মোহনপুরে জমে উঠেছে ঈদ কেনাকাটা


রিপন আলী, মোহনপুর :

আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার বিপণিবিতানগুলোয় ক্রেতাদের পদচারণায় ততই সরগরম দেখা যাচ্ছে।

উপজেলা সদরের বিভিন্ন মার্কেটের শপিংমল থেকে শুরু করে ফুটপাতের দোকানগুলোতে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। ঈদে চাই নতুন পোশাক। তাইতো সাধ আর সাধ্যের মধ্যে না থাকলেও প্রিয়জনকে উপহার দিতে ধনী ও মধ্যবিত্তদের পাশাপাশি কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছে নিম্নবিত্তের মানুষ গুলোও।

উপজেলা সদরে বসবাসকারীরা ছাড়াও বিভিন্ন গ্রামসহ পাশ্ববর্তী উপজেলা থেকে দলে দলে লোকজন প্রতিদিন ঈদের বাজার করতে আসছে উপজেলা শহরে।

উপজেলার সবচেয়ে বড় বাজার কেশরহাটের গার্মেন্টসপট্টিসহ বিভিন্ন মার্কেটে তরুণ-তরুণীদের পছন্দের কসমেটিক, ছোটবড় ১২০টি কাপড়ের বিপণিবিতানগুলোতে এবারের ঈদের কালেকশনে নজরকাড়া বাহারি পোশাকের ঝলকের মধ্যে আগের বছরের পোশাকগুলোই বেশি বেশি নজর কাড়ছে ক্রেতাদের।

এগুলোর মধ্যে- বাহুবলি, ঋষিকা, সেলফি, কুলফি, পাহাড়পুরি, আনারকলি, ডিভাইডার গাওন, জিপসীসহ হরেক রকমের বাহারী থ্রী-পিস, লেহেঙ্গা, ফতোয়া, সেলোয়ার, কামিজ।

ছোলেদের পোশাকের মধ্যে- টি শার্ট, গেঞ্জী, পাঞ্জাবী, জিন্সপেন্ট, শর্ট পেন্ট, রাখিবন্ধন, পটল কুমার, বজরাঙ্গি ভাইজাং, ফ্লোর টার্চ, লাসা, লং স্কট, আকৃষ্ট করেছে দেশীয় পণ্য টাঙ্গাইল শাড়ি, জামদানী, খদ্দর, মনীপুরী, রাজগুরু, বালুচুরী, জর্জেট শাড়ি ইত্যাদি।

কেশরহাটের মাজেদা বস্ত্রালয়ের মালিক আনোয়ার হোসেন জানান, এবারের ঈদে তারা সেরা ডিজাইনগুলিই তাদের দোকানে এনেছেন এবং মেয়েদের একটি পোষাক সর্বোচ্চ দশ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন।

প্রতিদিন তারা কেনাবেচা করতে হিমশিম খাচ্ছেন। গতবারের তুলনায় প্রতিদিন দ্বিগুন বেচা-কেনা হচ্ছে। ৩ জন কর্মচারী এখন দিন রাত সমান তালে কেনা-বেচায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

এছাড়াও, ক্রেতা সমাগম দেখা গেছে মা লক্ষি থ্রি-পিচ ঘর, জাহাঙ্গীর বস্ত্রালয়, সৈকত গার্মেন্টস ,রুবেল ক্লথ স্টোর, মোকছেদ ক্লোথ স্টোর, দুই ভাই ক্লোথ স্টোর ও হক ক্লোথ স্টোরে।

এদিকে, খেটে খাওয়া গরীব মানুষদের কেনাকাটায় ফুটপাতেও ব্যস্ততা দেখা গেছে। সেখানেও রয়েছে নানরকমের বাহারি পোশাক।

গ্রাম থেকে  স্ত্রী ও সন্তানদের সাথে করে ঈদের নতুন কাপড় কিনতে এসেছেন দিনমজুর রফিকুল ইসলাম। তাকে প্রশ্ন করতেই তিনি প্রতিবেদককে বলেন,

অতীতে গ্রামে এধরনের প্রচলন ছিল না, আমি ও আমার ভাই বোনেরা প্রতিটি ঈদে তুলে রাখা পুরাতন কাপড় পরে ঈদের নামাজ আদায় করেছি।

এখনকার ছেলে মেয়ে সে কথা শোনেনা। তাদের বায়না গ্রামের ধনী পরিবারের ছেলেমেয়েরা ঈদে নতুন পোশাক পেলে আমরা কেন পাবো না। তাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে না পেরে আজ বাজারে এসেছি ছেলেমেয়েদের জন্য নতুন পোশাক কিনতে।

আমরা গরীব তাই মার্কেটের বড় বড় দোকানগুলোতে যেতে পারিনি তাই আমরা এই সেটের দোকানে এসেছি। নিজেদের জন্য নয় প্রায় আড়াই হাজার টাকা খরচ করে দু’সন্তানের নতুন কাপড়, জুতা কিনেছি। সন্তানদের সুখই আমাদের সুখ।

এবারে উপজেলা সদর ছাড়াও গ্রামের লোকজন বেশি আসছে ঈদের কেনা-কাটা করতে। মোহনপুর উপজেলা ছাড়াও বাগমারা,তানোর, মান্দা উপজেলা হতে অসংখ্য মানুষ প্রতিদিন ঈদের বাজার করতে মোহনপুরের কেশরহাট আসছে।


শর্টলিংকঃ