ইউএনভি ডেস্ক :
রাজধানীর সবুজবাগের অতীশ দীপঙ্কর সড়কের ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারে গত ১৬ বছর ধরে অসহায় ও দুস্থ রোজাদারদের মধ্যে ইফতার বিতরণ করছেন বৌদ্ধরা। রমজানে প্রতিদিন বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে ইফতারি বিতরণ করা হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভেতরে বড় একটা টেবিলে ইফতারির প্যাকেট সাজানো। সামনে রোজাদার দুস্থ মুসলমানদের দীর্ঘ সারি। সুশৃঙ্খল লাইনের এক পাশে নারী আরেক পাশে পুরুষ।
কোনো হট্টগোল ছাড়াই টোকেন নিয়ে মানুষগুলো একে একে এগিয়ে যাচ্ছেন আর মহাবিহারের সর্বোচ্চ ধর্মীয় গুরু সংঘনায়ক শুদ্ধানন্দ মহাথেরর হাত থেকে ইফতারির প্যাকেট নিচ্ছেন। সবাই ইফতারি নিয়ে হাসিমুখে বেরিয়ে যাচ্ছেন।
বৌদ্ধ মহাবিহারের প্রধান শুদ্ধানন্দ মহাথের বলেন, আমাকে এলাকার মানুষ বড়দা বলে। রমজানে এলাকায় ঘুরে দেখেছি, দরিদ্র মানুষের ইফতার করার টাকা নেই। তখন মহারাজিকের সব ভিক্ষুর সঙ্গে আলোচনা করে ইফতারি বিতরণের এই সিদ্ধান্ত নিই।
ইফতার তদারকির কাজে নিয়োজিত নিভ্রতি থের ভিক্ষু বলেন, ধর্মীয় সম্প্রীতির উদাহরণ এই ইফতার বিতরণ। বছর পাঁচেক আগেও ইফতার নিতে আসা মানুষের সংখ্যা একশ’-দেড়শ’ ছিল।
এখন সে সংখ্যা প্রায় ছয়শ’ ছাড়িয়ে গেছে। লোক বাড়লে প্যাকেটের সংখ্যা বাড়ানো হয়। অসহায় মানুষকে অন্ন দেওয়াটা খুব আনন্দের।
বিহার থেকে ইফতার হাতে নিয়ে ফিরলেন রিকশাচালক আলিমুজ্জামান। অন্য ধর্মাবলম্বীদের কাছ থেকে ইফতার নিতে কেমন লাগছে জানতে চাইলে আবেগাপ্লুুত হয়ে বলেন, বৌদ্ধরা ইফতার দিচ্ছে বলে নেওয়া যাবে না– আমরা এ নীতি মানি না। গরিবের জন্য এসব নিয়ম কাজে আসে না।
বৌদ্ধ মহাবিহারের প্রধান শুদ্ধানন্দ মহাথের বলেন, মুসলমানদের সংযমের মাস রমজান। তাদের কাছ থেকে আমরাও সংযম শিখি। মানবতার সেবাই সবচেয়ে উত্তম ধর্ম। সব ধর্মই সম্প্রীতির কথা বলে।
এ সম্প্রীতি বজায় রাখলেই বিশ্ব শান্তিময় হবে। মানুষে-মানুষে বন্ধুত্ব ও প্রীতি বাড়বে। একে-অপরের প্রতি শ্রদ্ধা বাড়বে। সমাজ শান্ত হবে, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা থামবে। তথ্যসূত্র : পিপিবিডি