নুসরাত হত্যার এক বছর


ইউএনভি ডেস্ক:   

বহুল আলোচিত ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের পর আগুনে পুড়িয়ে হত্যার এক বছর পূর্ণ হলো আজ (১০ এপ্রিল)। 

নুসরাত হত্যার এক বছর

নিজের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার হাতে শ্লীলতাহানি শিকার হলে গত বছরের ২৭ মার্চ এর প্রতিবাদ করতে গিয়ে অধ্যক্ষের অনুগতদের হাতে আগুন সন্ত্রাসের শিকার হন। এরপর ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুসরাতের মৃত্যু হয়।গত বছরের ২৪ অক্টোবর আলোচিত এ মামলায় দোষী প্রমাণিত হওয়ায় ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক মামুনুর রশীদ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাসহ ১৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা (৫৭), নুর উদ্দিন (২০), শাহাদাত হোসেন শামীম (২০), কাউন্সিলর ও সোনাগাজী পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম (৫০), সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের (২১), জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন (১৯), হাফেজ আব্দুল কাদের (২৫), আবছার উদ্দিন (৩৩), কামরুন নাহার মনি (১৯), উম্মে সুলতানা পপি (১৯), আব্দুর রহিম শরীফ (২০), ইফতেখার উদ্দিন রানা (২২), ইমরান হোসেন মামুন (২২), সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি ও মাদরাসার সাবেক সহ-সভাপতি রুহুল আমিন (৫৫), মহিউদ্দিন শাকিল (২০) ও মোহাম্মদ শামীম (২০)।

এদিকে নুসরাতের ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগে ১৫ এপ্রিল তৎকালীন সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনালে বাদী হয়ে মামলা করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। মামলাটি তদন্ত শেষে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ২৭ মে ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দিলে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

১৬ জুন রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে ওসি মোয়াজ্জেমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ১৭ জুলাই অভিযোগ গঠন শেষে ৩১ জুলাই থেকে এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম শুরু হয়। ২০ নভেম্বর উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে ২৮ নভেম্বর রায় ঘোষণা করেন বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন। রায়ে ওসি মোয়াজ্জেমের ৮ বছরের জেল ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এটি বাংলাদেশের প্রথম সাইবার ট্রাইব্যুনালের প্রকাশিত রায়।

মামলার বাদী নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বলেন, বেশ কিছু দিন যাবত আসামির স্বজনরা আমাদের পরিবারের লোকজন নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বিষোদগার করে আসছেন। তারা আমাদের বিষয়ে যা ইচ্ছা তাই লিখে যাচ্ছেন। আমরা বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করেছি। আশাকরি তারা দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা বিচারিক আদালতে ন্যায় বিচার পেয়েছি। রায় দ্রুত কার্যকরের মাধ্যমে নুসরাতের আত্মা শান্তি পাবে। ঘাপটি মেরে থাকা অপরাধীদের জন্য এটি হবে একটি নিদর্শন। তিনি নুসরাতের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন।


শর্টলিংকঃ