‘ছিনতাই’ নাটক সাজিয়ে চাচার টাকা আত্মসাৎ করতে গিয়ে ধরা দুই ভাই


ইউএনভি ডেস্ক:
সিলেট নগরের মদিনা মার্কেট এলাকায় ব্যাংক থেকে তিন লাখ ছয় হাজার টাকা তুললেন দুই ভাই। এর মধ্যে আড়াই লাখ টাকা ‘ছিনতাই’ নাটক সাজিয়ে আত্মসাতের চেষ্টা করেন তারা। পুলিশ তদন্তে নেমে বিষয়টি টের পেয়ে ঘটনার সাথে জড়িত দুজনকে আটক করে।

‘ছিনতাই’ নাটক সাজিয়ে চাচার টাকা আত্মসাৎ করতে গিয়ে ধরা দুই ভাই

গত রোববার ঘটে যাওয়া এ ঘটনা ছিল সাজানো নাটক। দূর সম্পর্কের চাচার পাঠানো টাকা ছিনতাই হয়ে গেছে- এমন নাটক সাজিয়ে ভাতিজাসহ চারজন টাকাগুলো আত্মসাৎ করতে চেয়েছিলেন। পুলিশ দুজনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।

ছিনতাইয়ের নাটকের সাথে জড়িত চারজন হলেন- সিলেট নগরের জালালাবাদ থানার ব্রাহ্মণশাসনের উদ্দীপন-বি৪ নম্বর বাসার মারুফ আহমদের ছেলে কামরান মিয়া (২০), জালালাবাদের ডালিয়া গ্রামের রাশেদ (২০), সুনামগঞ্জের ছাতকের গোবিন্দগঞ্জের রমজান আলীর ছেলে আব্দুল হক (১৯) ও ছাতকের নোয়ারাই গ্রামের মৃত শামসুদ্দোহা খানের ছেলে আব্দুল্লাহ আল সাদী (১৯)।

এর মধ্যে আব্দুল হক বর্তমানে কোতয়ালী থানার পশ্চিম পাঠানটুলায়, আব্দুল্লাহ আল সাদীর জালালাবাদ থানার আখালিয়াঘাটের এসডি ভবনে বসবাস করেন।পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ছাতকের জাহিদপুর মোহাম্মদপুরের যুক্তরাজ্যপ্রবাসী আসাদ মিয়া (৩৩) বিভিন্ন কাজের জন্য তিন লাখ ছয় হাজার টাকা পাঠান। সেই টাকা উত্তোলনের জন্য পিন নম্বর তিনি প্রদান করেন ভাতিজা আব্দুল হককে। আব্দুল হক তাঁর ছোট ভাই নাজমুল হককে নিয়ে রূপালী ব্যাংকের মদিনা মার্কেট শাখা থেকে টাকা উত্তোলন করেন।

সোমবার বিকেলে পুলিশ জানায়, রোববার বেলা পৌনে ১টার দিকে টাকা উত্তোলন করেন আব্দুল হক ও নাজমুল হক। আব্দুল হক দুটি বান্ডিলে ৫১ হাজার টাকা রাখেন নাজমুল হকের কাছে। বাকি টাকা নিজের কাছে রাখেন। ব্যাংক থেকে নিচের নামার পর সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে দুজন ‘ছিনতাইকারী’ এসে আব্দুল হককে তুলে নিয়ে যায়। পরে তার কাছ থেকে টাকা ‘হাতিয়ে নিয়ে’ ছেড়ে দেয়া হয়।

ঘটনার পরপরই নাজমুল হক হন্তদন্ত হয়ে বাসায় গিয়ে আব্দুল হককে অটোরিকশা দিয়ে তুলে নেয়ার বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের জানান। পরে পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে টাকা ছিনতাই হয়েছে বলে কোতয়ালী থানায় খবর দেন।এরপরই ঘটনা মোড় নেয় অন্যদিকে। পুলিশ সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ, স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ এবং নাজমুল হকের সাথে কথা বলে। সন্দেহজনক তথ্য মেলার পর আব্দুল হককে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুল হক ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়ে টাকা আত্মসাৎ করতে চেয়েছিলেন বলে স্বীকার করেন। তার সহযোগীদের নাম-পরিচয়ও প্রকাশ করেন।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুল হক জানান, পূর্বপরিকল্পনা অনুসারেই ব্যাংক থেকে নিচে নামার পর আব্দুল্লাহ আল সাদী ও কামরান মিয়া সিএনজি অটোরিকশাযোগে এসে তাকে (আব্দুল হক) তুলে নেয়ার নাটক করেন। ঘটনাকে বিশ্বাসযোগ্য করতে আব্দুল হক ব্লেড দিয়ে নিজের হাতও কাটেন। সাদী, কামরান ও রাশেদ ছিনতাইয়ের নাটক সাজাতে সহযোগিতা করেন।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) জেদান আল মুসা জানান, পুলিশ অভিযান চালিয়ে আব্দুল্লাহ আল সাদীর ঘর থেকে আড়াই লাখ টাকা উদ্ধার করেছে। আর ৫১ হাজার টাকা নাজমুল হকের তথ্যানুসারে তাদের ঘরেই ছিল। তিনি জানান, এ ঘটনায় আসাদ মিয়ার ভাগ্নে, ছাতকের জাহিদপুর মোহাম্মদপুরের রিদানুল ইসলাম আজাদ সোমবার কোতয়ালী থানায় চারজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। আব্দুল হক ও রাশেদকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।


শর্টলিংকঃ