধিক সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সুত্র মতে, ওই দিন পাবনা জেলা স্টেডিয়ামে রাজশাহী বিভাগের ১৬ জেলা ও কুষ্টিয়া জেলাসহ মোট ১৭ জেলার সর্বহারা দলের সদস্য ও মাদক ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করবে। ওই দিন বাগমারা থেকে আর্ট বাবুর নেতৃত্বে প্রায় ৮০ জন চরমপন্থী সদস্য ওই অনুষ্ঠানে আত্মসমর্পণ করবেন। আত্মসমর্পণ করতে চাওয়া দের তালিকা এরই মধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে।

আত্মসমর্পন তালিকায় নাম রয়েছে হামিরকুৎসা এলাকার এমন এক ভ্যান চালক জানান, তারা আর্ট বাবুর নেতৃত্বে আগামী ৯ এপ্রিল পাবনা জেলা স্টেডিয়ামে আত্মসমর্পনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পূর্নবাসিতসহ মামলা প্রত্যাহার এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাবার জন্য সরকার সার্বিকভাবে সহযোগিতা দেয়ার কথা রয়েছে।

বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম আহম্মেদ জানান, আগামী ৯ এপ্রিল পাবনা জেলা স্টেডিয়ামে রাজশাহী বিভাগের ১৬ জেলাসহ কুষ্টিয়া জেলার যেসব অপরাধীরা আত্মসমর্পন করবেন সেখানে বাগমারা থেকেও বেশ কিছু সর্বহারা দলের সদস্যের নাম রয়েছে।

রাজশাহীর পুলিশ সুপার মো: শহিদুল্লাহ (বিপিএম, পিপিএম) জানান, বাগমারার সর্বহারা সদস্যসহ রাজশাহী বিভাগের সকল জেলা উপজেলার মাদক ব্যবসায়ীরা আত্মসমর্পন করবেন। সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় এ উদ্যোগ নিয়েছে।

আত্মসমর্পণকারীদের কী ভাবে পূর্নবাসিত করা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়। তবে এসব অপরাধীরা যাতে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে দেশের উন্নয়নে আত্মনিয়োগ করতে পারে সে ভাবেই তাদেরকে পূর্নবাসিত করা হবে।

রাজশাহীর পুলিশ সুপার আরো বলেন, আত্মসমর্পনের ফলে বাগমারার যে চলমান শান্তি ও স্থিতিশীলতা তা আর কখনও বিঘ্নিত হওয়ার সুযোগ থাকবে না। এর মাধ্যমে এলাকার আর্থিক ও সামাজিক উন্নয়নে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটবে তিনি জানান।

রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক বলেন, ২০০৫ সালের আগের রক্তাক্ত অশান্ত বাগমারাকে আজকের অবস্থায় আনতে ব্যাপক পরিশ্রম করতে হয়েছে। দীর্ঘ সাধনার ফলে বাগমারাকে বর্তমানে একটি শিক্ষা ও উন্নয়নের রোল মডেলে পরিনত করা সম্ভব হয়েছে। বাগমারার এই চলমান উন্নয়ন ও শান্তির ধারা অব্যাহত রাখতে যারা অপরাধী সবাই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সুযোগ পেলে বাগমারার উন্নয়ন আরো ত্বরান্বিত হবে।


শর্টলিংকঃ