পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির হুঁশিয়ারি বিজেপির


ইউএনভি ডেস্ক:

বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিক্ষোভের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির হুঁশিয়ারি দিয়েছে দেশটির কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতারা। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় আইনটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও সহিংসতার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল সরকারকে দায়ী করে বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা বলেছেন, এভাবে চলতে থাকলে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি ছাড়া কেন্দ্র সরকারের অন্য কোনও উপায় থাকবে না।

বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে নিপীড়নের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়া হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পার্সি ও খ্রিস্টানদের নাগরিকত্ব নিশ্চিতে সম্প্রতি আইন সংশোধন করেছে ভারত। ১২ ডিসেম্বর রাতে প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরের পরেই আইনে পরিণত হয়েছে বিতর্কিত বিলটি। তারপর থেকেই সহিংসতা বেড়েছে সমগ্র ভারতে। আসামসহ ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে অবৈধ অবৈধ অভিবাসীদের শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি বাতিল ও এই অঞ্চলকে ওই আইনের আওতামুক্ত করার দাবিতে বিক্ষোভ করছে তারা।

এসব অঞ্চলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কারফিউ জারিসহ বিভিন্ন স্থানে মোবাইল ইন্টারনেট ও এসএমএস সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সংঘর্ষ ও বিক্ষোভে উত্তাল পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলা। মুর্শিদাবাদ থেকে বীরভূম, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়াতে বিক্ষোভের আঁচ সবচেয়ে বেশি। বৃহস্পতিবার থেকেই বিভিন্ন ট্রেনকে আক্রমণ করছে আইনটির বিরোধী মানুষেরা। আগুন জ্বালিয়ে চলছে পথ অবরোধ। চরম দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ। এই অবস্থায় শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের আর্জি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে, তাতে বিশেষ কাজ হয়নি। এই পরিস্থিতির জন্য রাজ্য প্রশাসনকেই দায়ী করেছে বিজেপি।

পশ্চিমবঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রাহুল সিনহা বলেন, ‘এভাবে চলতে থাকলে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা ছাড়া কেন্দ্রের অন্যকোনও উপায় থাকবে না। রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকেও আমরা এখানে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির পক্ষে।’

রাজ্য বিজেপি সভাপতি ও সাংসদ দিলীপ ঘোষের অভিযোগ, নাগরিকত্ব আইন ঘিরে যে প্রতিবাদ চলছে তা আসলে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যের প্রশ্রয়েই এই সহিংস আন্দোলন চলছে বলে দাবি তার। তিনি বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসন নীরব দর্শকের মতো সব দেখছে। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ নিতে ভয় পাচ্ছে।’ এর আগেও বেশ কয়েকবার নাগরিকত্ব আইন হলেও তা ঘিরে এই ধরণের প্রতিবাদ হয়নি বলে জানান রাজ্য বিজেপি সভাপতি।

দিলীপ ঘোষের প্রশ্ন, ‘বহু উদ্বাস্তু, শরনার্থীর ভোট দেওয়া অধিকার থাকলেও উপযুক্ত নাগরিকত্ব ছিল না। বিজেপি তাদের বহু দিনের দাবি পূরণের চেষ্টা করেছে। এতে ভুলের কী আছে?’ তিনি ব্যাখ্যা দেন, ‘ওই তিন রাষ্ট্রই মুসলিম প্রধান হওয়ায় সেখানে তাদের নিরাপত্তাহীনতার কোনও কারণ নেই। ফলে সেদেশের মুসলমানদেরও ভারতে প্রবেশের প্রয়োজন হয়নি। তাই আইনে মুসলমানদের কথা বলা হয়নি।’

নতুন আইনের অপব্যাখ্যা দিয়ে তৃণমূল সংখ্যালঘু মুসলমানদের প্ররোচিত করছে বলে অভিযোগ করেন গেরুয়া দলের রাজ্য সভাপতি। সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস


শর্টলিংকঃ