জাবিতে ইবি খেলোয়াড়দের ওপর হামলা, আহত ১৫


নিজস্ব প্রতিবেদক, ইবি:

মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়ার পর এবার খেলা চলাকালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) হ্যান্ডবল দলের খেলোয়াড়দের ওপর হামলা চালিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১০ এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকে জাবির মাঠে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস চ্যাম্পে ইবি ও জাবির মধ্যকার সেমিফাইনাল ম্যাচে এ ঘটনা ঘটে।

হামলায় আহত ইবি হ্যান্ডবল দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক, কোচ ও খেলোয়াড়

হামলায় ইবির সাবেক প্রক্টর ও ইইই বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুুবর রহমান ও ক্রীড়া পরিচালক ড. সোহেল, কোচ শাহ আলম কোচি ও ১১ জন খেলোয়াড় গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

আহত খেলোয়াড়রা হলেন- আশিক, ইমন, শিমুল, রাব্বি, শাকিব, হৃদয়, সালমা, জাকারিয়া, দীপন, শোভন, সালফি ও সৌরভ। তাদেরকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে হাত ও কোমর ভেঙ্গে যাওয়া রাব্বি ও ইমনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এদিকে, হামলার ঘটনা জানার পর তাৎক্ষণিক ঢাকা-কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে ইবি শিক্ষার্থীরা। তারা প্রায় ঘন্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে রাখে। এতে দুইপাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

পরে ছাত্র-উপদেষ্টা ও প্রক্টরের আশ্বাসের ভিত্তিতে ও জনদূর্ভোগের কথা বিবেচনা করে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। এ ঘটনায় ইবি প্রশাসন, শিক্ষক সমিতি ও বিভিন্ন সংগঠন হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।

ইবির খেলোয়াড়রা মোবাইলে জানান, বুধবার খেলার শুরু থেকেই আক্রমনাত্মক ছিল জাবির খেলোয়াড় ও দর্শক শিক্ষার্থীরা। খেলায় ইবি তিন পয়েন্টে এগিয়ে গেলে বারবার ফাউল করতে থাকে জাবির খেলোয়াড়রা।

একপর্যায়ে ইবির খেলোয়াড়রা ফাউল আবেদন করলে চড়াও হয় জাবির খেলোয়াররা। খেলায় শেষের দিকে ইবি নিশ্চিত বিজয়ের দিকে গেলে হটাতই খেলোয়ারদের হামলা করে করে জাবি।

জাবিতে খেলোয়াড়দের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকা-কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে ইবি শিক্ষার্থীরা

এসময় মাঠের পাশে থাকা রড ও ব্রেঞ্চ দিয়ে তাদের আক্রমন করে। ইবির শিক্ষক ও ক্রীড়া পরিচালক হামলা ঠেকাতে গেলে তাদের উপরও হামলা করা হয়। হামলার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ইবি উপাচার্য ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেন, ‘আমি এই বর্বোরচিত হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমরা ইউজিসিকে মৌখিকভাবে জানিয়েছি, লিখিত অভিযোগও জানাব। আমাদের দাবি- অবিলম্বে এই সন্ত্রাসী হামলার সাথে জড়িতদের সবাইকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে সকল প্রকার খেলা থেকে কালো তালিকাভূক্ত করতে হবে।’

জাবি উপাচার্য ফারজানা ইসলাম বলেন, ‘আমার শিক্ষার্থীরা যেটি ঘটিয়েছে, আমি তাতে খুবই দুঃখিত। আমি বিষয়টি স্কিপ করবো না। হামলাকারীদের দ্রুতই বিচার হবে।’

উল্লেখ্য, গত সোমবার (৭ এপ্রিল) সেমিফাইনালে খেলার আগে অনুশীলনের সময় ইবির খেলোয়ারদের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি দেয় জাবির শিক্ষার্থীরা। ফলে খেলা স্থগিত করে কর্তৃপক্ষ। ইবির পক্ষ থেকে ভেনু পরিবর্তনের আবেদন করলেও পরিবর্তন করা হয়নি। জাবি ভিসির নিরাপত্তা দেওয়ার আশ্বাসে জাবির মাঠে খেলতে সম্মত হয় ইবি দল।


শর্টলিংকঃ