আ’লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে নেই মেয়র লিটন : হতাশ নেতাকর্মীরা


নিজস্ব প্রতিবেদক :
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ কমিটিতে নির্বাহী সদস্য পদে ঠাঁই পেয়েছেন রাজশাহীর নুরুল ইসলাম ঠাণ্ডু ও আকতার জাহান। তবে নাম নেই রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের।

বৃহস্পতিবার রাত ৯টার পর আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। পূর্নাঙ্গ কমিটিতে স্থান পেয়েছেন রাজশাহীর দুইজন। এরা হলেন-প্রবীণ নেতা নুরুল ইসলাম ঠাণ্ডু ও আক্তার জাহান। ঠান্ডু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ সাবেক ভিপি এবং আকতার জাহান দলের সংরক্ষিত আসনের সাবেক এমপি ছিলেন।

তবে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন এবার দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ পাবেন- এমন জোরালো প্রত্যাশা ছিল নেতা-কর্মীদের। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশিত হয়। দলের নেতা-কর্মীরা নিজেদের ফেসবুকে লিটনকে কেন্দ্রীয় পদ দিতে জোরালো দাবি তোলেন। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের জনপ্রিয় নেতা হিসেবে তিনি দলকে সংগঠিত করেছেন। কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকলে দলকে আরও সুসংগঠিত করতে ভূমিকা রাখতে পারতেন বলেও প্রত্যাশা ছিল নেতা-কর্মীদেরও। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আশা পূরণ হলো না নেতাকর্মীদের। এ নিয়ে হতাশ তারা।

এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের দু’বারের নির্বাচিত মেয়র। মেয়র থাকাকালে তিনি রাজশাহী নগরীর অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছেন। বদলে দিয়েছেন রাজশাহীর অবকাঠামোগত চেহারা। তার প্রচেষ্টাতেই জিরো সয়েল প্রকল্প বাস্তবায়িত হওয়ায় রাজশাহী বিশ্বের সবচেয়ে নির্মল বায়ুর শহর হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর স্বীকৃতি দেয় ২০১৬ সালে।

সাবেক এমপি আক্তার জাহান
সাবেক এমপি আক্তার জাহান

খায়রুজ্জামান লিটনের পিতা জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান ছিলেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর। তার আত্মত্যাগের বিনিময়ে রাজশাহী অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক শক্তি। তিনিও রাজশাহীতে আওয়ামী লীগকে মজবুত শক্তিতে রূপদান করতে কাজ করে যাচ্ছেন। অবস্থায় দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে তার থাকা প্রয়োজন ছিল বলে মনে করেন নেতাকর্মীরা।

এদিকে নতুন কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন আফজাল হোসেন। সিলেটের সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক হয়েছেন ড. সেলিম মাহমুদ এবং উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান। অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন ওয়াসিকা আয়শা খানম এবং শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ।

কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হয়েছেন- আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ডা. মোস্তাফা জালাল মহিউদ্দিন, নুরুল ইসলাম খান, ফখরুদ্দিন কামরান, দীপঙ্কর তালুকদার (রাঙামাটি), অ্যাডভোকেট আমিরুল আলম জুয়েল, আখতার জাহান, ডা. মুশফিক হোসেন চৌধুরী (হবিগঞ্জ), অ্যাডভোকেট সিরাজুল কবির কাউসার, মেরিনা জামান কবিতা, পারভিন জামান কল্পনা, হুসনে আরা লুতফা, অ্যাডভোকেট সফুরা খাতুন (লালমনিরহাট), অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম, আনোয়ার হোসেন, আনিসুর রহমান, শাহাবউদ্দিন ফরাজি, ইকবাল হোসেন অপু, গোলাম রাব্বানী চিনু, মারুফা আক্তার পপি, রেমন্ড আরেং ও গ্লোরিয়া সরকার ঝর্ণা।

নুরুল ইসলাম ঠান্ডু
নুরুল ইসলাম ঠান্ডু

একটি সাংগঠনিক সম্পাদক, তিনটি সদস্যপদসহ দলটির বাকি আরও কয়েকটি সম্পাদকীয় পদ পরে ঘোষণা করা হবে। কমিটিতে এ পর্যন্ত তিনটি সম্পাদকীয় পদ ঘোষণা বাকি আছে। সেগুলো হলো- সাংগঠনিক সম্পাদক, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক এবং ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক।

এর আগে, গত ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে ৯ম বারের মতো সভাপতি নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত হন ওবায়দুল কাদের।


শর্টলিংকঃ