পুঠিয়ায় রুমিয়ার মৃত্যুর ৮দিনেও রহস্য উন্মেচন হয়নি


নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর পুঠিয়া রাজপরগণায় রুমিয়া খাতুন (১৯) নামের এক যুবতীর মৃত্যু নিয়ে ক্রমেই ধূম্রজাল সৃষ্টি হচ্ছে। পুলিশ গত ৮দিনেও তার মৃত্যুর কারণ বা রহস্য উৎঘাটন করতে পারেননি। রহস্যময় এই মৃত্যু নিয়ে স্থানীয় জনগণের নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।

পুঠিয়ায় রুমিয়ার মৃত্যুর ৮দিনেও রহস্য উন্মেচন হয়নি

মৃত্যুের পরিবারের অভিযোগ স্থানীয় কিশোর গুরুপের পরিকল্পিত ভাবে তাকে হত্যা করেছে। আর এই নিয়ে পুলিশি ঝামেলা না করতে কিছু অজ্ঞাত লোকজন দু’দফা তাদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়েছে। মৃত রুমিয়া খাতুনের মা আফরোজা বেগম বলেন, কয়েক বছর আগে আমার স্বামী আমাদের ছেড়ে নতুন স্ত্রীর সাথে রাজশাহী শহরে থাকেন।

সে সুবাধে আমাদের ঠাঁই হয় বাপের বাড়িতে। মেয়েটিকে এক জায়গায় বিয়েও দিয়ে ছিলাম। কিন্তু পুঠিয়া উপজেলার কাঠালবাড়ীয়া গ্রামের রিমন নামের এক যুবকের সাথে তার মুঠোফোনে পরিচয় হয়। ওই পরিচয়ের জেরে রুমিয়া স্বামীকে ছেড়ে রিমনের ছত্রছায়ায় কালিতলা নামক স্থানে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতো।

আর সে নাটোরে অবস্থিত প্রাণ-এগ্রো কোম্পানিতে কাজ করতো। মাঝে মধ্যে মেয়ের সাথে আমাদের যোগাযোগ হতো। মাঝে মধ্যে রুমিয়া বলতো রিমনের বন্ধুরা তাকে প্রায় উত্যাক্ত করতো। বিষয়টি আমার মেয়ে রিমনকে একাধিকবার বলেছে কিন্তু সে উল্টা আমার মেয়েকেই শারিরীক নির্যাতন করতো। তার মৃত্যুর খবর শুনে আমরাও মনে করে ছিলাম সে নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্নহত্যা করতে পারে।

কিন্তু মারা যাওয়ার পর থেকে অজ্ঞাত ২ জন লোক আমাদের বাড়িতে এসে বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না  করার জন্য দু’দফা বলেছেন। আর আমরা পুলিশি ঝামেলায় জড়ালে আমাদের প্রাণনাশের হুমকিও দিয়ে গেছে। যার কারণে আমাদের মনে হয় রিমনসহ তার বন্ধুরা রুমিয়াকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিশোর গ্রুপের একজন বলেন, গত ১৭ ফেব্রুয়ারী বিকেলে আমাদের বন্ধুদের মধ্যে আলোচনা হয়েছিল, রাতে একটি মেয়ে এনে উপজেলার স্টেডিয়াম মাঠের পরিত্যাক্ত ভবনে ফুর্তি করবে। সাথে যৌন উত্তেজক ওষুধও সবাই খাবে। তবে ওই দিন আমার পারিবারিক ঝামেলা থাকায় আমি তাদের সাথে যায়নি।

১৮ ফেব্রুয়ারী দুপুরে শুনেছি ওই মেয়েকে তারা রাজবাড়ীতে ছেড়ে এসেছে। এরপর হাসপাতালে ওই মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। শুনেছি পুলিশ মেয়েটির ফোন থেকে আমার এক বন্ধুর নম্বর পেয়ে তাকেসহ তিনজনকে আটক করেছেন। পরে তাদের পরিবার পুলিশকে ম্যানেজ করে ৫৪ ধারায় জেল-হাজতে পাঠিয়ে দেন। এবং পরের দিন তারা আদালত থেকে জামিন পায়।

এ বিষয়ে পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি একটি মামলার স্বাক্ষী দিতে কোটে এসেছি। এ বিষয়ে পরে কথা বলবো।

উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারী দুপুরে স্থানীয় লোকজন রুমিয়া খাতুনকে পুঠিয়া রাজপরগণা থেকে মূমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে চিকিৎসাধিন অবস্থায় ওইদিন বিকেলে তার মৃত্যু হয়। এ বিষয়ে থানায় একটি ইউডি মামলা দায়ের করা হয়েছে। রুমিয়া খাতুন নাটোর জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলার জামনগর ইউনিয়নের রৌশনগিরী পাড়া গ্রামের নুর ইসলামের মেয়ে।


শর্টলিংকঃ