রিপোর্ট এলো নেগেটিভ, মৃতের দাফন নিয়ে রণক্ষেত্র


ইউএনভি ডেস্ক: 

লালারসের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়ার আগেই কোভিড হাসপাতালে মৃত ব্যক্তিকে কবর দিতে গিয়ে জনতা পুলিশের খণ্ডযুদ্ধে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল ভারতের আলিপুরদুয়ারে।রিপোর্ট এলো নেগেটিভ, মৃতের দাফন নিয়ে রণক্ষেত্র

 

জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান লাগোয়া ওই এলাকায় জনতা-পুলিশ সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ২২ জন পুলিশ সদস্য। এদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত হয়েছেন মাদারিহাট থানার ওসি ও সোনাপুর পুলিশ ফাঁড়ির ওসিও।পুলিশের গুলিতে গ্রামের এক যুবক আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে শাহরুখ মিয়া (২১) নামের ওই যুবককে।

উত্তেজিত জনতা পুলিশের তিনটে গাড়ি ও একটি ছোট বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, পুলিশের বিরুদ্ধে গুলি চালানোর যে অভিযোগ উঠেছে তা আমরা খতিয়ে দেখছি। আহত পুলিশ কর্মীদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও পুলিশকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এ দিকে যে ব্যক্তির দেহ সৎকার করা নিয়ে এই হুলুস্থুল কাণ্ড, তার দেহে কোভিডের সংক্রমণ পাওয়া যায়নি। জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা সোমবার জানান, এ দিন বিকেলেই ওই ব্যক্তির করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট এসে পৌঁছেছে। রিপোর্ট নেগেটিভ। রোববার বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ আলিপুরদুয়ার জেলায় করোনার চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত সরকারি আয়ুষ হাসপাতালে মারা যান ৬০ বছরের ওই বৃদ্ধ। এদিন দুপুরেই ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাকে। তারপর লালারসের নমুনা পাঠানো হয়েছিল পরীক্ষার জন্য।

পরীক্ষার রিপোর্ট আসার আগে রবিবার রাতেই তার কবর দেওয়ার ব্যবস্থা করে প্রশাসন। ঠিক হয় জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান লাগোয়া তোর্সা নদীর চরে প্রধানপাড়া এলাকায় কবর করা হবে। রাতেই পুলিশের তিনটে গাড়ি ও একটা বাস ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। টের পেয়েই আশপাশের মানুষজন জড়ো হয়ে পুলিশকে দেহ সৎকারে বাধা দেয়।

বেগতিক বুঝে পুলিশ লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এলাকার মানুষ। প্রায় দুই আড়াই হাজার মানুষ পুলিশের ওপর চড়াও হয়। তখন কোনও রকমে এলাকা থেকে পালিয়ে চলে আসেন পুলিশ সদস্যরা। সেই সময় একটি পুলিশের গাড়ির ভেতর থেকে গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ। পুলিশের গুলিতে আহত হন শাহরুখ মিয়া নামের এক যুবক।

এরপরেই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। পরে পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় জনতা। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে পুলিশের বিশাল বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। মৃতদেহ অন্যত্র সৎকারের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনার জন্য প্রশাসনকেই দায়ী করেছে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত।

শালকুমার ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বাবলু কার্জী বলেন, “এর আগে এই এলাকায় কোভিড সৎকার কেন্দ্র খোলার প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু তা ছিল একটি প্রস্তাব মাত্র। আমাদের বলা হয়েছিল শালকুমার এলাকায় কেউ কোভিড আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে এখানে তাদের সৎকার করা হবে। কিন্তু রবিবার আমাদের সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখেই এখানে সৎকারের উদ্যোগ নেয় প্রশাসন। আমরা কিছুই জানতাম না। এলাকার মানুষজন প্রতিবাদে সামিল হন। আর তার ফলে যা হওয়ার তাই হল।’’


শর্টলিংকঃ