রাজেকুল ইসলাম, রাণীনগর নওগাঁ :
দেশের উত্তর জনপদের ধান উৎপাদনের জেলা হিসেবে খ্যাত নওগাঁর রাণীনগর-আত্রাই উপজেলায় মাঠে মাঠে এখন রোপা আমন ধানের সবুজের সমারহ। নিবিড় পরিচর্যায় এপর্যন্ত প্রাকৃতিক কোনা দুর্যোগ হানা না দেওয়ায় ক্ষেতের মাঠে এখন রোপা-আমন সবুজ ধানের গাছগুলো বাতাসে দোল খাচ্ছে। রাণীনগর উপজেলা কৃষি বিভাগ বলছে, ধানের কোনো রোগবালায় না থাকায় আশানূরুপ ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
কিন্তু চাষীরা আতংকে রয়েছে রাণীনগর উপজেলার নান্দাইবাড়ি-মালঞ্চি নামক স্থানে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত নওগাঁর ছোট যমুনা নদীর বেঁড়িবাধ সংস্কার না করায় চলতি মৌসুমে রোপা-আমন ধান ও রাস্তা-ঘাটের ব্যাপক ক্ষতির আশংকা দেখা দিয়েছে। রাণীনগর-আত্রাই সড়কের ঘোষগ্রাম থেকে আত্রাই পর্যন্ত সড়কের প্রায় ২০টি জায়গায় সড়ক বিভাগের সড়কটির মাটি দেবে যাওয়ায় স্থানীয়রা বাঁশের পাইলিং দিয়ে রক্ষা করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সংস্কার কিংবা মেরামতের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি চোখে পরার মতো নয়।
জানা গেছে, উপজেলার বুকচিরে বয়ে যাওয়া নওগাঁর ছোট যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীর তীর ঘেষা নান্দাইবাড়ি-মালঞ্চি এলাকায় প্রায় পৌনে এক কিলোমিটার বেড়িবাধে ইতিমধ্যেই ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। সেই ভাঙ্গন কবলিত স্থান গুলো দায়সাড়া মেরামত করা হলেও বেড়িবাধঁগুলো ক্ষতিগ্রস্ত থাকায় দিনদিন ভাঙ্গনের গতি বৃদ্ধি পাচ্ছে।এখনই জরুরী ভিত্তিতে সংস্কার কাজ শুরু করতে না পারলে যে কোনো সময় বাধটি ভেঙ্গে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। ভাঙ্গন কবলিত জায়গাগুলো শুস্ক মৌসুমে সংস্কার করা হলেও শত ভাগ ঝুকিপূর্ণ জায়গাগুলো সংস্কারের তেমন কোন উদ্দোগ নেওয়া হয়নি।
বর্তমানে রাণীনগরের কৃষ্ণপুর, মালঞ্চি, নান্দাইবাড়ি নামক নদী তীরবর্তী স্থানগুলো সবচেয়ে ঝুকিপূর্ণ। দীর্ঘ প্রায় ১৬ মাস অতিবাহিত হলেও বাঁধ সংস্কারের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ফলে চাষিদের পিছু ছাড়ছে না উঠতি ফসল নিয়ে আতংক। যে কোন মূহুর্তে বেঁড়িবাধ ভেঙ্গে গেলে রাণীনগর-আত্রাই উপজেলার প্রায় ১৬ হাজার হেক্টর রোপা-আমন ধানসহ মৌসুমি শাক-সবজি তলিয়ে যাবে বন্যার পানিতে।
উপজেলার ৩নং গোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত খান হাসান বলেন, নদীর তীরবর্তী বেড়িবাধ ভাঙ্গন এলাকায় পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এই স্থানে ভেঙ্গে গেলে রাণীনগর-আত্রাই উপজেলার ফসলি জমি ও ঘর-বাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হবে। তাই জনস্বার্থে আমিসহ আমার পরিষদের কয়েকজন ইউপি সদস্য মিলে কিছু বাঁশ কিনে ভাঙ্গন রোধে কাজ শুরু করেছি।
নওগাঁর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুধাংশু কুমার জানান, রাণীনগর উপজেলার গোনা ইউনিয়নের নান্দাইবাড়ি-মালঞ্চি গ্রামের পার্শ্বে নদী তীরবর্তী বেঁড়িবাধটি পানির তোরে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এই অংশটি আমাদের না । তার পরও আগামীতে ওই বাধ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে সংস্কার বা পুন:নিমার্ণের চিন্তা ভাবনা রয়েছে।