গুজরাট দাঙ্গায় নির্দোষ মোদি


ভারতের গুজরাট রাজ্যে ২০০২ সালের ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় কট্টর হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ তৎকালীন গুজরাট রাজ্য সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যদের কোনো অপরাধের প্রমাণ পায়নি ঘটনা তদন্তে গঠিত নানাবতী-মেহতা কমিশন।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

১৭ বছর আগের ভয়াবহ ওই দাঙ্গার সময় গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন ভারতের এখনকার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ২০০২ সালের হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গায় গুজরাটে দুই হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন বলে ধারণা করা হয়, যাদের বেশির ভাগই ছিলেন মুসলিম।

আহমেদাবাদে ২০০২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি অন্তত ৯৭ জন মুসলিমকে যেভাবে মারার ঘটনাটি ছিল গুজরাট দাঙ্গার সবচেয়ে বীভৎস হত্যাকাণ্ডগুলোর একটি। সেদিন অনেককে জীবন্ত জ্বালিয়ে দেয়া হয়। এক গর্ভবতী নারীর পেট কেটে ভ্রূণ বের করে সেই সন্তান ও মা দুজনকেই কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিল।

ঘটনা তদন্তে গঠিত নানাবতী কমিশনের রিপোর্ট আজ বুধবার গুজরাট বিধানসভায় পেশ করা হয়। তাতে বলা হচ্ছে, দাঙ্গায় কোনো হাত ছিল না গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। তবে বেশকিছু পুলিশ কর্মকর্তা দাঙ্গার সময় ‘নিষ্ক্রিয়’ ছিলেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের সুপারিশও করেছে কমিশন।

২০০২ সালে গুজরাটের গোধরায় ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডে ৫৯ হিন্দু নিহত হওয়ার পর রাজ্যটির বিভিন্ন প্রান্তে টানা তিনদিনের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় নিহত হয়েছিলেন প্রায় দুই হাজার মানুষ। দাঙ্গায় তৎকালীন গুজরাট সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে পরোক্ষ উস্কানি দেয়া এবং নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ উঠেছিল।

কিন্তু সেই সব অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে দাঙ্গার তদন্তে গঠিত নানাবতী-মেহতা কমিশন। অর্থাৎ দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে বা নিয়ন্ত্রণে সরকারের গড়িমসির কোনো অভিযোগের প্রমাণই খুঁজে পায়নি কমিশন। তবে দায়িত্বে অবহেলার কারণে বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

গুজরাট দাঙ্গার তদন্তে দুই অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি জি টি নানাবতী এবং অক্ষয় মেহতার নেতৃত্বে তদন্ত কমিশন গঠিত হয়। কমিটি অবশ্য ২০১৪ সালেই গুজরাট সরকারকে রিপোর্ট পেশ করেছিল। কিন্তু তখন রিপোর্টটি প্রকাশ্যে আনা হয়নি। তারও পাঁচ বছর পর বিধানসভায় সেই কমিশনের রিপোর্ট পেশ করল গুজরাট সরকার।


শর্টলিংকঃ