ভাঙ্গুড়ায় স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে চাকরিচ্যুত সেনা সদস্য গ্রেপ্তার


ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি :

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ষষ্ঠ শ্রেণীর এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মাহবুব হোসেন ওরফে মজনু (৪৫) নামে চাকরিচ্যুত এক সেনা সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত সেনাসদস্য উপজেলার রাঙ্গালিয়া পশ্চিমপাড়া গ্রামের আলহাজ্ব মো. নুরুজ্জামান মাষ্টারের ছেলে। এ ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যায় ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে ভাঙ্গুড়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।

গ্রেপ্তারকৃত সেনা সদস্য মাহবুব হোসেন ওরফে মজনু
গ্রেপ্তারকৃত সেনা সদস্য মাহবুব হোসেন ওরফে মজনু

স্থানীয় ও ভিকটিমের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত চারমাস আগে ওই স্কুলছাত্রী সন্ধ্যার দিকে মুরগি খুঁজতে প্রতিবেশী মজনুর বাড়িতে যায়। এ সময় বাড়িতে কেউ না থাকায় মজনু ওই ছাত্রীকে জোরপূর্বক ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করে। এরপর ঘটনাটি কাউকে না বলার জন্য হুমকিও দেয় তাকে।

পরে আবার ওই স্কুলছাত্রীকে বাড়িতে একা পেয়ে ঘরে ঢুকে ধর্ষণ করে। এতে সে চার মাসের গর্ভবতী হয়ে পড়লে বিষয়টি মজনুকে জানায়। তখন মজনু গর্ভপাত করাতে গত বুধবার ওই মেয়েকে গোপনে কয়েকটি ঔষধ সেবন করায়। পরে ঔষধ খেয়ে মেয়েটি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

পরে সে তার পরিবারের কাছে ঘটনাটি খুলে বলে। এ বিষয়টি নিয়ে মেয়েটির বাবা প্রথমে স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানান। পরে ইউপি সদস্য ওই ভিকটিমের পরিবারকে ডেকে গ্রাম্য শালিসে মীমাংসা হয়ে যাওয়ার কথা বলে। তা না হলে তাঁদের আইনগত পদক্ষেপ নিতে দেরি হবে বলে তিনি জানান।

জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি সদস্য শরিফুল ইসলাম বলেন, আমি ওই মেয়েটির কাছ থেকে শুনেছি, তাকে ধর্ষণ করেছে মজনু। তবে আমার কাছে কেউ বিচার চায়নি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, গত ২০১৪ সালে পাটুলীপাড়া গ্রামে এক গৃহবধূকে এবং ২০১৭ সালে রাঙ্গালিয়া গ্রামে আরেক গৃহবধূকে ধর্ষণ করে এই মজনু। এর কিছুদিন পরেই পার্শ্ববর্তী চাটমোহর উপজেলার মহেলা বাজারে ভুয়া র‌্যাব সেজে ছিনতাই করতে গেলে এলাকাবাসি গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। তারপর সে চাকুরিচুত্য হয়।

নির্যাতিত স্কুলছাত্রী জানায়, প্রতিবেশী মজনু আমার সঙ্গে খারাপ কাজ করেছে।

ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুদ রানা বলেন, সন্ধ্যায় পুলিশ অভিযুক্ত মজনুকে গ্রেপ্তার করে। বুধবার সকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং ভিকটিমকে মেডিকেল টেস্টের জন্য পাবনা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অভিযুক্ত মজনু একজন চাকরিচ্যুত সেনা সদস্য বলে জানা গেছে।


শর্টলিংকঃ