অবশেষে বাঁশমুক্ত হলো সেই রেল সেতুটি


আমানুল হক আমান, বাঘা (রাজশাহী):
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী বড়াল নদীর উপর নির্মিত রেল সেতুর ‘বাঘায় বাঁশের বাতা দিয়ে জোড়াতালির রেলসেতু শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর টনক নড়েছে রেল কর্তৃপক্ষের। গতকাল রোববার সকালে পাঠানো হয় শ্রমিক। তারা দ্রুততার সাথে বাঁশের বাতা এবং কাঠের গুজ সরিয়ে ফেলেছে।

তবে এখন পর্যন্ত সরানো হয়নি কাঠের নষ্ট স্লিপার। রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সরেজমিন সেতু পরিদর্শন করেন বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা ও আড়ানী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান প্রভাষক রফিকুল ইসলাম।

জানা যায়, রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী বড়াল নদীর উপর নির্মিত রেলওয়ের সেতুর স্লিপারগুলো একেবারে নড়বড়ে। ব্যস্ত এ রেল সেতুর উপর দিয়ে প্রতিদিন ২৬টি ট্রেন যাতায়াত করে। এমন অবস্থায় ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটার চরম আশঙ্কা থাকে। কিন্তু রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ নেয়নি তেমন উদ্যোগ। ট্রেন দুর্ঘটনা ঠেকাতে রেল কর্তৃপক্ষ দায়সারা ভাবে স্লিপার গুলোকে ঠেকাতে কাঠের গুজ এবং বাঁশের বাতা ব্যবহার করে।

এ নিয়ে শনিবার রাতে ইউনিভার্সাল২৪নিউজে  সেতুর ছবিসহ সংবাদ প্রকাশিত হয়। ফলে সকাল ৯ টার দিকে দ্রুততার সাথে ছুটে আসে রেলের শ্রমিক। তারা সেতুর স্লিপারের উপর লাগানো বাঁশের বাতা এবং কাঠের গুজ তাৎক্ষনিক সরিয়ে ফেলে এবং কিছু কিছু স্থানে নতুন করে লোহার নাট এবং পিন লাগিয়ে দেয়।


এদিকে সেতুর বেহাল দশার খবর পড়ে সেতু পরিদর্শনের জন্য বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন রাজশাহীর নবাগত জেলা প্রশাসক মোঃ. হামিদুল হক। খবর পেয়ে নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা দুপুরে আড়ানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে সাথে নিয়ে সেতু পরিদর্শন করেন। সেখানে এ প্রতিবেদককে ডেকে নেয়া হয়।
রাজশাহীর পি-ডাব্লু আই এর ওয়েম্যানের প্রধান ইয়াকুব আলী বলেন, ১৪ নম্বর রেল সেতুর ২৩৫ নম্বর থেকে কালাবিপাড়া ২৪১/০ নম্বর পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার রেল রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছি। এ এলাকার রেলের সমস্যা ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে আগেই অবহিত করেছি। রেল কর্তৃপক্ষের নির্দেশে লাগানো বাঁশের বাতা ও কাঠের গুজ রোববার সরিয়ে নেয়া হয়েছে। তবে কাঠের গুজের স্থানে লোহার পিন লাগানো হয়েছে।

রাজশাহীর পি-ডাব্লু আই ভবেশ চন্দ্র রাজবংশী বলেন, আড়ানী সেতুর নষ্ট হয়ে যাওয়া ৬০টি স্লিপারের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে চাহিদা দেয়া হয়েছে। সেগুলো পেলে তাৎক্ষনিক লাগানো হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা বলেন, সেতুটির স্লিপারে লাগানো বাঁশের বাতা তুলে ফেলা হলেও শতশত কাঠের স্লিপারের মধ্যে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ টি স্লিপার একে বারেঅকেজো। সেই সাথে পশ্চিম সাইড থেকে তিন নম্বর পিলারের নিচের পাথর ও মাটি সরে গিয়ে পিলারটি অনেকটায় ঝুঁকি বহন করছে। তিনি এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রতিবেদন পাঠাবেন বলে জানান।

আরও পড়ুন বাঘায় বাঁশের বাতা দিয়ে জোড়াতালির রেলসেতু


শর্টলিংকঃ