ভারতজুড়ে শোনা যাচ্ছে বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশে আকাশবাণী


ইউএনভি ডেস্ক:

বাংলাদেশ ও ভারতের রাষ্ট্র পরিচালিত বেতার উভয় দেশে বাংলাদেশ বেতার ও আকাশবাণী শ্রোতাদের শুনার সুবিধার্থে সম্প্রচার বিনিময় শুরু করেছে। বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভাদকার মঙ্গলবার দুপুরে নয়াদিল্লীতে বাংলাদেশ বেতার ও প্রসার ভারতীর মধ্যে অনুষ্ঠান বিনিময় কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন।

বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ বেতার এখন সারা ভারতে শোনা যাচ্ছে এবং আকাশবাণী এখন বাংলাদেশে শোনা যাবে।’ এতে বলা হয়, বাংলাদেশ বেতারের সম্প্রচার কার্যক্রমের বিষয়ে ২০১৮ সালের এপ্রিলে দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছিল, তবে এতদিন সেটি বাস্তবায়িত হয়নি।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এর ফলে এখন থেকে দু’দেশের শ্রোতা বিশেষত ত্রিপুরা এবং পশ্চিমবঙ্গের জনগণ ডিটিএইচ (ডিরেক্ট টু হোম) সেবা ব্যবহারের মাধ্যমে ভারতের বাকি অংশগুলোতে বাংলাদেশ বেতারের কর্মসূচি শুনতে পাবে। কলকাতার লোকজন এখন থেকে বাংলাদেশ বেতারের অনুষ্ঠান আকাশবাণী চ্যানেলে কলকাতায় এফএম ১০০.১ মেগাহার্টজ, আগরতলায় এফএম ১০১.৬ মেগাহার্টজ এবং আকাশবাণী অ্যাপ ও ডিটিএইচের মাধ্যমে শুনতে পারবে। সারা ভারতে ভারতীয় সময় সকাল ৭.৩০টা থেকে ৯.৩০টা এবং সন্ধ্যা ৫.৩০টা থেকে ৭.৩০টা একযোগে সম্প্রচার শুরু হলো। একইসময়ে আকাশবাণীর অনুষ্ঠান বাংলাদেশ বেতারের এফএম ১০৪ মেগাহার্টজে সম্প্রচার শুরু হলো। তবে বিশ্বজুড়ে শ্রোতারা এখন থেকে www.newsonair.com অ্যাপস ডাউনলোড করে বাংলাদেশ বেতারের অনুষ্ঠানগুলি উপভোগ করতে পারবেন।

ড. হাছান মাহমুদ তথ্যমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নেয়ার পরে চুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অল ইন্ডিয়া রেডিওতে বেতারের অনুষ্ঠান সম্প্রচার শুরু করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের শুরুতে ড. হাছান মাহমুদ তার স্বাগত বক্তব্যে ভারত ও বাংলাদেশের দু’টি জনসেবা সম্প্রচারকের মধ্যে সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানগুলো সম্পাদন করার জন্য ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। মন্ত্রী এসময় ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সহযোগিতার কথা স্মরণ করে বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সময়কালে দুই বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামীতে উভয় দেশের স্বার্থে দু’টি প্রতিবেশী মধ্যকার বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কগুলো আরও গভীর হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি, বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণের প্রযুক্তিগত, সাংস্কৃতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞানকে বৃদ্ধি করতে গণমাধ্যম এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচিকে আরও ত্বরান্বিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভাদকার তার ভাষণে বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ‘অর্গানিক রিলেশন্স’ রয়েছে এবং ভবিষ্যতে বন্ধুত্বের এই বন্ধন আরও জোরদার হবে, কারণ উভয় দেশের মধ্যে রয়েছে একটি ভৌগোলিক নৈকট্য, ইতিহাস ও ঐতিহ্যগত সম্পর্ক। তিনি মতামত ব্যক্ত করে বলেন, যৌথ সহযোগিতার মাধ্যমে জীবন ও প্রকৃতি বাঁচাতে মানুষকে পরিবেশ সম্পর্কে আরও বেশি সচেতন করে তুলতে হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই দুই নেতার শাসনামলে বাংলাদেশ ও ভারত দুর্দান্ত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের দিকে মোড় নিয়েছে।

বৈঠকে মন্ত্রীর সঙ্গে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার রকিবুল হক, বেতারের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন-বিএফডিসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং মিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় ভারতীয় মন্ত্রীর সঙ্গে তথ্য ও বর্হিপ্রচার বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণও উপস্থিত ছিলেন।

পরে, এক মুক্ত আলোচনায়, দু’দেশের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে উভয় দেশের গণমাধ্যমের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর দিকে আলোকপাত করে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন। বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধু ফিল্ম সিটিকে আন্তর্জাতিক মানে গড়ে তোলার জন্য ভারতের সহযোগিতা চাইলে, ভারতীয় পক্ষ এই লক্ষ্যে সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করতে সম্মত হন।


শর্টলিংকঃ